SHANKU SANTRA
#কলকাতা: কলকাতার সব গুলো হাসপাতালে সারাদিনে জেলা থেকে প্রচুর অ্যাম্বুলেন্স রোগী নিয়ে আসে। তেমনি রায়না থেকে একটি অ্যাম্বুলেন্স রোগী এনেছিল এসএসকেএম হাসপাতালে। অ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, অ্যাম্বুলেন্সটি রায়না অঞ্চলের হিজলনা পঞ্চায়েতের ।সেই অ্যাম্বুলেন্সটি ঠিকাতে নিয়ে চালায় খালেকপুরের হীরু শেখ। কলকাতা কিংবা রাজ্যের বিভিন্ন পঞ্চায়েত, ক্লাবের সাংসদ, বিধায়ক বা পদস্থ নেতা নেত্রীদের সামাজিক দানে পাওয়া অ্যাম্বুলেন্স গুলি বাৎসরিক চুক্তিতে, অর্থের বিনিময়ে চালায় দালাল, রুপি ঠিকাদারেরা।
এই অ্যাম্বুলেন্স আজ একজন রোগীকে হাসপাতালে এনেছে। তাতে না আছে অক্সিজেন, না আছে সেরকম কোন মেডিক্যাল ব্যবস্থা। রাজ্য সরকারের এম পরিবহন অ্যাপ ঘেঁটে দেখা গেল, গাড়ির ফিটনেস সার্টিফিকেট, রোড ট্যাক্স, কিছুই চালু নেই। অ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভার রিয়াজ উদ্দিন শেখকে গাড়ির বৈধ কাগজপত্র আছে কি না জিজ্ঞাসা করতেই সে তার ঠিকাদারকে ফোন করে। ফোন বেগতিক বুঝে সেই ঠিকাদার মোবাইল ফোনটি কেটে দেন। গাড়িতে কোনও কাগজ ছিল না। এই ভাবেই চলছে অ্যাম্বুলেন্স!
এই বিষয় নিয়ে সাধারণ মানুষের বক্তব্য, বিমা, ট্যাক্স না থাকলে, যে কোন গাড়ি চালানো একেবারে উচিত নয়। রাস্তায় কোনও দুর্ঘটনা ঘটে গেলে কোনও ক্ষতিপূরণ পাবেন না আরোহীরা। হীরুর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করলে, তার নম্বরটি অন্য নম্বরে ফরওয়ার্ড করা আছে ,বলে জানা যায়। এই ভাবে আইনকে ফাঁকি দিয়ে, দিনের পর দিন অনিয়ম চালিয়ে যাচ্ছে অ্যাম্বুলেন্সের মালিকেরা বা দালালরা।
এই অ্যাম্বুলেন্সটি ডি এম বর্ধমানের নামে রেজিষ্ট্রেশন আছে। সেই অ্যাম্বুলেন্সে অনিয়ম! ভাবতে পারছে না প্রত্যক্ষদর্শীরা। ওই পঞ্চায়েতকে বর্ধমানের জেলা শাসক অ্যাম্বুলেন্সটি দিয়েছিলেন মুমূর্ষু রোগীদের হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়ার জন্য। সেই রোগীদের থেকে নাম মাত্র হিসাবে তেলের খরচ নেওয়ার কথা। কিন্তু পঞ্চায়েত নিজে ওই অ্যাম্বুলেন্স নিজেরা দায়িত্ব নিয়ে না চালিয়ে, হীরু শেখ নামে একজনকে ঠিকা দিয়ে দিয়েছে।প্রশ্ন উঠছে জনগণের জন্য দেওয়া গাড়ি ঠিকাতে দিল কে?
ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট সমস্ত ঘটনা শোনার পর বিষয়টি নিয়ে খোঁজ নেওয়ার, ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন। শুধু এই অ্যাম্বুলেন্স নয়। সারা রাজ্যে একই ঘটনা ঘটছে। অটো দৌরত্ম নিয়ে প্রশাসনের জীবন হিমশিম খেয়ে যাওয়ার জোগাড়। তার ওপর অ্যাম্বুলেন্স। এক জন পুলিশ আধিকারিকের কথায়, ‘‘বেশির ভাগ অ্যাম্বুলেন্সই নেতাদের । তাতে ওই নেতার নাম লেখা থাকে। ধরলেই ফোন চলে আসে। ভাই চাকরি করতে এসেছি। পাঙ্গা নিয়ে কোনও লাভ নেই। আরও বড় ব্যাপার হল, গাড়িতে রোগী থাকার জন্য কোনও পুলিশকর্মী দাঁড় করাতে চায় না। কারণ মানুষের জীবন নিয়ে কথা।' সেই সুযোগে এরা কি করছে কিছু জানাই যায় না।