#কলকাতা: বউবাজারে মেট্রোর ঘটনার পর কালীঘাট স্কাইওয়াক নিয়ে সতর্ক কলকাতা পুরসভা। দুর্গাপিতুরি লেনের মতো এখানেও রয়েছে শতাব্দী প্রাচীন পুরনো বাড়ি। রয়েছে ইংরেজ আমলের ব্রিক স্যুয়ারেজ বা ইঁটের তৈরি নিকাশি নালা। স্কাইওয়াকের ভিত্তিপ্রস্তর তৈরি করতে পাইলিং এর কাজে এখন সর্তকতা অবলম্বন করেই চলতে চাইছে নির্মাণকারীসংস্থাও। অন্যদিকে কলকাতা পুরসভা সতর্কতার সঙ্গে নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ করতে উদ্যোগী।
সোমবার বিকেলে কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম, পুরসভার কমিশনার বিনোদ কুমার, রাসবিহারী এলাকার বিধায়ক দেবাশিস কুমার সহ কলকাতা পুরসভার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের আধিকারিকরা এবং স্থানীয় কাউন্সিলর প্রবীর চক্রবর্তী উপস্থিত ছিলেন। সেখানেই আলোচনা হয় একদিকে সতর্কতা। অন্যদিকে নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ করতে কি ধরনের রূপরেখা তৈরি করা যায়।
আরও পড়ুন: ১০০ দিনের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত 'এই' শ্রমিকরা এ বারে কী কাজ পাবেন? জানুন আপনিও...
২০১৮ সালে দক্ষিণেশ্বর স্কাইওয়াক উদ্বোধন করতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কালীঘাটের স্কাইওয়াক করার পরিকল্পনার কথা জানান। তারপর সয়েল টেস্ট থেকে শুরু করে যাবতীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর ২০১৯ সালে কাজ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও হকার পুনর্বাসন নিয়ে বেশ কিছুটা দেরি হয়ে যায় স্কাইওয়াকের কাজ শুরু করতে। প্রাথমিকভাবে ৮০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে এই স্কাইওয়াক তৈরিতে। ৫০০ মিটার লম্বা এই স্কাইওয়াক তৈরি হবে চওড়া হবে ১০.৫ মিটার এবং উচ্চতা ৬ মিটার। এই স্কাইওয়াকের থাকবে চারটি এসকেলেটার এবং দুটি এলিভেটর। মোট ৬৮০টি স্টল নিচে থাকলেও স্কাই-ওয়াকে হকারদের কতজন জায়গা দেওয়া যাবে সে বিষয়ে নিশ্চিত নন কলকাতা পুরসভার আধিকারিকরা।
আরও পড়ুন: কাজ হচ্ছে রেলের, এক ধাক্কায় বাড়ল বাসের ভাড়া! উত্তরবঙ্গগামী বাসের ভাড়া কত হল জানেন?
শেষ পর্যন্ত হকার পুনর্বাসন নিয়ে মধ্যস্থতার পর কাজ শুরু হলেও ২০২৩- এর শুরুর দিকেই স্কাইওয়াক কাজ শেষ করা যাবে বলে দেবাশিষ কুমার জানিয়েছিলেন। আজ বৈঠকের পর মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানালেন, যে কাজ শেষ হতে অন্তত আগামী বছরের মাঝামাঝি হতে পারে। কাজ যাতে নির্দিষ্ট সময়ে শেষ হয় সেই জন্য এখন থেকে কালীঘাটের স্কাইওয়াকের কাজে নজরদারি চালাবে পুরসভা। সময়মতো কাজ শেষ করতেই এই তৎপরতা। ১৫ দিন অন্তর কাজের অগ্রগতি নিয়ে পুরকমিশনার বিনোদ কুমার রিপোর্ট দেবেন মেয়র ফিরহাদ হাকিমকে। নির্ধারিত সময়ের কয়েক মাস পর শেষ হতে পারে কালীঘাট স্কাইওয়াকের কাজ। বছরের শুরুতেই নয় কালীঘাট স্কাইওয়াক এর কাজ শেষ হতে আগামী বছরের মাঝামাঝি হয়ে যেতে পারে।কালীঘাট স্কাইওয়াকের কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য জরুরী বৈঠক করলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। ২০২৩-এর শুরুতে এই কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও ধীর গতিতে কাজ চলায় ২০২৩-এর মাঝামাঝি কাজ শেষ হতে পারে বলে জানালেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। দ্রুত কাজ শেষ করতে ১৫ দিন অন্তর অভ্যন্তরীণ বৈঠক করার পরামর্শ মেয়রের।
মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, এই প্রকল্পের অকুস্থলেই রয়েছে পুরনো ইঁটের তৈরি নিকাশি নালা। এছাড়াও পুরসভার ভূগর্ভস্থ অন্যান্য পানীয় জলের পাইপ লাইন সহ বেশ কিছু পরিকাঠামো রয়েছে। এসমস্ত বাঁচিয়ে কাজ করতে হচ্ছে তাই কাজে দেরি না হয় সেই জন্যই এই ১৫ দিন পর পর জরুরি বৈঠকের সিদ্ধান্ত।
পুরসভা সূত্রে খবর, একদিকে পুরনো নিকাশি নালার সঙ্গে পুরনো বাড়ি ও চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে কলকাতা পুরসভার ইঞ্জিনিয়ারদের। ঠিক বউবাজারে মেট্রোর কাজে যেভাবে কম্পনের কারণে ফাটল তৈরি হয়েছে পুরনো বাড়িতে ঠিক সেভাবেই কালীঘাটে পুনরাবৃত্তি যাতে না হয় সেদিকে সতর্ক কলকাতা পুরসভা। কারণ দুটি পাইলিংয়ের তৈরি হয়েছে এই স্কাইওয়াকের জন্য। একটি শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী রোড সংলগ্ন এলাকায় অন্যটি কালীঘাট থানার সংলগ্ন এলাকায়। চিন্তার কারন এই এসপি মুখার্জি রোড সংলগ্ন পাইলিং পয়েন্টে। এখানে একদিকে ইংরেজ আমলের নিকাশি নালার অন্যদিকে শতবর্ষ প্রাচীন বিভিন্ন করি বর্গা চুন-সুরকির ইটের গাঁথুনির বাড়ি। পাইলিং মেশিনের কম্পন যাতে এই বাড়িগুলি এবং নিকাশি নালার ক্ষতি না হয় সেটাই এখন চ্যালেঞ্জ কলকাতা পুরসভা এবং নির্মাণকারী সংস্থার। আর সেটা সুনিশ্চিত করতেই কলকাতা পুরসভার তরফে জরুরি বৈঠক করে দুই মেয়র পরিষদকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
BISWAJIT SAHA
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: KMC