#কলকাতা: অশোকনগরে তৈল ভান্ডার খননের জন্য কেন্দ্র সরকারকে বিনামূল্যে জমি দেবে রাজ্য৷ এমনই জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ এ দিন নবান্ন থেকে মুখ্যমন্ত্রী জানান, রাজ্যে শিল্প আসুক৷ তাই আমরা বলেছি ওখানে যে জমি অধিগ্রহণ করতে হবে, তা আমরা বিনামূল্যে কেন্দ্রের হাতে তুলে দেব৷'
নির্বাচনের আগে রাজ্যের শিল্প বান্ধব ভাবমূর্তি তুলে ধরতেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার এই সিদ্ধান্ত নিল বলে মনে করা হচ্ছে৷ মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য জানিয়েছেন, কেন্দ্রের সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে এই প্রকল্পের কাজ করতে পেরে খুশি রাজ্য৷
২০১৮ সাল থেকে উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগরের তেল ও গ্যাসের অনুসন্ধান শুরু করে ওএনজিসি। মাস কয়েক আগে সেই তেলের মান পরীক্ষা করে সাফল্য পায় জাতীয় এই সংস্থাটি। সম্প্রতি অশোকনগরে বাইগাছি মৌজায় সেই প্রকল্পকে জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করেন কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান। মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য এ দিন জানিয়েছেন, রাজ্যের তরফেই প্রথমে অশোকনগরে তেলের ভান্ডার রয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে অনুরোধ করা হয়েছিল৷ তিনি নিজেই ধর্মেন্দ্র প্রধানকে চিঠি লিখেছিলেন বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী৷
অশোকনগরে ইতিমধ্যেই ৪ একর জমি নিয়ে যাত্রা শুরু করেছে প্রকল্প। ব্যয় হয়ে গিয়ছে ৩৪০০ কোটি টাকা। এই প্রকল্পের জন্য প্রয়োজন আরও ১২ একর জমি। ওএনজিসি-র তরফে অশোকনগর পুরসভার কাছে জমি চেয়ে আবেদন করা হয়েছে৷ সূত্রের খবর, প্রকল্প এলাকার কাছেই রাজ্য সরকারের উদ্বাস্তু পুনর্বাসন দফতরের জমি রয়েছে৷ সেখানে স্থানীয় কিছু বাসিন্দা চাষের কাজ করেন৷ রাজ্যের তরফে সম্ভবত সেই জমিই ওএনজিসি-র হাতে তুলে দেওয়া হবে৷ স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রয়োজনীয় ক্ষতিপূরণও দিয়ে দেবে রাজ্য প্রশাসন৷
মুখ্যমন্ত্রী এ দিন বলেন, 'ওরা জমির দাম দিয়ে দিতে চেয়েছিল৷ কিন্তু আমরা বলেছি দাম লাগবে না৷ ওরা এখানে শিল্প করতে আসছে৷ তার জন্য জমি লাগবে৷ তাই আমরা দাম নেব না৷ শিল্প হচ্ছে, এতেই আমরা খুশি৷' মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, অশোক নগরে তেল উত্তোলনের কাজ শুরু হলে তা ওই এলাকা তো বটেই, রাজ্যের অর্থনীতিতেও বড় বদল আনবে৷ একই সঙ্গে দেউচা পাচোমির কয়লা খনন প্রকল্পের কথাও উল্লেখ করেন মুখ্যমন্ত্রী৷ এই দুই প্রকল্পেই প্রচুর কর্মসংস্থান তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে৷ ফলে, রাজ্যের ভবিষ্যৎ প্রজন্মও এর থেকে উপকৃত হবে বলে আশাবাদী মুখ্যমন্ত্রী৷
এ দিন সমালোচকদের জবাব দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, শিল্প বাণিজ্য সম্মেলনের আয়োজন নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তোলেন৷ কিন্তু তার সুফল এখন রাজ্য পাচ্ছে বলেই দাবি করেন মমতা৷ প্রসঙ্গত সম্প্রতি বেশ কয়েক বার রাজ্য সরকারের আয়োজিত শিল্প বাণিজ্য সম্মেলনের সাফল্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়৷