#নয়াদিল্লি: রাজ্য সরকার ও তৃণমূলের যাবতীয় আর্জি খারিজ করে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ বহাল রাখল সু্প্রিম কোর্ট ৷ উল্টে সিবিআইয়ের প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্ট জমা দেওয়ার সময় সীমা আরও বাড়িয়ে দিল শীর্ষ আদালত ৷ একইসঙ্গে রাজ্যকে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে মামলা প্রত্যাহারের নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট ৷
কলকাতা হাইকোর্ট শুক্রবার নারদ মামলার রায়ে প্রাথমিকের তদন্তের দায়িত্ব তুলে দেয় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার হাতে ৷ তদন্ত রিপোর্ট জমা দেওয়ার জন্য কলকাতা হাইকোর্টের দেওয়া ৭২ ঘণ্টা সময়সীমা বাড়িয়ে এক মাস করে দিল শীর্ষ আদালত ৷ ৩০ দিনের মধ্যে প্রাথমিক অনুসন্ধান শেষ করে রিপোর্ট জমা দিতে হবে সিবিআইকে ৷
নারদ মামলায় তদন্তের ভার থাকছে সিবিআইয়ের হাতেই। রাজ্য সরকার ও তৃণমূল নেতাদের আবেদন খারিজ করে জানাল সুপ্রিম কোর্ট। সিবিআই তদন্তে স্থগিতাদেশ চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেছিলেন রাজ্য সরকার ও বেশ কয়েকজন তৃণমূল নেতা। মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি জিএস খেহরের বেঞ্চে এই আবেদনের শুনানিতে বারবারই অস্বস্তিতে পড়তে হল মামলাকারীদের।
বিচারপতি - প্রাথমিক তদন্তই এখনো ঠিকমতো শুরু হয়নি। এখনই তদন্ত বন্ধ করার আবেদন কেন?
মামলাকারীর আইনজীবী- সিবিআইকে রাজনৈতিকভাবে কাজে লাগানোর প্রমাণ আগেও মিলেছে। এই মামলাতেও সেই আশঙ্কা থাকছে
বিচারপতি - সেটা প্রাথমিক তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত সেটা কিভাবে বলা সম্ভব? আপনি কি আগে থেকে সিদ্ধান্তে পৌঁছে গিয়েছেন?
মামলাকারীর আইনজীবী- সিবিআই ডিরেক্টরই মেনে নিয়েছেন এই সংস্থা খাঁচাবন্দী তোতাপাখি। বর্তমান পরিস্থিতিতে এই মামলাকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করতে পারে এই সংস্থা। অন্তত অন্য কোনও নিরপেক্ষ সংস্থাকে দিয়ে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হোক। যাতে দু-দিক বজায় থাকে।
শুনানির শুরুতেই সুপ্রিম কোর্টের প্রশ্ন, ‘সরকার কিভাবে হাইকোর্টের রায় নিয়ে পক্ষপাত্বিতের অভিযোগ তোলে? এর জন্য সরকারকে নিঃশর্তভাবে ক্ষমা চাইতে হবে ৷’ একইসঙ্গে মামলা প্রত্যাহারের নির্দেশ দেয় শীর্ষ আদালত ৷
বিচারপতি - সবাই পক্ষপাতদুষ্ট! এধরণের মন্তব্য দূর্ভাগ্যজনক। মিঃ সিব্বল, আদালতে রাজনীতি করার চেষ্টা করবেন না। অবিলম্বে রাজ্যকে মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। নিঃস্বার্থ ক্ষমাও চাইতে হবে।
সুপ্রিম কোর্টের আরও নির্দেশ, এক মাসে প্রাথমিক তদন্ত শেষ করে রিপোর্ট দিতে হবে সিবিআইকে। প্রয়োজনে করতে হবে এফআইআর। শীর্ষ আদালতের রায়ে আরও কয়েকটি বিষয় স্পষ্ট করা হয়েছে।
ভবিষ্যতে সাংবিধানিক সংস্থা সম্পর্কে মন্তব্যে সতর্ক থাকতে হবে ৷ তদন্তে সিবিআইকে প্রয়োজনীয় সাহায্য দিতে হবে রাজ্যকে ৷
প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্ট জম পড়ার পর বক্তব্য থাকলে ফের আদালতে যাওয়ার রাস্তা খোলা দিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের রায়।
কলকাতা হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে মামলা সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেন সাংসদ-বিধায়ক সহ সাত জনপ্রতিনিধি। নারদ রায়কে চ্যালেঞ্জ করে মামলা দায়ের করল রাজ্যও। তবে রাজ্য সহ দুই জনপ্রতিনিধির মামলা পদ্ধতিগত ক্রুটির জন্য গ্রহণ করেনি শীর্ষ আদালত।
শুভেন্দু অধিকারী, কাকলী ঘোষদস্তিদারের মতো সাংসদরা ছাড়াও মামলা দাখিল করেন শোভন চট্টোপাধ্যায়, ইকবাল আহমেদ, মদন মিত্ররা। এদের বেশ কয়েকজনকে ভিডিও ফুটেজে টাকা নিতে দেখা গিয়েছে।
সোমবার সকাল থেকেই সুপ্রিম কোর্টে ছিল টানটান উত্তেজনা। একের পর এক মামলা দায়েরের পর পালটা কৌশল হিসাবে আবেদনকারীদের ক্যাভিয়েট। মঙ্গলবার নারদা মামলায় শুনানি পর্ব শুরু হতেই স্পষ্ট হয়ে গেল নারদতদন্তের ভবিষ্যত।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: CBI, Narada Sting Investigation, Narada Sting Operation, Narada Verdict, Supreme Court