#কলকাতা: শনিবার সকালে একটা ফোন। আর সেই অবাক করে দেওয়া ফোনে আবদার ছিল, 'রাজ্যসভার জন্যে আপনার নাম ভাবা হচ্ছে। প্রস্তাবটা একটু ভেবে দেখবেন?' মাঝে ছিল খানিকক্ষণের বিরতি। তার পরেই মমতা বন্দোপাধ্যায়কে হ্যাঁ বলে সম্মতি জানিয়ে দেন একদা দুঁদে আমলা জহর সরকার৷
যশবন্ত সিনহা থেকে মুকুল রায়। এমন কি, কেউ কেউ হালকা করে ভাসিয়ে দিয়েছিলেন কোচবিহারের এক নেতার নামও। যিনি বেশ কিছুদিন সাংসদ ছিলেন। কিন্তু সবাইকে অবাক করে দিয়ে সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস তাদের ট্যুইটার হ্যান্ডেলে ঘোষণা করে দিল রাজ্যসভায় তারা প্রার্থী করছে প্রসার ভারতীর প্রাক্তন সিইও জহর সরকারকে।
নাম ঘোষণা হতেই আসতে শুরু করেছে একের পর এক অভিনন্দন বার্তা৷ রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক'ও ব্রায়ান জানিয়েছেন, "জহর দা, তাড়াতাড়ি দিল্লি চলো এসো৷ খেলা হবে।" ন্যানো সেকেন্ডের মধ্যে উত্তর দিয়েছেন জহর সরকার৷ তিনি সম্মতিসূচক থাম্বস আপ দিয়েছেন। রাজ্যসভায় তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ কুনাল ঘোষ জানিয়েছেন, 'রাজ্যসভায় যাচ্ছেন জহর সরকার। একজন কৃতী ছাত্র, দেশের সর্বোচ্চ মহলে দক্ষতার সঙ্গে কাজ করা অন্যতম সেরা ও অভিজ্ঞ আমলা, একজন রুচিশীল অসাধারণ জ্ঞানী, সুপটু লেখক ও বাগ্মীকে মনোনয়ন দিল তৃণমূল কংগ্রেস। দিল্লিতে স্পষ্ট হচ্ছে আগামী বিকল্পের পদধ্বনি।'
রাজনৈতিক মহল এই কথার রেশ ধরেই বলছে, মিশন ২০২৪- এর লক্ষ্যেই মমতা বন্দোপাধ্যায় তাঁর ঘুটি সাজাচ্ছেন। ২০২০ সালের ৩ এপ্রিল রাজ্যসভায় তৃণমূলের সাংসদ নির্বাচিত হন দীনেশ ত্রিবেদী। তাঁর মেয়াদ ছিল ২০২৬ সালের ২ এপ্রিল অবধি। কিন্তু বাংলার নির্বাচনের আগেই সংসদ কক্ষে দাঁড়িয়ে তিনি পদত্যাগ করেন। যোগ দেন বিজেপিতে। সেই ফাঁকা আসনেই এবার জহর সরকারকে পাঠানোর তোড়জোড় শুরু করে দিল জোড়া ফুল শিবির।
দীর্ঘ দিন ধরেই মমতা বন্দোপাধ্যায়ের সঙ্গে সুসম্পর্ক জহর সরকারের। সাত বারের সাংসদ মমতা বন্দোপাধ্যায়ের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক ছিল 'জহর দা'-র। তৃণমূলের এক বর্ষীয়ান নেতা বলছেন, দাদা-বোনের সম্পর্ক যেমন হয় ঠিক তেমনই ছিল এই সম্পর্ক। আলাপন বন্দোপাধ্যায়কে নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে মমতা বন্দোপাধ্যায় সরকারের টানাপোড়েনের সময় আলাপন বন্দোপাধ্যায়ের হয়ে সমর্থনেই সরব জহর সরকার। ট্যুইটারে তিনি প্রশ্ন তুলেছিলেন, 'মোদী-শাহ কি পাগল হয়ে গিয়েছেন? পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দোপাধ্যায়ের অবসর নিতে আর একদিন বাকি। এখন তাঁকে দিল্লিতে বদলি করা হচ্ছে?'
দিল্লির অলিন্দে পরিচিত নাম হলেও কোনওদিনই নরেন্দ্র মোদি- অমিত শাহের সঙ্গে জহর সরকারের সুসম্পর্ক ছিল না৷ দীর্ঘ ৪২ বছর জন পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিজ্ঞতা সম্পন্ন সেই আমলাকেই এবার রাজ্যসভায় নিয়ে যাচ্ছেন মমতা বন্দোপাধ্যায়। প্রশাসনিক অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়েই রাজনৈতিক মহলে বাজিমাত করতে চাইছেন জহর সরকার।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: TMC