#কলকাতা: হঠাৎ হারিয়ে গেল ঠিকানা। বাড়ি-ঘর বলে আর কিছু নেই। থাকতে হচ্ছে হোটেলে। বউবাজারের অনেকেই যা মেনে নিতে পারছেন না। মানসিকভাবে ভেঙে পড়ছেন। তাঁদের জন্য এবার ট্রমা কাউন্সেলিং শুরু করল কেএমআরসিএল।
ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর কাজের জেরে বিপর্যয়। হঠাৎ ভিটে ছাড়া দুর্গাপাতুরি লেন, স্যাকরাপাড়া লেনের বাসিন্দাদের। ঠিকানা এখন কোনও না কোনও হোটেল। যেখানে মানিয়ে নিতে অনেকেই সমস্যায় পড়ছেন। বউবাজারের এই সব বাসিন্দাদের জন্য ট্রমা কাউন্সেলিং শুরু করল কেএমআরসিএল। বুধবার হোটেলে গিয়ে একাধিক পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন চার মনোবিদ।
মনোবিদ সুদীপা বসুর কথায়, এরকম অ্যাংসাইটি হওয়াই স্বাভাবিক। বোঝানোর চেষ্টা করেছি, আপনাদের তো বাড়ি ভেঙে পড়েনি। বলেছি, মন খুলে কথা বলুন। একটি সময় লাগবে। ইনডিভিজুয়াল সেশন করাব৷
জয়সওয়াল পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন মনোবিদরা। ফাটল দেখা দেওয়ায় বাড়ি ছাড়তে হয়েছে ১৪ নম্বর স্যাকরাপাড়া লেনের ষাট ছুঁইছুঁই দম্পতি, হরিদ্বারপ্রসাদ ও বিমলাদেবী জয়সওয়ালকে। তাঁদের ৩২ বছরের ছেলে আশিস, ডাউন সিনড্রোমে আক্রান্ত। তাঁর শুধু একটাই কথা, এটা তো বাড়ি নয়, তা হলে কেন এখানে থাকতে হচ্ছে? কবে বাড়ি যাব?
বউবাজারের ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির বাসিন্দা বিমলাদেবী জয়সওয়ালর কথায়, অন্য রকম পরিবেশে মানিয়ে নিতে পারছে না। শুধু জানতে চাইছে কবে বাড়ি যাব
১৫ নম্বর স্যাকরাপাড়া লেনে থাকত আরেক জয়সওয়াল পরিবার। কেশরপ্রসাদ ও বিমলা, এই দম্পতিকেও থাকতে হচ্ছে হোটেলে। কেশরপ্রসাদ কিডনির সমস্যায় ভুগছেন। প্রতি সপ্তাহে ডায়ালিসিস করাতে হয়। স্যাকরাপাড়ায় বাড়ির তলাতেই ছিল তাঁর দোকান। সেই ব্যবসাও এখন লাটে। চিন্তায় রাতের ঘুম উড়েছে।
কয়েক দিন আগেই বউবাজারের স্যাকরাপাড়া লেনের বাসিন্দা ৮৭ বছরের অঞ্জলি মল্লিকের মৃত্যু হয়। পরিবারের অভিযোগ, ভিটেছাড়া হওয়ার শোক সহ্য করতে না পেরেই মৃত্যু। বাড়ি ছেড়ে হোটেলের পরিবেশ অনেকেই মানিয়ে নিতে পারছেন না। ভেঙে পড়ছেন মানসিকভাবে। তাঁদের জন্য ট্রমা কাউন্সেলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় কেএমআরসিএল। যা শুরু হল বুধবার।