SHANKU SANTRA
#কলকাতা: করোনা ভাইরাসের আক্রমণে সারা দেশ লকডাউন। সাস্থ্য মন্ত্রকের নির্দেশ অনুযায়ী, একজন মানুষের থেকে আরেকজন মানুষকে, এক মিটার দূরত্বে থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই নির্দেশ মতো ভূষিমাল দোকান থেকে ওষুধ দোকান, সব জায়গাতেই লম্বা লাইন। ওষুধ দোকানগুলোতে লাইন চোখে পড়ার মতো। প্রতিদিনই সকাল সাতটার পরে দেখা যায় একশ থেকে দেড়শ মানুষের লাইন। বহু মানুষ আছেন যাঁরা মাসকাবারি বাজারের মতো করে নিয়মিত সেবনের ওষুধ কেনেন। তারপর এখন জ্বরের মরশুম হওয়ার জন্য, মানুষের ওষুধ কেনার লম্বা লাইন থাকছেই।
কলকাতায় প্রতিটি হাসপাতালে সুলভ মূল্যের ওষুধ দোকান রয়েছে ।যেখানে ৬০ শতাংশ থেকে ৬৫ শতাংশ অবধি ওষুধে ছাড় পাওয়া যায়। আজ সকালে বাঘাযতীন স্টেট জেনারেল হাসপাতালে সুলভ মূল্যের ওষুধ দোকানে প্রায় দেড়শো জন মানুষের লম্বা লাইন। একজন মানুষ আরেকজন মানুষের থেকে এক মিটার দূরত্বে দাঁড়িয়ে আছে। চড়া রোদে প্রত্যেকে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে কম পয়সায় ওষুধ কিনবেন বলে। হলুদ জামা পড়ে এক মাঝবয়সী ভদ্রলোক দীর্ঘক্ষণ ওই লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। কপালে ঘাম মুছছেন । তবুও ধৈর্য্য ধরে রয়েছেন ৬৫ শতাংশ ছাড়ে ওষুধ কিনবেন বলে। লাইন এগিয়ে আসতে আসতে ওনার ঘন্টা দেড়েক সময় লাগলো। যখন উনি একজনের পেছনে। তখন থেকেই চারদিকে ইতঃস্তত হয়ে তাকাছিলেন। সামনের জনের ওষুধ নেওয়া হয়ে গেল । উনি এলেন লাইনের সামনে। খানিকটা হাত দিয়ে ভঙ্গি করে, বলেই ফেললেন ঔষধ দোকানের ছেলেটিকে, ‘সেক্সের ওষুধ আছে?’
সটান প্রশ্নবাণে কিছুটা স্তম্ভিত ওষুধ দোকানের ছেলেটি। উত্তর দিলেন 'না আমরা বিক্রি করি না।' তারপর ছেলেটি জিজ্ঞাসা করলেন 'এখানে কেন?’ উত্তর, ‘সুলভ মূল্যের ওষুধ দোকান তো তাই অনেকটা কম হবে ভেবে এসেছি।’ ‘কতটা নেবেন?’ ‘দাম কম হলে দু-চার পাতা যা হয় নেবো।’ দোকানের ছেলেটি বললেন, ‘না দাদা আমরা বিক্রি করি না।’ তারপর লোকটি আশাহত হয়ে চলে গেলেন। লোকটি চলে যাওয়ার পর অনেকেই হাসলেন।
এই ঘটনা শুধু এই বাঘাযতীন হাসপাতালে নয়, ঘটছে সমস্ত ওষুধের দোকানেই। টান পড়েছে যৌন শক্তি বর্ধক ট্যাবলেট ও তেলের দিকে। এই ওষুধগুলো ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়াই খেয়ে থাকেন বেশিরভাগ মানুষ। চিকিৎসকদের কথায়, এইভাবে যথেচ্ছ ভাবে যদি এইসব ওষুধ মানুষ খায়, তাহলে সাময়িকের জন্য কিছুটা উপকৃত হলেও, আদতে ক্ষতি হচ্ছে মানুষের। সিলডেনাফিল সাইট্রেট জাতীয় ওষুধ হৃদস্পন্দন বৃদ্ধি করে। যার ফলে হার্টের রোগ থাকলে মানুষ মারাও যেতে পারেন। এই জাতীয় ওষুধ কোনও দিন যৌন শক্তি বর্ধক হিসেবে ব্যবহার হতো না। বর্তমানে অনেকেই ব্যবহার করছেন। এই মুহূর্তে করোনা প্রতিরোধের জন্য সোশ্যাল মাধ্যমে গুজবে, মানুষ ভুল ওষুধপত্র খাচ্ছেন । সে গুলো কোন চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া খেতে বারণ করছেন চিকিৎসকরাই। করোনা থেকে বাঁচতে গিয়ে, আমরা যাতে ভুল উপায়ে প্রাণ না হারাই, সেই দিকে সতর্ক হতে বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Lock Down