#কলকাতা: দুর্গাপুজোর সূচনা লগ্নে আগামী ২২ অক্টোবর ষষ্ঠীর দিন বিশেষ বার্তা দেবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি৷ ওয়েবকাস্ট-এর মাধ্যমে এই বিশেষ বার্তার নাম দেওয়া হয়েছে 'পূজা কি বাত'! এই প্রথমবার সম্ভবত এমন কোনও উদ্যোগ নিলেন কোনও প্রধানমন্ত্রী৷
এর থেকেই স্পষ্ট, ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনের আগে বাঙালিদের মন জয়ের সামান্যতম সুযোগেরও সদ্ব্যবহার করতে কতটা উদগ্রীব বিজেপি৷ রাস্তায় নেমে রাজনৈতিক লড়াই করে রাজ্যের শাসক দলের পায়ের তলার মাটি কেড়ে নিতে যেমন তারা মরিয়া, একই ভাবে এতদিন ভার্চুয়াল মাধ্যমগুলিতেও এ রাজ্যে তৃণমূল সুপ্রিমো এবং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একচেটিয়া আধিপত্যে ভাগ বসাতে চেষ্টার ত্রুটি রাখছে না বিজেপি নেতৃত্ব৷
গত কয়েক বছর ধরেই পুজোর কয়েকদিন আগে থেকেই কলকাতা এবং তার আশেপাশে এলাকায় বহু পুজোর উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী৷ পুজোর উদ্বোধনের জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে যে বিপুল সংখ্যক অনুরোধ আসে, তা সামাল দিতে শেষ কয়েক বছরে মহালয়ার দিন থেকেও পুজোর উদ্বোধন করে দিতে দেখা গিয়েছে তাঁকে৷ উদ্বোধনে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী চণ্ডী মন্ত্রোচ্চারণ করছেন, গত কয়েক বছরে দুর্গা পুজোর সময় কলকাতায় এই দৃশ্য পরিচিত হয়ে উঠেছে৷
বিজেপি বরাবরই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু তোষণের অভিযোগ তোলে৷ সেই জায়গা থেকে দুর্গাপুজোর উদ্বোধনে গিয়ে হিন্দু ধর্মের প্রতি তাঁর শ্রদ্ধা এবং আস্থার ভাবমূর্তিকেই গত কয়েক বছর ধরে মেলে ধরেছেন মমতা৷
যদিও বিধানসভা নির্বাচনের আগে এ বছর সেই সুযোগ থাকছে না মুখ্যমন্ত্রীর সামনে৷ করোনা অতিমারির জন্য এ বছর সশরীরে কোনও মণ্ডপে পুজোর উদ্বোধনে যাচ্ছেন না তিনি৷ তবে নবান্ন থেকেই ভার্চুয়াল মাধ্যমে একাধিক পুজোর উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী৷ আগামী ১৫ থেকে ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত ভার্চুয়াল মাধ্যমেই দুর্গাপুজোর উদ্বোধন সারবেন তিনি৷
তবে দুর্গাপুজোর উদ্বোধনে সশরীরে উপস্থিত হয়ে জনসংযোগের সুযোগ হারালেও পুজোর আয়োজনে তাঁর সরকার কতটা আন্তরিক, তা বুঝিয়ে দিতে চেষ্টার ত্রুটি রাখেননি মুখ্যমন্ত্রী৷ করোনা অতিমারির মধ্যে পুজোর আয়োজনে সাহায্য করতে ৩৭ হাজার পুজো কমিটিকে ২৫ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকা করে আর্থিক সহযোগিতা করছে রাজ্য সরকার৷ পাশাপাশি, পুরসভা, পঞ্চায়েত সহ যাবতীয় কর মকুব করে দেওয়া হয়েছে৷ বিদ্যুতের খরচেও ৫০ শতাংশ ছাড় দেওয়ার ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ রাজ্য সরকারের আর্থিক পরিস্থিতির কথা বিচার করে সরকারি কোষাগারে ২০০ কোটি টাকার বাড়তি বোঝা চাপানোর এই সিদ্ধান্ত কতটা যুক্তিযুক্ত, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা যেতেই পারে, কিন্তু ভোটমুখী রাজ্যে এই সিদ্ধান্তের কার্যকরিতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার কোনও জায়গা নেই৷
আর এই জায়গাতেই দাঁত ফোটাতে চায় বিজেপি৷ সেই কারণেই বিজেপি-র রাজ্য নেতৃত্বের তরফে ষষ্ঠীর সকালে রাজ্যবাসীকে বার্তা দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল৷ কারণ এই কটাদিন করোনা অতিমারির যাবতীয় দুর্বভাবনাকে সাময়িক ভাবে পিছনের সারিতে ঠেলে রাজ্যের সিংহভাগ মানুষই পাঁচদিনের উৎসবে মেতে উঠবেন৷ ফলে উৎসবমুখর রাজ্যবাসীর মন জয়ে প্রধানমন্ত্রী কী বার্তা দেন, সেদিকেই অধীর আগ্রহে তাকিয়ে সবাই৷
Sougata Mukhopadhyay
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Narendra Modi