#কলকাতা: নবদিগন্তের ২১৫ বাস স্ট্যান্ড। পিচ রাস্তায় গরমের প্রভাব প্রকট। চারদিকে দাঁড়িয়ে আছে একাধিক বাস। খানিকটা জনমানব শূন্য হয়ে আছে এলাকা। গলির মধ্যে একটা গুমটি ঘর। সেখানেই আটকে আছেন বাস চালকরা। যাদের কেউ বনগাঁ, কেউ আবার ওড়িশা থেকে কাজের জন্য কলকাতায় এসে থাকেন। লকডাউনের জেরে বাড়ি ফিরতে পারছেন না। তাদের জন্যেই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন কবিতা পাসোয়ান।
কবিতা পাসোয়ান, একটা ছোট চায়ের দোকান চালান। স্বামী-স্ত্রী-র সংসারে টাকা পয়সা বাড়ন্ত। যদিও লক্ষীর ঝাঁপি ভেঙে তিনিই এখন উদার হস্ত। আটকে পড়া চালক থেকে সারমেয় সবাইকে দিনে দু'বেলা রেঁধে বেড়ে খাওয়াচ্ছেন তিনি। নবদিগন্ত ২১৫ বাস স্ট্যান্ড এলাকায় কম করে ৩৫টি সারমেয় রয়েছে।
সাধারণ সময়ে বিভিন্ন তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার অফিস খোলা থাকে এখানে। বাস চলাচল করে। ফলে জমজমাট থাকে গোটা এলাকা। ফলে খাবারের অভাব হয়না চারপেয়েদের। কিন্তু লকডাউনের বাজারে মানুষ যেখানে নিজেদের খাবার জোটাতে লড়াই করছে সেখানে আর ওদের কথা কে ভাববে। মুশকিল আসান কবিতাদেবী। সারমেয়দের খাবারের জোগান দিচ্ছেন তিনি। কিন্তু কিভাবে? কবিতাদেবীর কথায়, "আমরা দুটি মানুষ। আমাদের অল্প খাবারেও পেট ভরে যাবে। যদিও সময় করে আমি বা আমার স্বামী বিভিন্ন জায়গা থেকে ত্রাণের চাল, ডাল লাইনে দাঁড়িয়ে জোগাড় করছি। সেই চাল ডাল দিয়েই আমি রান্না করছি।"
এভাবেই লাগাতার ২০ দিন ধরে সারমেয়দের খাবারের জোগান দিচ্ছেন কবিতা পাসোয়ান। তবে শুধু সারমেয়দের নয়। তিনি খাবার জোগাচ্ছেন যে সমস্ত বাস কর্মীরা আটকে আছেন তাদের জন্যেও। সকালে বাজারে গিয়ে কিনে আনেন সবজি, ডিম। নিজের জমানো টাকা দিয়েই চলে কেনাকাটা। তারপর খাবার বানিয়ে এই অসহায় মানুষগুলোর মুখে তুলে দিচ্ছেন। হাসিমুখে কবিতাদেবীর জবাব, "এটাই তো সময়। এখন যদি না মানুষের পাশে দাঁড়াই, তাহলে আর কবে পাশে থাকব।" তার এই কাজে সব সময়ে পাশে পাচ্ছেন তার স্বামীকে। দু'জনে মিলে এখন ত্রাতা মানুষ ও সারমেয়দের।
Abir Ghoshal
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Coronavirus, Coronavirus in India