SHANKU SANTRA
#কলকাতা: বান্ধবী প্রেম প্রত্যাখ্যান করছে । সেই রাগে সকালবেলা বান্ধবীর বাড়িতে ঢুকে কুপিয়ে ও গুলি করে খুন করল যুবক। গুলির শব্দে ছুটে এসেছিল আশেপাশের সমস্ত প্রতিবেশীরা। অনেকে দেখেছিলেন, যুবককে ওই বাড়ি থেকে বেরিয়ে যেতে। এ রকম প্রতিহিংসার খবর খুব একটা শোনা যায় না। তবে আরও আশ্চর্য করেছে ওই যুবকের কাণ্ড কারখানা।
বিবাহিত যুবক জয়ন্ত হালদার(২৪)। ছোটবেলা থেকে প্রিয়াঙ্কা পুরকায়েতের(২০) সঙ্গে ভালোবাসার সম্পর্ক ছিল। কোনও কারণে দুজনের বিয়ে হয়নি। জয়ন্ত এখন বিবাহিত। কিন্তু প্রিয়াঙ্কার সঙ্গে ভালবাসা এখনও অটুট। ইদানীংকালে প্রিয়াঙ্কা, জয়ন্তর সঙ্গে যোগাযোগ এবং সংস্পর্শ ত্যাগ করেছিলেন। তাতেই রাগ।
জয়ন্ত রিজেন্ট পার্ক থানার পুলিশের হাতে ধরা পড়ে। পুলিশের জেরায় স্বীকার করে, প্রিয়াঙ্কাকে যে বন্দুক দিয়ে খুন করেছে সেটি সে নিজেই বানিয়েছে। এমনও জানায়, ওই ওয়ানশটার ইন্টারনেটে ইউটিউব দেখে বানিয়েছে। প্রথমটা কেউ এই বিষয়টা বিশ্বাস করতে চায়নি। পরে সবার বিশ্বাস হয়।
রিজেন্ট পার্কের আনন্দপল্লিতে জয়ন্তর বাড়ির খোঁজে যাওয়া হল। রাস্তার একপাশে ভাঙা বাড়িতে থাকেন বাবা পঙ্কজ হালদার ও কিডনি ডায়ালাইসিস চলা অসুস্থ মা কল্পনা হালদার। রাস্তার উল্টোদিকে ভাড়া থাকে জয়ন্ত এবং ওর স্ত্রী। কল্পনা হালদার বলেন, দুজনের ভালবাসার সম্পর্কের কথা। জয়ন্ত ছোটবেলা থেকেই কারিগরি দিকে বেশ পটু। মায়ের কিডনির অসুখ জানার পর ইন্টারনেট দেখে বড়বাজার থেকে যন্ত্রাংশ কিনে এনে একটি বিদ্যুৎ চালিত ওয়াটার পিউরিফায়ার বানিয়ে দেয়। পেশায় গাড়ির চালক সে। এলাকাতে ওকে শান্তশিষ্ট স্বল্পভাষী ছেলে হিসাবে সবাই জানে। যে ঘরে ভাড়া থাকত জয়ন্ত, সেই ঘরের পাশে যাঁরা ভাড়া থাকেন, তাঁরা বলেন, 'জয়ন্ত ঘরে বসে মেশিন দিয়ে কিছু ড্রিল করত । মাঝে মাঝে ওয়েল্ডিং করত। আগুনের ছিটে আসত, ধোঁয়া বেরোত । কি করছে জিজ্ঞাসা করলে, হেসে চলে যেত। তবে প্লাম্বিং-এর কাজ, ইলেক্ট্রিকের কাজ, সব কিছুতেই পটু সে ।
পুলিশি তদন্তে উঠে এসেছে, পাইপ কেটে ড্রিল করে নিজেই বানিয়েছিল আগ্নেয়াস্ত্রটি। এমনকি গুলির পাউডারকে চকলেট বোমেরা মসলা দিয়ে ব্যবহার করেছে এবং সাইকেলের বল ব্যবহার করেছে। প্রশ্ন, গুলির খোল পেল কোথায়? তা হলে কি এই জয়ন্ত বাড়িতে বসে আগ্নেয়াস্ত্র বানানোর কাজ করতো? হঠাৎ করে ইউটিউব দেখে আগ্নেয়াস্ত্র বানানো এবং সেটাকে সফল করা সোজা ব্যাপার নয়। দীর্ঘদিনের অভ্যাস এবং কারিগরি শিক্ষার প্রয়োজন রয়েছে। এমনটাই মনে করছেন সবাই।
গুলির খোল সবসময় পিতলের তৈরি হয়। এই খোল চট করে পাওয়া যায় না। তা হলে কি গুলি বানানো গল্পটাকে পুলিশকে বোকা বানিয়েছে! জয়ন্ত নিজের মানসিক যন্ত্রণায় খুন করেছে। সেটা যদিও মানা যায়। তবে অনেকেই মনে করছেন, গুলি কিংবা বন্দুক, কেউ-না-কেউ সরবরাহ করেছে। তাকে বাঁচানোর জন্যই হয়তো, এই গল্প বানাচ্ছে। এটা ঠিক জয়ন্ত তার ভাড়া ঘরে কিছু একটা অসামাজিক কাজ চালাত {
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Regent Park murder, Youtube