#কলকাতা: ভাঙা পায়েই খেলা হবে, নন্দীগ্রাম দিবসে হাজরার মঞ্চ থেকে বার্তা দিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামিকাল পুরুলিয়ায় সভা, আজই রওনা হতে হবে দুর্গাপুরে। যাত্রাশুরুর আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে আরও একবার সেই দৃঢ়তাই দেখালেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কর্মীদের উজ্জীবীত করতে মমতা বললেন, ভাঙা পায়েই গোটা বাংলা ঘুরবেন তিনি।
আজ ১৪ মার্চ, নন্দীগ্রাম দিবস উপলক্ষ্যে তৃণমূলের মিছিলের পুরোভাগে ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছুটির দুপুরে ভাঙা পায়ে হুইল চেয়ারে বসে তিনি যখন মিছিলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন চেহারায় ক্লান্তির ছাপ স্পষ্ট। তবে চারদিন পরে তাঁর আবার রাস্তায় ফেরা। এই চার দিন ভোট রাজনীতির সময় অনন্তকাল যেন। স্বাভাবিক ভাবেই রাস্তার দুধারে মানুষের উৎসাহ ছিল চোখে পড়ার মতো। মেয়ো রোড থেকে শুরু হওয়া মিছিল পৌঁছল হাজরা মোড়ে। সেই ঐতিহাসিক জায়গা, যেখানে লালু আলমের দলবল মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের মাথায় আঘাত করেছিলেন বলে অভিযোগ। মঞ্চে উঠতে হল সহকর্মীদের সহযোগিতাতেই। সেই চেনা ঝোড়ো ভঙ্গি নয়, আঘাত তাঁকে যেন সমাহিত করেছে। থেমে থেমে মমতা বললেন, "স্বৈরাচারীদের হাতে গণতন্ত্র পদদলিত হচ্ছে, সেই যন্ত্রণা আরও বেশি।" পাশাপাশি নীচুতলার কর্মীদের জন্য রইল ভোকাল টনিক। বললেন, "আপনাদের থেকেই মনের জোর পেয়েছি , সারা বাংলা ঘুরব।"
মমতা এমনিতেই প্রতিদিন দীর্ঘসময় কাজ করেন বলে শোনা যায় তাঁর ঘনিষ্ঠমহল থেকে। ভোটের মুখে যে তুমুল ব্যস্ততা থাকবে তা বলাই বাহুল্য। আক্ষেপ শোনা গেল মমতার মুখেও। বললেন, "আজ নন্দীগ্রাম দিবস। সারা ভারতবর্ষ জুড়ে যে কৃষকদিবস হচ্ছে তাকে সেলাম। আমার সময় কম। দুর্গাপুর যেতে হবে। পাঁচ ছটা দিন নষ্ট হয়ে গিয়েছে। ভোটের সময় প্রতিটা মুহূর্ত কতটা গুরুতর আপনারা সকলেই জানেন।"
ধরা পড়ল সেই আত্মবিশ্বাস। বললেন, "আমি শুধু এটুকু বলব, আমার জীবন অনেক আঘাত লড়াইয়ের মধ্যে দিয়ে গিয়েছে। আমি কখনও মাথা নোয়াইনি। আমাকে অনেকে জিজ্ঞেস করছে কেমন আছি। যারা চক্রান্ত করে তারা সফল হয়ে যাবে। আমি মনের জোর আপনাদের কাছে পেয়েছি। যারা খবর নিয়েছেন সকলকে আমার কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। আমার শারীরিক যন্ত্রণার চেয়েও হৃদয়ের যন্ত্রণা অনেক বড়।"
অনুগামী হোক বা বিরোধী সকলেই বলেন, মমতা রাস্তার রাজনীতির অবিসংবাদিত নেত্রী। ১০ মার্চ মমতার রাজনীতির ধাত্রীভূমি নন্দীগ্রামেই সেই পায়ে আঘাত লাগে। ভর্তি হতে হয় হাসপাতালে। তারপর সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তাল হয়েছে রাজনীতি। মমতা বিলক্ষণ জানেন এবার হাঁটতে পারবেন না, তাই রণকৌশল বদলাতে হচ্ছে। সেই কারণেই আজ বলা, "নিহত বাঘের থেকেও আহত বাঘ ভয়ঙ্কর।"
যদিও লুকনো গেল না আক্ষেপও। মমতা বলছিলেন, আমি প্রতিদিন ২০-২৫ কিলোমিটার হাঁটার লোক। পায়ের সঙ্গে মাথাও হাঁটে। চিকিৎসকদের ধন্যবাদও দিলেন মমতা। ক্লান্তি, আর নতুন লড়াইয়ের অঙ্গীকার এসব মিলিয়েই শুরু হল নতুন অবতারে নতুন যাত্রা, তা ডিভিডেন্ট দেবে কিনা সময় বলবে।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।