#কলকাতা: 'মা আমি কি মরে যাবো? ' হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে প্রশ্ন তিন বছরের শিশুর। অসহায় বাবা টাকা জোগাড়ের জন্য দৌড়াচ্ছেন অজানা কলকাতা শহরের এদিক থেকে ওদিকে। মা হাসপাতালের বিছানায় ছেলেকে বুকে জড়িয়ে নানা ধরনের সান্ত্বনা দিচ্ছেন,সঙ্গে ভগবানকে ডাকছেন। ঘটনাটি দক্ষিণ কলকাতার ঠাকুর পুকুর ক্যান্সার হাসপাতালের৷
গোসাবার সাতজেলিয়া থেকে বিশ্বজিৎ খাঁড়া। তাঁর তিন বছরের শিশুর রক্তে ক্যান্সারের অসুখ, এই শিশুকেই ঠাকুরপুকুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। যেহেতু কোভিড প্রটোকল চলছে, সেহেতু বাচ্চাটির সঙ্গে তার মা ,লক্ষ্মী হাসপাতালের ভিতরে আছেন। বাবা বিশ্বজিৎ প্রতিদিন ছেলের চিকিৎসার টাকা জোগাড়ের জন্য হন্যে হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। একদিকে রক্তের যোগান অন্যদিকে কেমো। প্রতিদিন তিন থেকে চার হাজার টাকা খরচ। বিশ্বজিৎ সাধারণ একজন শ্রমিক। গ্রামে একশ দিনের কাজ এবং এদিক ওদিক করে মাস গেলে পাঁচ থেকে ছয় হাজার টাকা রোজগার। ইয়াসে জমি পুকুর থেকে আরম্ভ করে বাড়ি সমস্ত কিছু ডুবে গেছে। সেগুলির দিকে আর ভ্রুক্ষেপ না করে, সুদখোরের কাছ থেকে শতকরা পাঁচ টাকা হারে সুদে টাকা নিয়ে চলে এসেছেন কলকাতায়।
এবারের চিন্তা আরও বড়, যেহেতু তাঁর রোজগার কম। সুদখোরেরা আর টাকা ধার দেবে না। সামান্য গয়নাগাটি সেগুলো বিক্রি করে দিয়েছেন।এবার ছেলের চিকিৎসার টাকা কোথা থেকে জোগাড় হবে? হাসপাতালের বিছানায় বসে ছেলেকে নিয়ে লক্ষ্মী কাতর আবেদন জানাচ্ছে, সহৃদয় ব্যক্তিরা যাতে তার ছেলের চিকিৎসার জন্য সাহায্য করেন। তিন বছরের ছোট্ট শিশু বারবার জিজ্ঞাসা করছে তার মাকে ' মা আমি কি মরে যাব।' এই প্রশ্ন শুনে ,মা লক্ষ্মী কেন হাসপাতালে নার্স,ডাক্তারদের চোখেও জল আসছে। সত্যি কি শিশুটি এইভাবে মারা যাবে?
ক্যান্সার এখন আগের মতো মারণ নয়, অনেক টাকা থাকলে এখন কিছু কিছু ক্ষেত্রে মানুষ বেঁচে যায়। কিন্তু এই ছোট্ট শিশুটির কি হবে? অমৃত বাঁচবে তো? হাত জোড় করে প্রশ্ন করছেন বাবা বিশ্বজিৎ-র।
SHANKU SANTRA
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।