ভেঙ্কটেশ্বর লাহিড়ী, কলকাতা: পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মুখে শুভেন্দু অধিকারীর নাম প্রসঙ্গে বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। শুভেন্দুর কথায়, ‘‘অত্যন্ত দুর্বল চিত্রনাট্য। চিত্রনাট্যটা তৈরি হয়েছিল বুধবার। প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারের সুপার, পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং তাঁর আইনজীবী মিলে এই চিত্রনাট্যের রূপ দিয়েছেন।’’
নাম না করে তৃণমূল কংগ্রেস মুখপাত্র কুণাল ঘোষকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করে শুভেন্দু অধিকারীর এও দাবি, ‘‘পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্যের ঠিক আগেই ওর (কুণাল ঘোষ) ট্যুইটের ভাষা এবং পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য থেকেই স্পষ্ট যে এটা একটা নাটক। এর আগেও সুদীপ্ত সেনকে দিয়ে আমার নাম উল্লেখ করা হয়েছিল। যেহেতু আদালতের নির্দেশে তদন্ত চলছে তাই আমি দাবি করব যে, প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারের সুপার দেবাশীষ চক্রবর্তী, যিনি আমার এবং যে ক’জনের নাম উল্লেখ করেন এবং পুলিশের ঘেরাটোপের মধ্যে থেকে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের একই সুরে আগেই যিনি ট্যুইট করেছেন সে ব্যাপারে প্রত্যেকের মোবাইল ফোন যাচাই করে তদন্ত করা হোক।’’
সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে শুভেন্দু অধিকারীর আরও দাবি, ‘‘বুধবার বিকেল চারটে থেকে ৪.১৫ মিনিট পর্যন্ত প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারের সুপার দেবাশীষ চক্রবর্তীর ঘরের সিসিটিভি ফুটেজ সংরক্ষণ করা হোক। আমি চ্যালেঞ্জ করে বলছি, কোনও স্কুলের জন্য আমি ব্ল্যাকবোর্ড, চক ডাস্টার চেয়েছি, কাউকে চাকরি পাইয়ে দেওয়া, আমার সুপারিশের কোনও ছেঁড়া চিরকুট পর্যন্ত তথ্য প্রমাণ হিসেবে উনি ( পার্থ চট্টোপাধ্যায়) দেখাতে পারবেন না। তাই এটা নাটক ছাড়া আর কিছু নয়। পুরোটাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চক্রান্ত। এসব নাটক করে কোনও লাভ হবে না।’’
প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারের সিসিটিভি ফুটেজ সংরক্ষণ-সহ এই গোটা বিষয়টি বিচারকের সামনে পিটিশন আকারে তুলে ধরার জন্যও আইনজীবীদের কাছে আবেদন করেছেন শুভেন্দু অধিকারী। প্রসঙ্গত, গতকাল, বৃহস্পতিবার আদালত চত্বরে সংবাদমাধ্যমের সামনে বিস্ফোরক অভিযোগ করেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর মুখে উঠে আসে ৩ হেভিওয়েট নেতার নাম। আর তারপরই তোলপাড় হয় রাজ্য রাজনীতি। কোন- কোন নেতার নাম 'ফাঁস' করলেন পার্থ? আদালতে বৃহস্পতিবার নিয়োগ মামলায় পার্থ-সহ সাত জনের শুনানি ছিল সিবিআই আদালতে। বাকি অভিযুক্তদের সঙ্গে একই গাড়িতে নয়, পার্থকে আদালত চত্বরে আনা হয় অন্য গাড়িতে। পুলিশের গাড়ি থেকে চেক চেক পাঞ্জাবি পরা পার্থ সোজা হেঁটে আদালতের ঢুকে যান। পিছনে তখন জনতার 'চোর চোর' স্লোগান। আদালতের ঘনিষ্ঠ মহলে তিনি বলেন, ‘‘চোর হলে এক জায়গায় ৫ বার জিততাম না। সৎ না হলে আমাকে মানুষ ৫ বার জেতাতেন না। যাঁরা আমাকে জানেন তাঁরা চোর বলবেন না। বেহালার মানুষ আমাকে চোর বলতে পারেন না।’’
বৃহস্পতিবার পার্থর মুখে উঠে আসে ৩ 'বাঘা' নেতার নাম। সুজন চক্রবর্তী, দিলীপ ঘোষ ও শুভেন্দু অধিকারী। পার্থর কথায়, সুজন, দিলীপ, শুভেন্দু সবাই এক। ওঁরা কী করেছেন সেটা আগে দেখুন। সুজন এত বড় বড় কথা কেন বলছেন? ২০০৯-১০ সালে সুজন কী করেছেন খোঁজ নিন। শুভেন্দু ২০১১-১২ সালে ডিপিএসসি ( ডিস্ট্রিক্ট প্রাইমারি স্কুল কাউন্সিল)- তে কী করেছেন দেখুন'। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মুখে শুভেন্দু অধিকারীর নাম আসা নিয়েই একদিকে চ্যালেঞ্জের সুর আর অন্যদিকে পাল্টা বিস্ফোরক দাবি শোনা গেল এবার শুভেন্দু অধিকারীর গলায়।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।