#কলকাতা: ঠিক সময়ে হাতে তুলে দিতে হবে তো। মেয়ের বিয়ের সোনার গহনা বলে কথা। কিন্তু দোকান খুলে রাখা যাবে তো? চিন্তায় মশগুল বউবাজারের সোনার ব্যবসায়ীরা। কারণ মেট্রোর সুড়ঙ্গ খোঁড়ার কাজের জন্য আবার দোকান বন্ধ করে দিতে হবে না তো। সাত মাসের আগের সোনা পট্টি বন্ধ থাকার স্মৃতি আবার ফিরে আসছে গৌর দে লেন, দূর্গা পিতুরি লেনের আনাচে কানাচে।
বিয়ের ভরা মরসুম। ছোট-বড় সোনার সব দোকানেই তাই কাজের চরম ব্যস্ততা। ইতিমধ্যেই গৌর দে লেনের বেশ কিছু বাড়ির বাসিন্দাদের সরানো হয়েছে হোটেলে। আর সেই সব বাড়িতে অনেক সোনার কারখানা ছিল। সেই কারখানা যেমন বন্ধ হয়েছে। তেমনই পিছিয়েছে কাজ। রোজগার বন্ধ হয়েছে। এবার সেই আশংকা ফিরে এসেছে একটু বড় পরিসরেই বউবাজারের সোনাপট্টিতে। ইস্ট ওয়েস্ট মেট্রোর পূর্বমুখী সুড়ঙ্গ খননের কাজ চলছে। আর কিছু দিনের মধ্যেই টানেল বোরিং মেশিন গৌর দে লেনের নিচে দিয়ে এগিয়ে যাবে শিয়ালদহ স্টেশনের দিকে। যে অংশ দিয়ে যাবে তার ওপরে রয়েছে বি বি গাঙ্গুলী স্ট্রিট। সেই রাস্তার ওপরেই রয়েছে একাধিক সোনার দোকান। আর বিভিন্ন গলিতে রয়েছে সোনার কারখানা। সেই সব বাড়ির লোকেদের না হয় হোটেলে স্থানান্তরিত করা গেল। কিন্তু কারখানা তো আর সরানো যাবে না। ফলে চিন্তা বাড়ছে সোনার দোকানের ব্যবসায়ীদের।
আগামী বৃহস্পতিবার থেকে ফের দৌড় শুরু করবে টানেল বোরিং মেশিন। গৌর দে লেন ধরেই এগোবে সেই মেশিন। আপাতত ছ'টি বাড়ির বাসিন্দাদের অন্য হোটেলে সরানো হয়েছিল। এই বাড়ি গুলিতেও ছিল সোনার দোকানের কারখানা। সেগুলোও বন্ধ ছিল বেশ কয়েকটা। ফলে যথাসময়ে ডেলিভারি দিতে পারা যাবে কি না তা নিয়ে তৈরি হয়েছে সংশয়। এবার যেখান দিয়ে টানেল বোরিং মেশিন যাবে সেখানে রয়েছে প্রায় ৬৫টি কারখানা। সোনার গয়না তৈরির কাজ চলে সেখানে। বৈশাখ মাসের শুরুতেই বিয়ের লগ্ন। ফলে বহু টাকার কাজ রয়েছে এই সমস্ত কারখানা গুলিতে। কিন্তু ফের দোকান ও কারখানা বন্ধ হবার জন্য, সেই কাজ কি করে শেষ হবে তা নিয়ে বেজায় ফাঁপরে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। বিশেষ করে চিন্তা বেড়েছে কারিগরদের। তাদের রুটিরুজি তে টান পড়ছে বলে অভিযোগ। তাই উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে জোট বাঁধছে বঙ্গীয় স্বণশিল্পী সংগঠন। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সুব্রত কর বলেন, "এবার ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। বারবার ব্যবসার ক্ষতি করা যাবে না। কারিগরদের ব্যপারটা দেখতে হবে।" সংগঠনের সিদ্ধান্তে খুশি কারিগররা। এমনই এক কারিগর প্রসেনজিৎ পাল বলেন, "গত বছর পুজোর সময় সংসার চালানো দায় হয়ে গিয়েছিল। সেই ক্ষত এখনও শুকোয়নি। বারবার এমন করে আমাদের পেটে লাথি মারা যাবে না।" একই অভিযোগ নিতাই মন্ডল, ছোটু পানেদের। ফলে মালিকের থেকেও এবার বেশি চিন্তায় কারিগররা।
আরও পড়ুন - প্রচণ্ড জোরে দৌড়চ্ছে সিংহ, প্রাণভয়ে এদিক-ওদিক সরে যাচ্ছে মানুষজন, দেখুন Viral Video
কে এম আর সি এল অবশ্য জানাচ্ছে, ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলেই সমস্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। মেশিন চলার সময়ে সমস্ত ধরণের সাবধানতা অবলম্বন করা হয়েছে। তবুও যাতে দুর্ঘটনা না ঘটে তাই বাড়ি থেকে অন্যত্র স্থানান্তর করা হয়। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সুব্রত কর অবশ্য জানাচ্ছেন, সমস্ত দোকান ও কারখানার তালিকা বানানো হয়ে গেছে। সেই তালিকা মোতাবেক ব্যবস্থা নিতে হবে। যদিও দুশ্চিন্তার মেঘ কাটছে না বউবাজারের সোনাপট্টির।
ABIR GHOSHAL
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।