VENKATESWAR LAHIRI
#কলকাতা: অসহায় মানুষগুলোর জন্য কিছু করার ভাবনা। অবশেষে ভাবনার বাস্তব রূপ দিলেন শহরের বিভিন্ন মহিলা পরিচালিত পুজো কমিটির সদস্যরা। কলকাতা পুরসভার ৬৮ নম্বর ওয়ার্ডের বিদায়ী কাউন্সিলরের উদ্যোগে বালিগঞ্জ এলাকায় শুরু হল রুটি-সবজির অভিনব ক্যান্টিন। রোজগারের আশায় ভিন রাজ্য থেকে এ শহরে অনেকেই আজ এসে আয়ের পথ খুঁজে পেয়েছেন। রিকশাচালক থেকে অন্যান্য দিনমজুর প্রত্যেকেই আজ কঠিন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। পরিবারের পেট চালানো তো দূরের কথা, নিজেদের দু'বেলা দু'মুঠো অন্ন জোগাড় করতেই এখন তাঁদের হিমশিম অবস্থা। করোনা পরিস্থিতিতে কড়া বিধিনিষেধের জেরে একদিকে যেমন রোজগার কমেছে অনেকটাই, পাশাপাশি নিজেদের পেটের জ্বালা ঘোঁচাতেও কালঘাম ছুটছে ওঁদের। রোজগার কার্যত বন্ধের মুখে দাঁড়ানোয় ভাত রুটিও জুটছে না অনেকেরই। সেই সমস্ত মানুষদের দুর্দশার কথা ভেবে এগিয়ে এলেন কলকাতা পুরসভার ৬৮ নম্বর ওয়ার্ডের বিদায়ী কাউন্সিলর সুদর্শনা মুখোপাধ্যায়।
মূলত তাঁর উদ্যোগেই নিজের এলাকার পুজো কমিটির সঙ্গে যে সমস্ত মহিলারা যুক্ত সেই সমস্ত প্রমিলা বাহিনীকে একত্রিত করে তৈরি করলেন 'লক্ষ্মীশ্রী'। একডালিয়া এভারগ্রিন, ৭১ পল্লী, বালিগঞ্জ প্লেস, দুর্গাবাড়ি-সহ সংলগ্ন দশটি পুজো কমিটির সদস্যরা সামিল এই সেবামূলক কাজে । স্থানীয় স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদেরও সুযোগ করে দিলেন রোজগারের। তবে এই উদ্যোগে সবচেয়ে বেশি উপকৃত হলেন খেটে খাওয়া অসহায় মানুষগুলো। যতদিন না পর্যন্ত করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে, বিধি-নিষেধের আওতা থেকে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছে শহর, ততদিন পর্যন্ত সেই সমস্ত মানুষগুলোকে নিখরচায় রুটি সবজির বন্দোবস্তের আয়োজন করা হল। প্রতিদিন বিকেলে রুটি সবজি তুলে দেওয়া হচ্ছে অসহায় মানুষগুলোর হাতে।
একদিকে এই অভিনব ক্যান্টিনে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা অক্লান্ত পরিশ্রম করে তৈরি করে চলেছেন রুটি সবজি। আর অন্যদিকে তখন লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে রিকশাচালক থেকে শুরু করে অসহায় কার্যত অভুক্ত থাকা মানুষগুলো। এলাকার বিভিন্ন মহিলা পরিচালিত পুজো কমিটির সদস্যরা বিভিন্ন সামাজিক কাজের সঙ্গে যুক্ত। তবে এই আয়োজন করতে পেরে একদিকে যেমন তৃপ্ত তাঁরা, তেমনই খুশি যাঁদের জন্য এই আয়োজন তাঁরাও। কার্যত লকডাউনে গৃহবন্দি নাগরিকরা। অতি প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে কেউ বের হচ্ছেন না । তাই শহরের হাতে টানা রিকশাচালকদের অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয়। যদিও বা দু -একটা ভাড়া মিলছে তা দিয়ে এক বেলাও পেট ভরে খাবার জোগাড় করা সম্ভব নয়। তাই এই ক্যান্টিনের আত্মপ্রকাশে শহরের রিকশাচালকরাও উপকৃত হলেন। এই ক্যান্টিনের মূল উদ্যোক্তা বিদায়ী কাউন্সিলর সুদর্শনা মুখোপাধ্যায় বলেন, 'এলাকার নাগরিকদের সঙ্গে নিয়ে আমার এলাকায় এ ধরনের আরও কিছু ক্যান্টিন করা হবে। বিপদের দিনে অসহায় মানুষদের পাশে থাকতেই এই পরিকল্পনা'।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।