হোম /খবর /কলকাতা /
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্য়ায়ের এজলাসে দাঁড়িয়ে ঝরঝর করে কেঁদে ফেললেন মহিলা, হঠাৎ কী হল?

Kolkata high court || Abhijit Ganguly: বিচারপতি গঙ্গোপাধ্য়ায়ের এজলাসে দাঁড়িয়ে ঝরঝর করে কেঁদে ফেললেন মহিলা, কেন? কী এমন ঘটল?

ওই প্রশ্নটুকুই শোনার অপেক্ষা। প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই ঝরঝর করে কেঁদে ফেলেন ওই মহিলা। তাঁর মেয়ের চোখেও তখন জল।

  • Share this:

কলকাতা: শুক্রবার এক অভূতপূর্ব ঘটনার সাক্ষী থাকল কলকাতা হাইকোর্ট। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায়ের ভরা এজলাসে দাঁড়িয়ে দু'হাত জোড় করে ঝরঝর করে কেঁদে ফেললেন এক মহিলা। অন্য মামলার শুনানি চলাকালীনই তাঁর আর্জি শুনলেন বিচারপতি।

পরনে সাধারণ সুতির কাপড়। পাশে দাঁড়িয়ে মেয়েও। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায়ের এজলাসে তখন প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতির একটি মামলার শুনানি চলছে। এদিকে মহিলা কিন্তু ছলছল চোখে মেয়েকে নিয়ে এজলাসের কোণটাতেই দাঁড়িয়ে রয়েছেন। বেশ খানিকক্ষণ শুনানি চলার পরে অবশেষে, তাঁকে প্রশ্নটা করেই ফেললেন বিচারপতি। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বললেন, "কেন এ ভাবে দাঁড়িয়ে রয়েছেন?"

আরও পড়ুন: ইংরেজি পরীক্ষার 'প্রশ্নপত্র ফাঁস'! এ কী অভিযোগ করলেন সুকান্ত মজুমদার..

ওই প্রশ্নটুকুই শোনার অপেক্ষা। প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই ঝরঝর করে কেঁদে ফেলেন ওই মহিলা। তাঁর মেয়ের চোখেও তখন জল। বিচারপতির দিকে তাকিয়ে মহিলা বলতে শুরু করেন, "স্যার,আপনার মতো ভগবান পাশে ছিল বলে আমি রেহাই পেলাম। যদি আপনার পা ছুঁয়ে একবার প্রণাম করতে পারতাম ধন্য মনে করতাম নিজেদের।"

বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় এজলাসে এহেন পরিস্থিতি সামলেছেন আগেও। এদিন বললেন, "এ সব কিছু না! ও ভাবে বলবেন না! সব ঠিক হয়ে যাবে।" অর্থের অভাবে প্রতিবন্ধী শিশুর চিকিৎসা করানো যাচ্ছে না! সেই বিষয়েই বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন ওই মহিলা। জানান, হাইকোর্টে আসায় নিম্ন আদালতের বিচারক তাঁর উপরে নাকি 'অসন্তুষ্ট'ও হয়েছেন। সব শুনে বিষয়টি বিবেচনা করে দেখার আশ্বাস দেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।

শুক্রবার প্রাথমিকের একটি মামলার শুনানি চলাকালীন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে মিতালি দাস এবং তাঁর মেয়ে হাত জড়ো করে দাঁড়িয়েছিলেন। নজর পড়তেই ওই মহিলার কাছে বিচারপতি জানতে চান, কেন এ ভাবে দাঁড়িয়ে রয়েছেন তিনি?

আরও পড়ুন: পার্থ-অর্পিতার পরে এবার গোপাল-হৈমন্তী! বেহালা-ই কি তবে নিয়োগ দুর্নীতির মন্দির?

মিতালি: আপনি আমার ভগবান! আপনার জন্য বাচ্চাটার চিকিৎসা করাতে পারছি।

বিচারপতি: কী বিষয় আমি কী করলাম? মনে পড়ছে না!

মিতালি: আমার নামে ১৮টি মামলা রয়েছে। আমার স্বামী ওই মামলাগুলি করেছেন। আপনি বীরভূম জেলা মুখ্য বিচারককে ফোন করে আমার বিষয়টি দেখতে বলেছিলেন। তাতে অনেকটা উপকৃত হয়েছি।

বিচারপতি: ও আচ্ছা! কিন্তু এখন আবার কেন এলেন? আপনার সমস্যা তো মিটে গিয়েছে।

মিতালি: বীরভূমের জেলা বিচারক ১০ হাজার টাকা থেকে ২ হাজার কমিয়ে দিয়েছে। এর ফলে বাচ্চার চিকিৎসায় সমস্যা হচ্ছে।

বিচারপতি: মানে? ১০ হাজারের বদলে ৮ হাজার টাকা দেওয়া হচ্ছে? বিচারক নির্দেশে কোথাও লিখেছেন। আমাকে সব নির্দেশের প্রতিলিপি দিন।

মিতালি: আমার স্বামী বিবাহবিচ্ছেদের মামলা করেছেন। প্রতিবন্ধী বাচ্চা নিয়ে কোথায় যাব? তার উপর এতগুলি মামলা করেছে? আর পারছি না!বিচারপতি: কেন টাকা কমানো হয়েছে এ নিয়ে কিছু জানিয়েছে নিম্ন আদালত?

মিতালি: না! তবে হাইকোর্টে আসায় বিচারক 'অসন্তোষ' প্রকাশ করেছেন।

বিচারপতি: ঠিক আছে। আপনি এখন চলে যান। আমি আপনার কাগজ খতিয়ে দেখব।

বিচারপতির আশ্বাস নিয়ে এজলাস ছাড়েন মা -মেয়ে।

Published by:Satabdi Adhikary
First published: