#কলকাতা: সোমবার থেকে খুলে গেল শহরের সমস্ত রেস্তোরাঁ। স্বাস্থ্যবিধি মেনে শহরের রেস্তোরাঁগুলো ফের পথ চলা শুরু করল। প্রায় তিন মাস করোনা আতঙ্কে জেরে বন্ধ থাকার পর সোমবার থেকে পুরনো ছন্দে ফেরার চেষ্টায় শহরের রেস্তোরাঁগুলি। দিন কয়েক আগে হোম ডেলিভারি চালু হয়েছিল, এবার থেকে ফের রেস্তোরাঁর আমেজেই খাওয়ার সুযোগ মিলবে।
সোমবার দুপুর ১২ টা থেকে খুলে গেল রেস্তোরাঁর দরজা। পার্ক স্ট্রিটের একাধিক রেস্তোরাঁয় দেখা গেল স্বাস্থ্যবিধি মানার জন্য আলাদা পোস্টার লাগানো হয়েছে দরজায়, দেয়ালে। প্রথমেই, কোনও ব্যক্তি প্রবেশ করতে গেলে হাত ও পা জীবাণূমুক্ত করিয়ে নেওয়া হচ্ছে। তারপর থার্মাল চেকিং -এর মাধ্যমে দেখা হচ্ছে শরীরের তাপমাত্রা। সব ঠিক থাকলে তবেই ভেতরে প্রবেশের অনুমতি মিলছে। বেশিরভাগ রেস্তোরাঁয় লিখে রাখা হচ্ছে নাম ও ফোন নম্বর।
বসার ক্ষেত্রে ৫০% ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। অর্থাৎ আগে যা বসার ব্যবস্থা ছিল তার অর্ধেক ব্যবস্থা দিয়ে শুরু হল রেস্তোরাঁগুলি। একটা টেবিলে খাবার পরিবেশিত হলে তার নিকটবর্তী টেবিল ফাঁকা রাখা হচ্ছে। রেস্তোরাঁ কর্মীরা সারাক্ষণ হাতে গ্লভস,মুখে মাস্ক, মাথায় টুপি এবং ফেস গার্ড পড়ে ঘুরছেন। টেবিলে অর্ডার দেওয়ার ক্ষেত্রে কাগজের তৈরি মেনু কার্ড দেওয়া হচ্ছে যা একবার মাত্র ব্যবহার করা যায়। অনেক জায়গায় আবার বারকোড দিয়ে অনলাইন মেনু চালু করা হয়েছে। খেতে আসা ব্যক্তির মোবাইলে চলে যাচ্ছে মেনু কার্ড। ফোনের মাধ্যমে অর্ডার চলে যাচ্ছে। না হলে দূর থেকেই অর্ডার নিয়ে চলে যাচ্ছেন রেস্তোরাঁ কর্মী। কোন ব্যক্তি চাইলে তাকে খাওয়ার দেওয়া হচ্ছে পরিবেশন করে। নাহলে টেবিলে নির্দিষ্ট জায়গায় খাবার রেখে চলে যাচ্ছেন কর্মীরা। খেতে আসা ব্যক্তিরা নিজেরাই খাবার ভাগ করে নিচ্ছেন।
অনলাইন পেমেন্ট করার ব্যাপারে উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে মানুষকে। একান্ত টাকা দিলে সেটা জীবাণূমুক্ত করার ব্যবস্থা থাকছে অনেক হোটেলে। বেশ কিছু জায়গায় দেখা যাচ্ছে প্লাস্টিক প্যাকেটের মাধ্যমে টাকাটা নিয়ে যাওয়া হচ্ছে এবং সেই প্যাকেট করে টাকাটা ফেরত দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। একবার ব্যবহার করার প্লেট, গ্লাস পার্ক স্ট্রিট অঞ্চলের রেস্তোরাঁগুলোতে খুব একটা দেখা যাচ্ছে না। সমস্ত রেস্তোরাঁ কর্মীদের দাবি, তাদের অত্যাধুনিক প্লেট ধোয়ার ওয়াশিং মেশিন আছে, তাতেই তারা সব সরঞ্জাম জীবাণূমুক্ত করছেন। রেস্তোরাঁয় রান্না করা কর্মীদেরও প্রত্যেকদিন তাপমাত্রা মেপে নেওয়া হচ্ছে। মুখে মাস্ক, হাতে গ্লভস ও মাথায় ঢাকা দিয়ে রান্না করা হচ্ছে। সবমিলিয়ে করোনা আবহে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পুরনো ছন্দে ফিরতে আশাবাদী হোটেল কর্তৃপক্ষ।
সোমবার পার্ক স্ট্রিট অঞ্চলে সমস্ত রেস্তোরাঁগুলোতে স্থানীয় প্রশাসনের তরফে পরিদর্শন করা হয়। পুলিশকর্মীরা হোটেলে গিয়ে দেখেন সমস্ত স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে কিনা। রেস্তোরাঁগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি পালন নিয়ম দেখে খুশি পুলিশ কর্তৃপক্ষ। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, প্রতিদিনই হোটেলগুলোতে দেখা হবে স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে কিনা। তিন মাস পর রেস্তোরাঁ খোলায় অনেক মানুষই করোনা আতঙ্ক কাটিয়ে পা বাড়িয়েছিলেন বসে খাওয়ার জন্য।
ERON ROY BURMAN