#কলকাতা: ডিজেলের অস্বাভাবিক মুল্যবৃদ্ধি। বাসে মিলছে না যাত্রী। বারবার রাজ্যকে জানিয়েও মিলছে না কোনও সাড়া। অবশেষে তাই নিজেরাই বাসের ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে নিলেন কলকাতার ১৩টি রুটের বাস মালিকরা।
এই সমস্ত রুটের বাসে ইতিমধ্যেই পোস্টার সেঁটে দেওয়া হয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে, বাধ্য হয়ে তাঁদের ভাড়া বেশি নিতে হচ্ছে। ভাড়া বাড়ানোর দাবিতে ইতিমধ্যেই একাধিকবার সরব হয়েছে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের বেসরকারি বাস সংগঠনগুলি। বেসরকারি বাস রাস্তায় নামলেও সেই বাস সংখ্যায় ক্রমশ কমতে থাকে। বাস মালিকদের দাবি, বাস চালিয়ে নূন্যতম পরিকাঠামো খরচটাই উঠছে না। এর ওপর বাসে যাত্রী সংখ্যা ভীষণ কম।
তবে তাদের মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে গত ১০ দিন ধরে ডিজেলের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধি। ফলে পুরনো ভাড়ায় তাদের পক্ষে আর বাস চালানো সম্ভব নয়। সে কারণেই বুধবার থেকে কলকাতার বেশ কয়েকটি রুট ২২১, ২২৩, ৩০বি, ৩০বি-১, ২১৯, ২১৯/১, ৪৫, ৪৫এ, ৪৫বি, ৯৩, ৩০ডি, কেবি-২১ এবং ডিএন-৮-- এই সমস্ত রুটের বাস মালিকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সংগঠন ও সরকার দু'পক্ষকেই বারবার এই বিষয়ে অভিযোগ জানিয়ে আসছেন তাঁরা।
বাস চালাতে তাঁরা যে অপারগ সেটাও বারবার জানিয়েছেন৷ কিন্তু জোর করে এক প্রকার বাধ্য হয়েই তাঁদের বাস চালাতে বাধ্য করা হচ্ছে। তাই ভাড়া না বাড়িয়ে তাঁদের উপায় নেই।
সূত্রের খবর, সোমবার থেকে তাঁরা বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছিলেন।মঙ্গলবার বিকেলে তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করেন বারাসাত আর টি ও'র প্রতিনিধিরা৷ তাঁরা রাস্তায় বাস নামাতে বলেন। বুধবার থেকে এই সমস্ত রুটের বাস রাস্তায় নামলেও তাতে উল্লেখ করে দেওয়া হয়েছে বেশি ভাড়ার কথা।
যদিও বিভিন্ন বাস মালিক সংগঠনের দাবি, বাস মালিকরা অযৌক্তিক কাজ করছেন। এভাবে বাসের ভাড়া বাড়ানো যায় না। যদিও যে সমস্ত রুটের মালিকরা ভাড়া বাড়িয়েছেন তারা অবশ্য বলছেন, উপায় নেই তাই তারা এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
৩০বি রুটের সদস্য চিরদীপ পাল জানাচ্ছেন, "আমাদের কিছু করার নেই। দু নৌকায় পা দিয়ে বাস চালানো আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। তাই বাধ্য হয়েই আমরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।" একই বক্তব্য ২২৩ নম্বর রুটের বাসের সদস্য রাজীব সাহার। তিনি জানাচ্ছেন, "আমি তো কাউকে জোর করছি না। আমরা সবাইকে অনুরোধ করছি আমাদের সমস্যা বুঝে আমাদের ভাড়া দেওয়ার জন্য। যাত্রীরা আমাদের দিচ্ছেনও। এতে তো কোনও সমস্যা আমরা দেখছি না।" কিন্তু বাস মালিকদের এই বক্তব্য মানতে নারাজ বাস সংগঠনগুলি। বেঙ্গল বাস সিন্ডিকেটের সহ সভাপতি টিটু সাহা জানাচ্ছেন, "১৯৭৪ সাল থেকে সরকার আমাদের বাসের ভাড়া ঠিক করে দেয়। সরকার আলোচনা চালাচ্ছে। সেখানে এই সিদ্ধান্ত অনুচিত।"
মিনিবাস সংগঠন নেতা প্রদীপ নারায়ণ বসু জানাচ্ছেন, "সমস্যা নিয়ে সংগঠনের সঙ্গে আলোচনা করতে পারত। তা না করেই এই একতরফা সিদ্ধান্ত আমরা মানছি না।"
বাস সংগঠনের নেতা রাহুল চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, "সরকার যখন আলোচনা চালাচ্ছে তখন এই সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়া যায় না। ওঁদের উচিত অবিলম্বে এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা।"
রাজ্য পরিবহণ দফতর অবশ্য এই নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিতে নারাজ। তবে গোটা বিষয়টি বে-আইনি বলে মত তাঁদের।
ABIR GHOSAL
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Bus Fare, Diesel Price, Private bus