#কলকাতা: প্রার্থী তালিকায় চমকের শেষ নেই, তারুণ্য়-তারকার সমাবেশে বিধানসভা নির্বাচন জেতার 'রুটম্য়াপ' তৈরি করেছেন মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়। কিন্তু সেই সিদ্ধান্ত নিতে গিয়ে বেশ কয়েকজন প্রবীণ নেতাকে প্রার্থী তালিকা থেকে বাদ দিতে হয়েছে তৃণমূল নেত্রীকে। তাঁদের মধ্যে আছেন পূর্ণেন্দু বসু, জটু লাহিড়ি, মনীশ গুপ্ত, অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র, দলের মধ্যে বিক্ষুব্ধ সিঙ্গুরের মাস্টারমশাই রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য, ব্রজ মজুমদার, সোনালি গুপ্ত, সমীর চক্রবর্তী, অমল আচার্যের মতো নাম। এদিন প্রার্থী তালিকা ঘোষণার শুরুতেই মমতা বলেন, '৮০ ঊর্ধ্ব কেউ এবারের ভোটে প্রার্থী হচ্ছেন না। এখন করোনার সময়, যাঁদের বয়স আশি পেরিয়ে গিয়েছে, তাঁদের এবার আর প্রার্থী করা হচ্ছে না। তাঁদের সুস্থ থাকা জরুরি।' এরপরই তৃণমূল নেত্রীর ঘোষণা, 'বয়সের কারণে যে সব প্রবীণ মানুষরা টিকিট পেলেন না, তাদের বিধান পরিষদে স্থান দেবে সরকার। ক্ষমতায় ফিরলে বিধান পরিষদ তৈরি করব।' এই সিদ্ধান্ত নীতিগত কারণেই নেওয়া বলে দাবি করেন মমতা।
উল্লেখ্য়, উত্তরপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, বিহার-সহ একাধিক রাজ্যে বিধান পরিষদ রয়েছে৷ পশ্চিমবঙ্গে ১৯৫২ সাল থেকে ১৯৬৯ সাল পর্যন্ত বিধান পরিষদের অস্তিত্ব ছিল। কিন্তু ১৯৬৯ সালে আইন পাশ করে এই পরিষদের অবলুপ্তি ঘটানো হয়। যদিও ২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার পরপরই মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, বিধান পরিষদ ফিরিয়ে আনা হবে বাংলায়। কিন্তু এখনও তা করে ওঠা হয়নি। তবে, এবার দলের প্রবীণ নেতাদের জায়গা করে দিতে সেই পথে যে তিনি হাঁটবেনই, তা এদিন স্পষ্ট করে দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী।
কিন্তু পূর্ণেন্দু বসুর মতো হেভিওয়েট নেতা কেন তালিকায় নেই? মমতার দাবি, 'আমার হয়ে নন্দীগ্রামে কাজ করতে চান পূর্ণেন্দু বসু। তিনি নিজেই সেই দায়িত্ব নিয়েছেন।' তবে, ক্ষমতায় এসে বিধান পরিষদ গঠন হলে প্রথম নাম যে পূর্ণেন্দু বসুরই হবে, তা জানিয়ে রেখেছেন তৃণমূল নেত্রী। অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রের শরীর ভালো নেই বলে তিনি ভোটে দাঁড়াচ্ছেন না বলেও এদিন জানান মমতা। তাঁকেও যে বিধান পরিষদে জায়গা দেওয়া হবে, তাও মোটামুটি স্পষ্ট। উল্লেখ্য, করোনার কারণে প্রবীণ মানুষদের জন্য পোস্টাল ব্যালট ব্যবহারের সুযোগ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। কমিশনের সেই পদক্ষেপকে সম্মান জানাতেই আশি উর্ধ্ব নেতাদের প্রার্থী না করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলেও দাবি করেন তৃণমূল নেত্রী।
বিধান পরিষদ কী? রাজ্য আইনসভা দ্বিকক্ষবিশিষ্ট বা এক কক্ষবিশিষ্ট হতে পারে। আর যদি তা দ্বিকক্ষবিশিষ্ট হয়, তার উচ্চকক্ষের নাম বিধান পরিষদ এবং নিম্ন কক্ষ হল বিধানসভা। ভারতের বেশিরভাগ রাজ্যেই বিধান পরিষদের অস্তিত্ব নেই। তবে, উত্তরপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, বিহারের মতো রাজ্য এখনও রয়েছে বিধান পরিষদ। এবার পশ্চিমবঙ্গেও কি ফের গঠিত হবে বিধান পরিষদ, উত্তর দেবে সময়।