#কলকাতা: হাসপাতালে ভর্তি করবেন?ব্যাস শুধু ফোনে বলতে হবে।মাসি এক পায়ে খাড়া।ফোন নম্বর না থাকলে শুধু বলতে হবে,ব্যান্ডেল মাসি।৫০০ থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত দিলেই,অপারেশন থেকে, বেডে ভর্তি সব কিছুর ব্যবস্থা হয়ে যাবে। এই ব্যান্ডেল মাসীর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করি।আগে অবশ্য দু একবার দেখা করে মাসির আস্থা অর্জন করেছিলাম।সোমবার সন্ধ্যা বেলা মাসিকে ফোন করে বলা হয়,একটা রোগী রয়েছে ভর্তি করতে হবে।বহুবার হাসপাতালে আনার পর ,হাসপাতাল ভর্তি না নিয়ে ফিরিয়ে দিয়েছে। মাসি মঙ্গল বার সকালে রোগী নিয়ে আসতে বলে।বলেন নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আসার জন্য। ওনার কথা অনুযায়ী,আমরা সকাল ৯ টা নাগাদ ওখানে পৌঁছায়।কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর ,আবার আমাদের মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যেতে বলে।সেই অনুযায়ী আমরা পৌঁছে যাই মেডিক্যালে।বারে বারে ফোন যোগাযোগ করার পর,আমাদের বেশ কিছুক্ষণ,এ বিল্ডিং থেকে ও বিল্ডিং ঘোরাতে থাকে। অবশেষে বেলা ১২ টা নাগাদ ,হাসপাতালের ৩ নম্বর গেটে দেখা দেয়, নাগরী মাসি অর্থাৎ ব্যান্ডেল মাসি।আমি আমার সঙ্গে সঞ্জীব দাস নামে আমাদের এক ড্রাইভারকে, রোগীর বাড়ির লোক সাজিয়ে নিয়ে যাই।বলা হয় ওর দাদা,খুব অসুস্থ। শহরের বাইরে একটি ছোট নার্সিং হোম এ ভরতি করা আছে।খরচ আর টানতে পারছে না।তাই সরকারি হাসপাতালে ভর্তি দরকার।ব্যাস মাসি সঙ্গে সঙ্গে বেজায় রেগে গেলেন।কেনো বেসরকারি নার্সিং হোমে টাকা দেবে? যাক মাসি আমাদের সাফ জানিয়ে দিলেন,২ হাজার টাকা লাগবে।সঙ্গে সঙ্গে নিয়ে গেলেই হাসপাতালে ভর্তি হয়ে যাবে। সরকারি হাসপাতালে দালাল চক্র দিনের পর দিন চলছে।এর আগে বহুবার ধরা পড়লেও,সক্রিয় থাকছে এই চক্র। এই ব্যাপারে হাসপাতাল কতৃপক্ষের দাবী,বাইরের দালাল আসলে ,ভেতরের লোকের মদত ছাড়া কোনো দিন ভর্তি করা সম্ভব না।রোগীর বেড বিক্রির বিষয়ে একটি দীর্ঘ দিনের চক্র কাজ করছে। হাসপাতালে গ্রুপ ডি কর্মীরা,সবাই এজেন্সির মাধ্যমে নিয়োগ হয়।যাদের বেতন ৭ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা অবধি।তারা রাজনৈতিক দলের থেকেই বেশির ভাগ আসে।যার ফলে তারা হাসপাতালের আধিকারিকদের তেমন পরোয়া করে না।তারাই বেশির ভাগ দুর্নীতি গ্রস্থ হয়ে পড়ে।তবে এই বেডের হিসাব থাকে ,ডাক্তারদের কাছে।তাদের মদতেই বিক্রি হয় বেড। শুধু এই নাগরী মাসি নয়।এই হাসপাতালে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে দালাল।আর এই সব দালালদের পরিচালনা করে এই ব্যান্ডেল মাসি। এই বিষয়ে,হাসপাতালের সুপার ডাক্তার ইন্দ্রনীল বিশ্বাসের সঙ্গে কথা বললে তিনি বলেন ' এই দালাল সন্দেহে, গত তিন মাসে ৭-৮ জনকে ধরা হয়েছিল।কিন্তু ওদের বিরুদ্ধে কোনো সুনির্দিষ্ট লিখিত অভিযোগ না থাকার ফলে,কোনো ব্যবস্থা নেওয়া যায় নি।এই চক্র বন্ধ করতে গেলে দরকার লিখিত অভিযোগ। ' মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এক রোগীর পরিবার ,তিন দিন ধরে কান্সার আক্রান্তকে নিয়ে ঘুরছে,আজও ভর্তি তো দূরের কথা,এখনো ডাক্তার দেখাতে পারেনি।তাদের বক্তব্য দালাল ছাড়া ,সরকারি হাসপাতালে এসে, ঘুরতে হয়।নইলে কোনো কাজ হবে না। সব আমলেই হাসপাতাল রোজগারের জায়গা।শুধু মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল না,পিজি,নীলরতন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও চলছে এই একই চক্র। প্রশ্ন,এটা বন্ধ হবে কবে?SHANKU SANTRA
First published:
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।