কলকাতা : পি জি হাসপাতালের (SSKM Hospital) বাইরে ফুটপাথ দিয়ে হেঁটে গেলে দেখতে পাবেন, এক ঘুগনিবিক্রেতা বেশ হেঁকে হেঁকে ঘুগনি বিক্রি করছেন। বেশ মজার বিষয়। ‘‘দশ টাকায় যত ইচ্ছা ঘুগনি খান। বাচ্চা এবং বয়স্করা ফ্রীতে খান। কোনো টাকা লাগবে না।’’ দেখা গেল প্রচুর মানুষ ওখানে ভিড় করে দাঁড়িয়ে খুশি হয়ে খাচ্ছেন। কেউ দু’ প্লেট, আবার কেউ চার প্লেট খাচ্ছেন। ঘুগনি বিক্রেতার নাম মহাদেব দাস৷
আরও পড়ুন : মাস্ক না পরলেই ধরছে 'নকল' পুলিশ! খাস কলকাতায় চলছে নতুন কায়দায় জোচ্চুরি
এত কম টাকায় কেন খাওয়াচ্ছেন? সেই বিষয়ে জানতে চাইলে মহাদেব বলেন--হাসপাতালে মানুষ চিকিৎসা করাতে এসে পয়সার অভাবে অভুক্ত থাকেন। তাই তাঁদের পরিষেবা দিতে গিয়েই এই ব্যবস্থা করেছেন মহাদেব। এখন ওনার চৌষট্টি বছর বয়স। উনি বলেন, আজ থেকে চল্লিশ বছর আগে পিজি হাসপাতালে একই ভাবে ঘুগনি বিক্রি করতেন। আগে হাসপাতাল চত্বরের ভিতরে ঘুগনি বিক্রি করতেন। পরে হাসপাতাল চত্বরে ঢুকতে দেয়নি প্রশাসন।
তিনি জানালেন, পঁচিশ পয়সা প্লেট ঘুগনি বিক্রি করা শুরু করেছিলেন ওখানে। তখনও ‘পেট ফুরণ’ ছিল।এখন দশ টাকা দাম হয়েছে। এখনও ‘পেট ফুরণ’ ব্যবস্থা রয়েছে।
আরও পড়ুন : বছরে ৩ কোটি টাকার প্রতারণা! পিঙ্ক ফ্রড কল সেন্টারের ৬ মহিলা গ্রেফতার
এই ভাবে খাওয়াচ্ছেন কী ভাবে? মহাদেব জানান, ‘‘সামান্য লাভ হয়। তাতে সংসার চলে যায়। আমিও এক সময় এখানে চিকিৎসা করাতে এসে দেখেছিলাম, এখানে এসে খাওয়ার জন্য মানুষ কত কষ্টে থাকে।তার মধ্যে খাওয়ার কষ্ট।তার পর থেকেই শুরু করেছিলাম ঘুগনি ব্যবসা।’’ মূলত হাসপাতালে যাঁরা রোগীর আত্মীয়পরিজন রয়েছেন, তাঁরা সাগ্রহে ঘুগনি খাচ্ছেন। শুধু তাঁরাই নন৷ বেশ কিছু শিশু খিদের জ্বালায় ওখানে এসে বিনামূল্যেও খাচ্ছেন। যাঁরা খাচ্ছেন, তাঁদের মধ্যে বাগনান থেকে আসা রেজাউলের বক্তব্য, ‘‘সকালবেলা মাত্র দশ টাকায় পেট ভরে খাবার আর কোথাও পাওয়া যায় না।এই খেয়ে ডাক্তার দেখিয়ে দুপুরে বাড়ি গিয়ে ভাত খাই।’’
আরও পড়ুন : বিএসএফ-এর ক্ষমতাবৃদ্ধি, রাজ্য আইন আনলে তার ভবিষ্যৎ কী
শুধু রেজাউল নয়।একই বক্তব্য ওখানে দাঁড়িয়ে থাকা প্রত্যেকের। মহাদেব দাসের প্রচেষ্টাকে সাধুবাদ জানান তাঁরা।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: SSKM Hospital