#কলকাতা: বিশেষ অ্যাপের মাধ্যমে আগামিকাল, শনিবার থেকে শুরু হচ্ছে ধান কেনা। জোরকদমে রাজ্যের বিভিন্ন ব্লকে ব্লকে চাষীদের কাছ থেকে ধান কেনার অভিযান শুরু করতে চলেছে খাদ্য দফতর। কিছুদিন আগেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নবান্নে ঘোষণা করেছিলেন অ্যাপের মাধ্যমে চাষিদের কাছ থেকে সরাসরি ধান কেনা হবে। দফতর সূত্রে খবর, করোনা সংক্রমণ নিয়ে আশঙ্কার কারণে চাষিরা সরাসরি সরকারি ক্রয় কেন্দ্রে এসে ধান বিক্রি করতে ভয় পেতে পারেন। এমনকী, সংক্রমণের একটা ভয় থেকেই যাচ্ছে। এই কারণে বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে অ্যাপ মারফত ধান কেনার।
রাজ্য সরকার মনে করছে, চলতি এই পরিস্থিতিতে চাষির কাছে টাকা পৌঁছে দেওয়াটাও খুব জরুরি। তাই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে চাষিদের চেক নয়, এনএফটি মারফত টাকা দেওয়া হবে। খাদ্য দফতর সূত্রে খবর, মোট ৫২ লক্ষ মেট্রিক টন ধান কেনা হবে চাষীদের থেকে। আগামী কয়েক মাসের জন্য রেশন দোকান, মিড ডে মিল প্রকল্প, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র ও সাধারণ ত্রাণ হিসাবে চাল দিতে হবে। সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে চালের চাহিদা মেটাতে সরকারি উদ্যোগে আরও ধান সংগ্রহ করতে হবে। ইতিমধ্যেই ৩১ লক্ষ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহ করা হয়ে গিয়েছে। তাই ধান সংগ্রহের জন্য বিশেষ ‘অন্নদাত্রী’ অ্যাপ তৈরি করা হয়েছে। এই অ্যাপটি তৈরি করে পরীক্ষা করে ফেলেছে সরকার। এই অ্যাপ মুলত নিয়ন্ত্রণ করবেন জেলাশাসক। এছাড়া খাদ্য দফতরের আধিকারিকদের কাছেও থাকছে এর নিয়ন্ত্রণ।
গ্রামে গিয়ে বিভিন্ন স্বনির্ভর গোষ্ঠী এই অ্যাপ মারফত কাজ করতে পারবেন। এর পাশাপাশি বিশেষ টোল ফ্রি নম্বরে ফোন করলেও চাষির কাছে গিয়ে ধান কেনা হবে বলে খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক জানিয়েছেন। টোল ফ্রি নম্বর সহ অ্যাপ নিয়ে প্রচার চালিয়ে চাষিদের এ ব্যাপারে সচেতন করার ব্যবস্থা হয়েছে বিভিন্ন জেলায়। আগামিকাল, শনিবার থেকে যাতে ধান সংগ্রহ শুরু হয়ে যায়, তার প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে দফতর। জানা গিয়েছে, কোনও চাষি অ্যাপের মাধ্যমে বা ফোনে সরকারের কাছে ধান বিক্রি করতে চাইলে, ওইদিনই যাতে দ্রুত সেই কাজ করা যায় সেই চেষ্টা করা হবে। বিডিও অফিসের মাধ্যমে ওই ধান কেনা হবে। বিডিও অফিসের এক আধিকারিক চেক সঙ্গে করে নিয়ে যাবেন। ধান কেনার পর চেকের মাধ্যমে দাম মিটিয়ে দেওয়া হবে। যেহেতু এখন করোনা নিয়ে সকলে ভয়ে আছেন তাই সাবধানতাজনিত কারণে ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার হবে। চাষির কাছে গিয়ে ধান কিনতে ছোট ও বড় পণ্যবাহী গাড়ির ব্যবস্থা করতে হচ্ছে। ওই গাড়িতে ওজন করার যন্ত্র রাখা থাকবে। গ্রাম থেকে ধান কিনে লরি সরাসরি রাইস মিলে চলে যাবে।
অ্যাপের মাধ্যমে ধান বিক্রি করতে ইচ্ছুক চাষিকে তাঁর নাম, গ্রাম ও ব্লকের নাম, মোবাইল নম্বর জানাতে হবে। ধান কেনার প্রক্রিয়ায় গ্রামের স্বয়ম্ভর গোষ্ঠীগুলোকে বেশি করে যুক্ত করা হচ্ছে। অন্যদিকে এই পরিস্থিতিতে স্কুলের মিড ডে মিল প্রকল্পের জন্য খাদ্য দফতর আরও ১১ হাজার ৭৬ টন চাল বরাদ্দ করেছে। এর আগে ২১ হাজার ৪০০ টন চাল দেওয়া হয়েছিল এই প্রকল্পের জন্য। লকডাউনের জন্যস্কুলের ক্লাস বন্ধ থাকলেও মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন ছাত্রছাত্রীদের কাছে বরাদ্দ অনুযায়ী চাল পৌঁছে দিতে হবে। রাজ্য সরকার মনে করছে চালের চাহিদা বাড়বে তাই ধান সংগ্রহের কাজে কোনও ফাঁক রাখতে চাইছেন না তারা।
Abir Ghoshal
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Coronavirus, Coronavirus in India, Paddy App