#কলকাতা: দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়ের হাতিশালা মাদ্রাসার ইরফান আলী বিশ্বাসের সাথে কোনোদিনই দেখা হয়নি নোদাখালির হাউরি দীননাথ হাই স্কুলের প্রধানশিক্ষিকা গার্গী মুখার্জীর। অথচ এরকমই রাজ্যের বিভিন্ন জেলার একশোর বেশি স্কুলের প্রধান শিক্ষকরা জোট বেঁধেছেন সোশ্যাল মিডিয়ার হাত ধরে। সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক, দাবি দাওয়াহীন হোয়াটস্যাপ গ্রুপের নাম - ‘দ্য গেম চেঞ্জার’। উদ্দেশ্য, করোনা আবহে গোটা দেশে লকডাউন পরিস্থিতিতে নিজের নিজের এলাকার খেটে খাওয়া, দিনমজুর, ভুখা মানুষগুলোর দু’মুঠো অন্নের ব্যবস্থা করা।
এজন্য প্রধান শিক্ষিক ও শিক্ষাকারা নিজেরাই মাস মাইনের থেকে সাধ্যমতো অর্থ দিয়ে তৈরী করেছেন রিলিফ ফান্ড। ভিক্ষোপজীবী থেকে ভ্যানচালক, বাড়ির পরিচারিকা থেকে যৌনকর্মীদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছেন বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রী। লকডাউনের কথা মাথায় রেখে এলাকার যুবকদের সামাজিক দূরত্বের পাঠ দিয়ে দায়িত্ব ভাগ করতে শেখাচ্ছেন।
এমন ভাবনা কীভাবে এলো? গেম-চেঞ্জার গ্রুপের অন্যতম প্রবীণ সদস্য বজবজের সন্তোষ কুমারী শিক্ষা নিকেতনের প্রধান শিক্ষক সোমনাথ পালের কথায়, ‘করোনা লকডাউনে সাড়া দেশ স্তব্ধ। দিন আনা দিন-খাওয়া মানুষগুলোর পাশে এইসময় না দাঁড়াতে পারলে, কীসের স্কুল, ডিআই অফিস, শিক্ষা দপ্তর? পেট ভাত চেনে, ভাইরাস চেনে না। এজন্য আমরা সকলেই সহমত হয়ে একটা প্লাটফর্ম গড়েছি। সেটাকেই সামাজিক সুরক্ষার কাজে লাগাতে চাইছি।’
হাওড়ার আমতার মাতো হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক শ্রীমান কুণ্ডুর মতে, ‘ন্যূনতম খাদ্য বাসস্থানের সুরাহা না করতে পারলে, উন্নয়নের প্রশ্ন অবান্তর। তাই কলকাতার ইস্টার্ন মেট্রোপলিটন বাইপাস থেকে উচ্ছেদ হওয়া ৮৬ টি পরিবারে ত্রাণ- সামগ্রী পৌঁছে দিতে প্রধানশিক্ষিক ও শিক্ষিকারা ছুটে গিয়েছিলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার ঘাসিয়াড়ায়। আবার বারুইপুরের শাসন এলাকার যৌনপল্লীতে ১০০ মহিলার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে এক সপ্তাহের খাবার সহ স্যানিটারি ন্যাপকিন। হোয়াটস অ্যাপকে হাতিয়ার করে এভাবে প্রধান শিক্ষক প্রধান শিক্ষিকাদের যৌথভাবে এগিয়ে আসাটা অভিনব এবং দৃষ্টান্তমূলক।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Bengal, Coronavirus, Lockdown