#গঙ্গাসাগর: বাঙালির পায়ের তলায় না কী সর্ষে। এক-আধবেলা ছুটি মিললেও বেড়ানো, আউটিংয়ের পুরোদস্তুর প্ল্যানিং সারা আম বাঙালির। কিন্তু ছুটিটারই যে বড় আকাল আজকাল। পরিবার-বন্ধুদের সবাইকে একসঙ্গে দুটো দিন পাওয়াটাই এখন বড় ব্যাপার। আর দীঘা-পুরী করতে করতে তো হেজে গিয়েছে। নতুন কোথাও যেতে আবার অন্তরায় সময় আর খরচ। তাহলে? ঘাবড়ানোর কিছু নেই। সব সমস্যার সমাধান এবার একযোগে।
শুক্রবার থেকে চালু হয়ে গেল মিলেনিয়াম ঘাট থেকে গঙ্গাসাগর ও সুন্দরবন অবধি ক্রুজ সার্ভিস। গঙ্গার কোল বেয়ে ঘন্টা তিনেকের মধ্যেই পৌঁছে যাওয়া ছুটির গন্তব্যে। হাতে সময় থাকলে দুদিন কাটিয়ে আসুন কপিল মুণির আশ্রম কিংবা ঝড়খালি, সন্দেশখালিতে। আর ছুটির মেয়াদ ছোট হলে টুকটাক আউটিং সেরে শীততাপ নিয়ন্ত্রিত ক্রুজে চেপেই গঙ্গাপাড়ের সৌন্দর্য চেটেপুটে নিয়ে ফিরে আসুন বাঁধা ঠিকানায়। চাইলে হাতের নাগালে পেয়ে যেতে পারেন মুচমুচে পকোড়া, ফ্রাই আর ধোঁয়া ওঠা কফি। মন চাইলে ক্রুজের ডেকে বসেই গায়ে মেখে নিন পড়ন্ত সূর্ষের ঢলে পড়া হালকা রোদ্দুর। মন তাজা। মেজাজ চাঙ্গা।মুম্বই বেসড অসপ্রে ওয়াটরওয়েজের সৌজন্যে শুক্রবার থেকেই শুরু হয়েছে কলকাতা-সুন্দরবন-সাগর ক্রুজ সার্ভিস। ফার্স্ট রাইডেই বাম্পার ডিট শহর থেকে গঙ্গাসাগরের ক্রুজ ভ্রমণ। ওসপ্রে ইন্ডিয়ার ওয়েবসাইটে গিয়ে অনলাইন বুকিং করতে পারেন। আবার মিলেনিয়াম ঘাটে এসে টিকিট কেটেও উঠে পড়তে পারেন মালয়েশিয়া থেকে আনা বিলাসবহুল ক্রুজে। খরচ সামান্যই। মাথা পিছু হাজার টাকা। বিনিময়ে জলপথ বেয়ে নির্ঝঞ্ঝাটে ঘন্টা তিনেকের মধ্য পৌঁছে যাওয়া যাবে ছুটির গন্তব্যে। মিলেনিয়াম ঘাট থেকে ক্রুজ ছাড়ে সকাল ৯টায়। তার আগে পৌঁছে গেলেই হল। আসনসংখ্যাও নেহাত কম নয়। কমবেশি দেড়শোর ওপর।
গঙ্গাবক্ষে ভাসতে ভাসতে পকোড়ায় কামড় বা চা-এ চুমুক দিতে চাইলে খরচ সামান্য বেশি। পুশব্যাকে শরীর এলিয়ে ভাসতে ভাসতেই পেরিয়ে যাওয়া শহর কলকাতা, বজবজ, হলদিয়া, ডায়মন্ডহারবার। মাঝগঙ্গা থেকে সাক্ষি থাকা শহরপাড়ের স্থাপত্য আর কারুকলার। গঙ্গার পাড় বেয়ে দাঁড়িয়ে থাকা মন্দিরস্থাপত্যে অস্ফুটেই বেরিয়ে আসবে বাহ, বেশ! কখনও বা চোখের নাগালে পাড়ের ভাঙা-গড়া। ঘোর কাটার আগেই পেরিয়ে গিয়েছে সময়। সামনেই এবার প্রতীক্ষিত সেই জেটিঘাট। জ্বলজ্বল করছে,‘‘পুণ্যতীর্থ গঙ্গাসাগরে আপনাকে স্বাগত।’’ আর গন্তব্য যদি হয় সুন্দরবন, সেক্ষেত্রে অভিবাদনে সামান্য রকমফের।জেটিঘাটেই ফুল মালায় স্থানীয় মানুষের ভালবাসায় গা চুবিয়ে বেরিয়ে পড়ুন গন্তব্যের উদ্দেশ্য। কপিল মুনির আশ্রম হলে আশ্রম। অথবা ব্র্যাঘ বা কুমীর প্রকল্প। রয়ে যাওয়ার প্ল্যান থাকলে সেঁধিয়ে যাওয়া হোটেলের ঠিকানায়। আর না হলে চোখের সুখ-শান্তি করে মধ্যাহ্নভোজ সেরে ঘন্টা তিন-চারেকের ঘোরাফেরা সেরে ফিরে আসুন ক্রুজে। ডেকে বসে গঙ্গাবক্ষে সূর্যাস্ত দেখতে দেখতেই ফিরে যাওয়া শহরের ভিড়ে।
আরও পড়ুন - বুড়ো হাড়ে ভেলকি, পাঁইপাঁই করে দৌড়চ্ছেন অনিল কাপুর, সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড়ের গতিতে ভাইরাল ভিডিও
চল্লিশ নট গতিতে ভেসে থাকা বার্জ, ছোট নৌকাকে ভাসিয়ে ক্রুজ ফিরবে শহরের আস্তানায়। আদিগন্ত জলরাশির অন্তহীন আকাশ ছোঁয়ার ছবিটা ধরা থাকুক মনের কোণায়। হৃদয়ের ফ্রেমে বাঁধানো থাক শহর থেকে সাগর বা সুন্দরবনের সোনালি সময়টা।তাই ছুটি বড় হোক কী ছোট। সময় পেলেই বেরিয়ে পড়ুন। অসপ্রেইন্ডিয়ার ওয়েবসাইটে গিয়ে একটা ক্লিকেই ফেরারি মনকে নিয়ে ঘুরে আসুন স্বপ্নের জল সফরে। তাও আবার চুটকি ভর সময়ে। এর বেশি আর কী চাই!
ওস্প্রে ইন্ডিয়া-র পক্ষ থেকে অঞ্জন সিনহা জানান বাঙালির ভ্রমণ তালিকায় সাগর ও সুন্দরবনের দরজা খুলে দিতেই তাদের এই উদ্যোগ ৷ প্রথম দিন থেকেই মিলছে ব্যাপক সাড়া
PARADIP GHOSH
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Gangasagar, Kolkata, কলকাতা, গঙ্গাসাগর, সুন্দরবন