#কলকাতা: বহুতল আবাসনের সামনে বড় গাছ পড়ে আবাসনে ঢোকা কিংবা বের হওয়ার রাস্তা পুরোপুরি বন্ধ। আমফানের তাণ্ডবে গাছ ভেঙে পড়ে আবাসনের গেটের সামনে। আবাসিকদের স্বাভাবিক জনজীবন পুরোপুরি স্তব্ধ। সবথেকে চিন্তার বিষয়, এই বহুতল আবাসনে রয়েছেন তিনজন গর্ভবতী মহিলা। যে কোনও সময় তাঁদের প্রসব যন্ত্রণা উঠতে পারে। এছাড়াও আবাসনের রয়েছেন প্রচুর প্রবীণ নাগরিক। হঠাৎ করে যদি কেউ অসুস্থ হয়ে পড়েন তাহলে তাঁদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার মতো উপায় নেই।
আবাসন থেকে প্রবেশ কিংবা প্রস্থানের পথে বিশাল গাছ পড়ে থাকায় ঘোর সমস্যায় আবাসিকরা।।পুরসভাকে গাছ সরানোর আবেদন করলেও এখনও সেই আবেদনে কেউ সাড়া দেয়নি বলে অভিযোগ। স্বভাবতই কাঁকুড়গাছির একটি আবাসনের আবাসিকদের কপালের চিন্তার ভাঁজ ক্রমশ মোটা হচ্ছে। অসহায় আবাসিকরা বাধ্য হয়ে তাই নিজেরাই গাছ কাটার উদ্যোগ নিলেও এত বড় গাছ যে তাঁদের পক্ষে তা কেটে ওঠা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে চিন্তা বাড়ছে বহুতলের বাসিন্দাদের।
এক দিকে হঠাৎ করে গর্ভবতী মহিলাদের প্রসব যন্ত্রণা উঠলে তাঁদেরকে কীভাবে হাসপাতালে নিয়ে যাবেন অথবা আবাসনের অন্য আবাসিক যদি কেউ অসুস্থ হন তাহলে তাঁদেরও কীভাবে হাসপাতালে নিয়ে পরিবারের লোক পৌঁছাবেন তা ভেবে কূলকিনারা পাচ্ছেন না তাঁরা। ওই আবাসনের সম্পাদক সুশীল চৌথালী বলেন, 'আমাদের গেটের সামনে থেকে গাছ সরানোর আবেদন পুরসভাকে করা হলেও এখনও পর্যন্ত কোনও সুরাহা হয়নি। আমরা জীবনের ঝুঁকি নিয়েই যাতায়াতের পথে হেলে থাকা গাছের নীচ দিয়ে হেঁটে পারাপার করছি। কর্মস্থলে যাওয়ার ক্ষেত্রেও সমস্যায় পড়েছি । কেননা যেভাবে গাছ পড়ে আছে সেই পথ দিয়ে গাড়ি চলাচল সম্ভব নয়'।
এই মুহূর্তে রীতিমত অসহায় অবস্থায় দিন কাটছে আবাসিকদের। বিশ্ব যখন করোনার প্রকোপে তটস্থ৷ গোটা দেশে যখন করোনা মোকাবিলায় লকডাউন চলছে ৷ ঠিক তখনই বাংলার বুকে আছড়ে পড়ল ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড় আমফান ৷ যে ঝড় এর আগে কখনও বাংলা দেখেছে কিনা মনে নেই ৷ যে ঝড়ে প্রায় তছনছ কলকাতাসহ, রাজ্যের বহু জেলা ৷ আমফানের পর কেমন আছে বাংলা? কেমন আছে কলকাতা ? কতটা ক্ষয়ক্ষতি? এই প্রশ্নের উত্তর এখন ঐর অজানা নয় কারোরই। এককথায় বেনজির ঝড়ের তাণ্ডবে রীতিমতো বিধ্বস্ত তিলোত্তমাও। কোথাও বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে রাস্তার ওপর পড়ে আছে। আবার কোথাও বা শহরের উত্তর থেকে দক্ষিণে বড় বড় গাছ ঝড়ের তাণ্ডবে রাস্তায় শুয়ে পড়েছে। যে গাছ সরাতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে পুরসভাকে। কোথাও আবার গাছের সঙ্গে দলাপাকানো বিদ্যুতের তার মাকড়সার জালের মত যত্রতত্র ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে।
কোনও কোনও এলাকা আবার অন্ধকারে ডুবে আছে। তবে শহর কলকাতার আবাসনের সামনে গাছ পড়ে অবরুদ্ধ হয়ে থাকার ঘটনা রীতিমতো উদ্বেগে রেখেছে নাগরিকদের। চারিদিকে যেদিকেই চোখ যায় শুধু গাছ আর গাছ। ইতিমধ্যেই বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী পুলিশ এবং পুরসভার তরফে গাছ রাস্তা থেকে সরানোর কাজ শুরু করলেও এমন অনেক জায়গা রয়েছে যে সমস্ত এলাকা এখনও পুরোপুরি অবরুদ্ধ। তবে কাঁকুড়গাছির আবাসনের আবাসিকদের সমস্যা কীভাবে মিটবে ? প্রশ্ন থাকলেও উত্তরের অপেক্ষায় পুরসভার দিকেই তাকিয়ে রয়েছেন নিরুপায় কার্যত আবাসন বন্দি হয়ে থাকা বাসিন্দারা।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Amphan, Cyclone Amphan