#কলকাতা: কুনাল ঘোষ নিয়ে এসেছিলেন ফিশফ্রাই আর লেডিকেনি। আর প্রিয় দাদার সঙ্গে দেখা করতে তিনি, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় এনেছিলেন আম আর ডায়াবেটিক সন্দেশ। সৌজন্য সাক্ষাতে যেমনটা হয় আরকি। নিটোল ছবি, কোথাও কোনও সন্দেহের অবকাশ নেই। বিশেষত রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়-কুনাল ঘোষ দুতরফেই যখন বলে দিয়েছেন এই সাক্ষাতে কোনও রাজনৈতিক অভিপ্রায় খুজতে যাওয়া বৃথা। কিন্তু তাঁর পরেও রাজনীতির ফেলু মিত্তিররা বলছেন, তোপসে সন্দেহের অবকাশ বিলক্ষণ আছে। সূত্রটা দিয়ে দিয়েছেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়-কুনাল ঘোষ দুজনেই। সৌজন্য সাক্ষাতের সময়ে বাড়ির দরজায় গৃহকর্তা তালা ঝুলিয়ে দেবেন কেন!
অতীতে বিজেপির নীতির সমালোচনা করে পোস্ট দিয়েছিলেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর বিরোধিতা ছিল বিজেপির বিধায়ক-সাংসদদের ৩৫৬ জারির উষ্মা নিয়ে। আজও সেই একই বিরোধিতার সুর ধরা থাকল তাঁর গলায়। স্পষ্ট বললেন, এত অল্প সময়ের মধ্যে ৩৫৬ জারির জন্য তদ্বির তাঁর ভালো লাগছে না। এমনকি মেনে নিলেন CAA-NRC লাগু করে অশান্তি পাকানোর চেষ্টা হচ্ছে। অর্থাৎ দলের থেকে যে দূরত্ব রাখছেন তাই নয়, শুভেন্দু অধিকারীদের অবস্থানের বিরোধিতায় অনড় রাজীব। দল যখন আইনশৃঙ্খলা নিয়ে কঠোর হওয়ার কথা ভাবছে, ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে রাজীব বলছেন আমার ফেসবুক পোস্ট আমারই, আমি সেই মতে অনড়। রাজনৈতিক মহল মনে করছে রাজীব যে অবস্থানগত ভাবে বিজেপি বিরোধী সেই বার্তা কুনাল ঘোষ মারফত দিতে চাইছেন তৃণমূলকে। বার্তাটা এমন যে তিনি এক বাড়িয়েই রয়েছেন।
কিন্তু পা বাড়ালেই তো হল না। মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় স্পষ্ট দুভাগ করে দিয়েছেন, চরমপন্থী ও নরমপন্থী। মমতা বলেছেন যারা দলের বিরুদ্ধে অসময়ে বিষোদগার করেছেন. টাকা নিয়ে বিজেপিতে গিয়েছেন তাদের ঠাঁই হবে না দলে। রাজীব নিজেই এই প্রসঙ্গে যেন নিজেকে নরমপন্থীর সার্টিফিকেট দিলেন। সূত্রের খবর তিনি বলেছেন, জ্ঞাতসারে তিনি কখনওই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে কোনও কুৎসা করেননি। অর্থাৎ এক্ষেত্রেও নিজেকে শুভেন্দুদের বিপ্রতীপেই দাঁড় করাচ্ছেন রাজীব। বিজেপির প্রতি বীতরাগ না হলে, তৃণমূলে যোগদানের অভীপ্সা না থাকলে রাজীব এত ব্যখ্যায় যাবেন কেন! ফলে ওই, রাজনীতির ফেলুদারা বলছেন রাজীবের পা বাড়ানো। বল তৃণমূলের কোর্টে।
অবশ্য এ আখ্যান এখানেই শেষ নয়। রয়েছে বিস্তর কিন্তু। তৃতীয়বার ক্ষমতায় এসে মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় প্রথম প্রশ্ন তুলেছেন রাজীবের দফতর নিয়ে। প্রথম ফাইল নড়েছে এই দফতরেরই। তদন্তের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। মমতা কারও নাম নেননি, কিন্তু নিশানায় কে বা কারা তা বুঝতেও অসুবিধে হয়নি কারও। এই পরিস্থিতিতে রাজীবের রাজনৈতিক ভবিষ্যত নিয়ে জল্পনা আপাতত থাকছেই। দুঁদে রাজনৈতিক গোয়েন্দারা কাহিনির ইতি টানবে এই বলে, শেষ ঘণ্টা বাজানোর ক্ষমতা আর রাজীবের হাতে নেই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই ঠিক করবেন রথে কে উঠবে, কে বাইরে থাকবে।
-ইনপুট আবীর ঘোষাল
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Kunal Ghosh, Mukul roy, Rajib Banerjee