#কলকাতা: ভারতবর্ষের শিক্ষার অধিকার আইন অনুযায়ী প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়াতে শিক্ষার্থীদের স্বার্থে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত শিক্ষক নিয়োগ করতে হবে বলে নির্দেশ দেয় পশ্চিমবঙ্গ হাইকোর্ট। কিন্তু ২০১১ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত মাত্র ১৯৪৯৫ জন প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত শিক্ষক থাকায় সব বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ করা সম্ভব হবে না বলে সেই সময় আদালতকে জানায় প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ।
পর্ষদের সেই আবেদনকে মান্য করে মহামান্য আদালতের সি এস কারনানের ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দেন ৩১ শে মার্চ ২০১৬ সালের মধ্যে নির্দ্বিধায় প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত এবং অপ্রশিক্ষণ প্রাপ্তদের নিয়োগ প্রক্রিয়া গুণমানকে মান্যতা দিয়ে করা যাবে।
চলতি বছর জানুয়ারি মাসের ৩১ তারিখ একটি সাংবাদিক সম্মেলন করে টেট পরীক্ষার ফল ঘোষণার পাশাপাশি পর্ষদ সভাপতি পর্ষদ সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য ঘোষণা করেন আগামী এক মাসের মধ্যে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত ১১,৩০০ জন টেট উত্তীর্ণ সহ মোট ৪১,৬২৮ জন টেট উত্তীর্ণকে শিক্ষক শিক্ষিকা হিসাবে বিভিন্ন বিদ্যালয়ে নিয়োগ করা হবে।
Loading...
সূত্রের খবর, এই প্রকার নিয়োগের কোনো রকম নির্দেশিকা মহামান্য হাইকোর্টকে পর্ষদের পক্ষ থেকে জানানো হয়নি। সোমবার পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষা মন্ত্রী জানান, আগামী মার্চ মাসের মধ্যে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করা সম্ভব হবে। ফলপ্রসূ মহামান্য কলকাতা হাইকোর্টের ৩১ শে মার্চ ২০১৬ পর্যন্ত অপ্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষক নিয়োগের রায়কে অমান্য করে ২০১৭ সালের মার্চ পর্যন্ত অপ্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের নিয়োগ প্রক্রিয়া চালিয়ে যাওয়ার জন্যে কলকাতা হাইকোর্টের দীপঙ্কর দত্ত এবং সিদ্ধার্থ চ্যাটার্জীর বেঞ্চ পর্ষদ অধিকর্তা মানিক ভট্টাচার্য, সভাপতি আর সি বাগচি, বাঁকুড়ার পর্ষদ সভাপতি রিঙ্কু বন্ধোপাধ্যায়, পশ্চিম মেদিনীপুরের পর্ষদ সভাপতি নারায়ন সাঁতরা এবং উত্তর ২৪ পরগনা জেলার সভাপতি জ্ঞানেশ্বরী বাগকে আদালত অবমাননা করার জন্য সঠিক নথি তলব করল।
এদিন কলকাতা হাইকোর্ট থেকে এক প্রতিনিধির মাধ্যমে একটি চিঠির মাধ্যমে এই পাঁচ জনের কাছ থেকে ৪৮ ঘন্টার মধ্যে আদালত নির্দেশ অবমাননা করার সঠিক কারণ তলব করেছে আদালত। সূত্রের খবর, যদি সঠিক যুক্তিসম্মত রিপোর্ট হাইকোর্টে পেশ না করতে পারে তবে চলতি শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়াতে স্থগিতাদেশ জারি করা হতে পারে বলে ।
৩১ শে জানুয়ারির পর থেকেই পর্ষদকে একের পর এক প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়াকে কেন্দ্র করে। সোমবার জনসমক্ষে আসে পর্ষদের ওয়েবসাইটে অনুত্তীর্নদেরও নাম শিক্ষক নিয়োগের তালিকায় রয়েছে। শিক্ষক নিয়োগে এমন ধোঁয়াশাতে এবং পর্ষদের নিয়োগ প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়ে কঠিন প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে ।
তবে কি এবার আদালতের কোপের মুখে পড়ে প্রায় ৪২,০০০ শূন্যপদে শিক্ষক নিয়োগ ফের স্থগিতা হয়ে যাবে? প্রশ্ন নিয়ে পর্ষদের সামনে ভিড় জমাচ্ছেন শত শত শিক্ষক হওয়ার স্বপ্নধারী ছাত্র ছাত্রীরা।