#কলকাতা: বাঙালি আত্মঘাতী'ই। লকডাউন চলুক বা করোনা ভাইরাস মহামারির আকার ধারণ করুক, বাঙালির বাজার করার নেশা বন্ধ করা যে কী কঠিন তা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে প্রশাসন। করোনা থেকে বাঁচতে লকডাউন পর্বে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার কথা বারবার ঘোষণা করা হচ্ছে প্রশাসনের তরফে। বাজার-হাট, দোকান সর্বত্রই সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে অনুরোধ প্রশাসনের। কিন্তু রবিবার হোক বা সোমবার, লকডাউন পর্বে রাজ্যের প্রায় সব বাজারে উপচে পড়া ভিড়।
লকডাউনের মাঝে বাজারে গিয়ে কেউ যাতে ভিড় না করে সেজন্য মাইকে লাগাতার প্রচার করছে পুলিশ। কিন্তু কে শোনে কার কথা! যাই হয়ে যাক না কেন বাঙালি বাজারে আসবেই। তাই বাজারে আসা বাঙালির জন্যই নতুন কিছু ভাবতে হত প্রশাসনকে। মানুষের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার অনুরোধে যখন কাজ হল না, তখন বাজারগুলিকেই এমনভাবে সাজানো হচ্ছে যাতে প্রত্যেক দোকানের মধ্যে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় থাকে এবং মানুষও সেখানে বাজার করতে এসে যাতে কোনওভাবেই একে অপরের গা ঘেঁষে দাঁড়াতে না পারে, সেই ব্যবস্থাও করা হল।
রাজ্য পুলিশ সূত্রে খবর, গোটা রাজ্যে প্রায় দেড় হাজার বাজারকে নিকটবর্তী ফাঁকা এবং খোলা জায়গায় সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যেই ১২০০ বাজারকে সরানো হয়েছে কাছাকাছি কোনও মাঠ বা ফাঁকা জায়গায়। আরও ২৫৬ ঘিঞ্জি বাজারকে খোলা জায়গায় বা ফাঁকা মাঠে সরানোর জন্য খোঁজা হচ্ছে জায়গা। রাজ্য পুলিশ সূত্রে আরও খবর, যে বাজার গুলির আশেপাশে কোনও ফাঁকা মাঠ বা খোলা জায়গা পাওয়া যায়নি, সেই বাজার গুলির পরিসর বাড়ানো হয়েছে। পরিসর বাড়ানো বাজারের সংখ্যাও নেহাত কম নয়। গোটা রাজ্যে ৯৬৩ বাজারের পরিসর বাড়ানো হয়েছে।
রাজ্য পুলিশের বক্তব্য, বাজারে ভিড় এড়ানোর অনুরোধে যখন কাজ হল না, তখন প্রত্যেক থানাকে বলা হয় তাদের এলাকায় কত ঘিঞ্জি বাজার রয়েছে তার তালিকা তৈরি করতে। তারপর খোঁজা হয়েছে সেই বাজারের সংলগ্ন কোন বড় খেলার মাঠ বা ফাঁকা জায়গাকে। জায়গা মিলতেই গোটা বাজারকে সেখানে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তারপর বাজারের সবজি, মাছ, মাংস বিক্রেতাদের দোকানের মধ্যে রাখা হয়েছে নির্দিষ্ট দূরত্ব। এবার প্রত্যেকটি দোকানের সামনে যে ফাঁকা জায়গা তৈরি হয়েছে, সেখানেও যাতে কেউ গা ঘেঁষে দাঁড়াতে না পারে সেজন্যও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। রাজ্য প্রশাসন মনে করছে একমাত্র এভাবেই বাজারগুলিতে মানুষের ভীড় এড়ানো সম্ভব কিংবা সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা সম্ভব। কারণ হাজার অনুরোধেও মানুষ যখন সামাজিক দূরত্ব মানছে না তখন বাজারকেই সামাজিক দূরত্বে বসানোই একমাত্র দাওয়াই।
রাজ্য পুলিশের এক কর্তা বলেন, 'বাজারগুলিকে মাঠে বা খোলা জায়গায় সরানোর পর ভিড় কমছে। মানুষের মধ্যে দূরত্বও বাড়ছে।'
SUJOY PAL
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Market shift