#কলকাতা: তৃণমূল একটা আঞ্চলিক দল। পরিবারতান্ত্রিক পার্টি। ওখানে কারও রাজনৈতিক ভবিষ্যত পাকাপোক্ত হতে পারে না। কলকাতায় দলীয় বৈঠকে দলত্যাগ আটকাতে আপাতত এটাই 'নাড্ডা দাওয়াই'।
২১-এ রাজ্যে সরকার গড়তে ব্যর্থ হবার পর থেকেই রাজ্যে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার হিড়িক বেড়েছে। এই তালিকায় সর্বশেষ সংযোযন ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং। মমতা বন্দোপাধ্যায় থেকে অভিষেক - যখন নিয়ম করে বলেই চলেছেন, দরজা খুললে বিজেপি দলটাই নাকি এ রাজ্যে সাইনবোর্ডে পরিণত হবে, তখন দু' দিনের রাজ্য সফরে এসে দলের নেতা, কর্মীদের এ বিষয়ে দলের সর্বভারতীয় সভাপতি কী দাওয়াই দেন, সে দিকেই তাকিয়ে ছিল রাজনৈতিক মহল।
আরও পড়ুন: নাড্ডার মুখেও অমিত শাহের সুর, বঙ্গ বিজেপিকে কঠিন 'হোমটাস্ক' সর্বভারতীয় সভাপতিরএই আবহে, আজ কলকাতায় দলের রাজ্য কার্যকারিনী বৈঠকে নাড্ডা বলেন, 'দেশের এ মাথা থেকে ও মাথায় দেখুন। সব আঞ্চলিক দল। আর, আঞ্চলিক দল মানে পরিবাতান্ত্রিক পার্টি। কাশ্মীরে পিডিপি, উত্তর প্রদেশে মুলায়ম- অখিলেশ, মহারাষ্ট্রে শারদ পাওয়ার ও তাঁর মেয়ে, বিহারে লালু উপরে তো তেজস্বী নীচে। আর এখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়- অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল, সব এক। এসব দলে পরিবারের লোকেরাই শেষ কথা। আপনার যোগ্যতা বিচারের কোনও জায়গা নেই৷ কিন্তু, বিজেপি কোনও পরিবারতান্ত্রিক দল নয়। তাই আমি জগৎপ্রকাশ নাড্ডা পৃথিবীর সর্ববৃহৎ এই রাজনৈতিক দলের সর্বভারতীয় সভাপতি। এটা অন্য কোনও দলে সম্ভব নয়। তাই আপনি কোথা থেকে কোথায় যাচ্ছেন সেটা ভেবে দেখুন। বিজেপি একটা জাতীয় দল। আমরা তিন থেকে তিনশো পার করেছি।'
দলের রাজ্য নেতাদের উদ্বুদ্ধ করতে জে পি নাড্ডা নিজের ছাত্র জীবনের কথাও উল্লেখ করেন, 'আমি যখন ছাত্র। সবে রাজনীতি শুরু করেছি। তখন এক কংগ্রেস নেতা আমাকে বলেছিল, কোন পার্টি করো? বিজেপি? এখন সেই নেতা কোথায় আছেন আর তাঁর দলই বা কোথায়? আমি কিন্তু, বিজেপি-র মতো একটা সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক দলের সভাপতি।'
আরও পড়ুন: মুকুল রায় বিজেপি-তেই আছেন, আগের সিদ্ধান্তেই অনড় থাকলেন বিধানসভার অধ্যক্ষপর্যবেক্ষকদের মতে, রাজ্যে তৃণমূলকে আঞ্চলিক ও পরিবারতান্ত্রিক দল বলে কটাক্ষ করে সেই দলের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করে নাড্ডা আসলে দলের ভাঙনে আগল দিতে চেয়েছেন। বোঝাতে চেয়েছেন তার মতো ধৈর্য ধরে বিজেপিতে পড়ে থাকতে পারলে আখেরে লাভ নেতাদের। কিন্তু, দল বদল আটকাতে তাঁর এই টোটকায় আদৌ কোন লাভ হবে কি! কারণ, শেষ বেলায় একজন বিধায়ক বা সাংসদকে মানুষের ভোটে জিততে হয়। তাঁর এলাকার রাজনৈতিক জমি যদি বদলে যায়, সেক্ষেত্রে, ওই আসনে ধরে রাখতে হলে তাঁর রাজনৈতিক অবস্থানও বদলে যেতে বাধ্য। সেখানে জাতীয় দল বা আঞ্চলিক দলের তকমা তাঁর কাছে গৌণ।
মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় বিধানসভার ভোটে হেরে, বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর বিজেপি থেকে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার সম্ভাব্য তালিকা নিয়ে চর্চায় খামতি নেই।
যদিও, প্রকাশ্যে রাজ্য বিজেপি দল বদলকে গুরুত্ব দিতে নারাজ। সুকান্ত থেকে শুভেন্দুরা বলে চলেছেন, দ্ল থেকে দু' এক জন নেতা মন্ত্রী গেলে দলের সংগঠনে কোনও ক্ষতি হয় না। নেতারা গেলও, দলের কর্মীরা তাঁদের সঙ্গেই আছেন। কিন্তু, আজ নাড্ডার বার্তায় বোঝা গেল, ২- এর লোকসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যে দলের ভাঙন নিয়ে কতটা আশঙ্কিত কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।