#কলকাতা: গতকাল, শুক্রবার ছিল বিধানসভায় আমার প্রথম দিন ছিল। আমি আনকোরা, নতুন, কৈশোরে কোনও দিন ভাবিওনি এই জায়গায় যাব। তাই ভাবলাম এই নতুন অভিজ্ঞতার কথা কোথাও একটা লিপিবদ্ধ করে রাখি। সেই সুযোগ দিল নিউজ১৮ বাংলা।
সংবিধানের ১৭৬ এ ধারা অনুযায়ী, রাজ্যপালের ভাষণ দিয়েই অধিবেশন শুরু হয়। এবারও সেভাবেই পরিকল্পনা করা হয়েছিল। আমারা যাতে দুপুর ১ টা ৪৫-এর মধ্যে বিধানসভায় পৌঁছে যাই তা জানিয়ে আমাদের মেইল করা হয়েছিল সেক্রেটারিয়েটের পক্ষ থেকে।
আমি অনেকটা আগেই গিয়েছিলাম। প্রথমে নামাজ পড়ি বিধানসভার মসজিদে। তারপর বিধানসভার ক্যান্টিনে গিয়ে টিফিন খাই। আমার জন্য সংরক্ষিত ছিল ১৯৪ নং সিট। আমি বিধানসভার কিছু জানতাম না। মেন গেট থেকে ঢুকে নোটিস বোর্ডে নামটা দেখতে পাই । তারপর স্বেচ্ছাসেবকরা জায়গাটা দেখিয়ে দেন। দল মত নির্বিশেষে প্রথম দিনে সাহায্য পেয়েছি। কাল যেখানে বসেই অপেক্ষা করছিলাম। একে একে এলেন রাজ্যপাল, স্পিকার, মুখ্যমন্ত্রী। চেয়ার ছেড়ে তাঁদের অভ্যর্থনা জানাই। আমার পাশেই ছিলেন মনোরঞ্জন ব্যাপারী, বলাগড়ের বিধায়ক। সাহিত্যিক মানুষ উনি। ওঁরও কাল প্রথম দিন ছিল। দারুণ সব টিপস দিলেন আমায়। বাবার মতো ব্যবহার করছিলেন উনি।
শুরুতেই মর্যাদার সঙ্গে জাতীয় সঙ্গীত হল প্রথমেই। রাজ্যপাল বক্তব্য শুরু করতেই ওয়েলে নেমে বিতর্ক শুরু করলেন বিরোধী দলনেতা। শুরুতেই শুভেন্দু অধিকারীরর নেতৃত্বেই বিরোধী দল ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করলেন। আমি এই ঘটনার জন্য প্রস্তুত ছিলাম না, হতভম্ভ হয়ে যাই। রাজ্যপাল বেশ কয়েকবার বিক্ষোভকারীদের শান্ত করতে চেষ্টা করেন। শেষমেশ তিনি রণে ভঙ্গ দেন। প্রথম দফার অধিবেশন শেষ হয়ে যায়, রাজ্যপাল চলেও যান।
পরের অধিবেশন ছিল ডেপুটি স্পিকার নির্বাচনের, দুপুর সাড়ে তিনটেয়। হাতে কিছুটা সময় পেলাম। লাইব্রেরিতে চলে গেলাম। লাইব্রেরিয়ানের সঙ্গে কথা বললাম। তিনি আমাকে দেখিয়ে দিলেন কোথায় কোন নথি পাব। অত্যন্ত ভদ্রলোক এই গ্রন্থাগারিক। ওয়েবসাইটেও নথি দেখতে পারি, কোথায় কোন রেকর্ড পাব, এসবই উনি দেখিয়ে দিলেন। ভবিষ্যতে এই লাইব্রেরি আমার কাজে লাগবে।
যদি সুযোগ পাই এই পরিস্থিতিতে রেড ভলেন্টিয়ার্সদের ভূমিকা নিয়ে আমি বলব মঙ্গলবার। বিজেপি ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে আগের দিন। চাইব আমার বক্তব্য দিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে।
বিরোধিতার প্রশ্নে মনে পড়ল, ১৯৬২ তে বিধানচন্দ্র রায় মারা গিয়েছেন। আমরা আজও তাঁকে স্মরণ করি।বিধান রায় জ্যোতি বসু একে অন্যের তীব্র সমালোচক ছিলেন। কিন্তু সম্পর্ক ছিল আত্মার। আমি চাই এমন একটা সম্পর্ক তৈরি হোক শাসক বিরোধীর। প্রথম দিনে যা পরিস্থিতি দেখলাম তা বেনজির। এটা কাঙ্খিত ছিল না। বিজেপির প্রতিবাদের বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ, সেটাও বলব।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৃতীয় বার সরকার চালাচ্ছেন। সিপিএম কংগ্রেস বিরোধী হিসেবে থাকা আর বিজেপি বিরোধী হিসেবে থাকা এক কথা নয়। সেটা আগামী দিনে টের পাবেন মুখ্যমন্ত্রী।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Naushad Siddiqui