#কলকাতা: উৎসবের মরশুমেই জোর ধাক্কা রাজ্যের গেরুয়া শিবিরে ৷ ২১- এর আগে পাহাড়ের রাজনীতিতে জোর চমক৷ তিন বছর অজ্ঞাতবাসে থাকার পর বুধবার প্রকাশ্যে এসেই চমক ‘ফেরার’ বিমল গুরুঙের ৷ সাংবাদিক সম্মেলন করে সরাসরি এনডিএ ছাড়ার ঘোষণা গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা ‘সুপ্রিমো’র ৷
পাহাড়ের নেতা বিমল গুরুংয়ের সাংবাদিক সম্মেলনে এদিন চমকে দেওয়া ঘোষণা ৷ তিনি বলেন,‘প্রতিশ্রুতি পূরণ করেননি মোদি-শাহ ৷ গোর্খাল্যান্ডের জন্য কিছু করেনি বিজেপি ৷এনডিএ ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিলাম ৷’ এখানেই শেষ নয়, আরও এক পা এগিয়ে গুরুং এও বলেন, ‘২০২১-এ তৃণমূলের সঙ্গে জোট বেঁধে লড়ব ৷ মমতাকেই ফের মুখ্যমন্ত্রী দেখতে চাই ৷’
একইসঙ্গে নিজের দাবিও স্পষ্ট করেছেন গুরুং, ‘পাহাড়ের স্থায়ী সমাধান গোর্খাল্যান্ড ৷গোর্খাল্যান্ডের দাবি থেকে সরছি না ৷ আমি দেশদ্রোহী নই, রাজনীতিবিদ ৷’ তৃণমূল সরকারের সঙ্গে দূরত্ব-বিরোধিতা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তাঁর সাফ জবাব, ‘রাজনীতিতে কেউ স্থায়ী শত্রু বা বন্ধু নয়। স্থায়ী সমাধান যে করবে, সেই পার্টিকেই সমর্থন করব। ২০২৪-এ গোর্খাল্যান্ডের দাবি যে মানবে,তাকেই সমর্থন করব ৷’
রাজনৈতিক ময়দান তো নয়, যেন সিরিয়ালের মোড় ঘোরানো এপিসোড ৷ এক ঝটকায় বদলে গেল পাহাড়ের সমীকরণ ৷প্রায় ৩ বছর ধরে পুলিশের খাতায় ফেরারের তালিকায় নাম বিমল গুরুংয়ের ৷ ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসের পর থেকে বিমল গুরুংকে আর দেখা যায়নি ৷ অবশেষে ২০২০ সালের পঞ্চমীর সন্ধ্যায় সল্টলেকের গোর্খা ভবনের সামনে আচমকাই উদয় মোর্চা সভাপতি বিমল গুরুংয়ের ৷ দুপুরেই শোনা গিয়েছিল তার ঘোষণা, সাংবাদিক সম্মেলন করতে চান মোর্চা সুপ্রিমো ৷
‘গোর্খাল্যান্ড’ আন্দোলনের নামে পাহাড়ের পরিস্থিতি অশান্ত হওয়ার পর থেকেই দূরত্ব বেড়েছিল তৃণমূল সরকারের সঙ্গে গুরুংয়ের ৷ ২০১৭ সালের ৮ জুন। দার্জিলিঙে মন্ত্রিসভার বৈঠক ঘিরে উত্তাল হয় পাহাড়। শুরু হয় অনির্দিষ্টকালের বনধ। জিজেএম সভাপতিকে গ্রেফতার করতে পুলিশের অভিযান। সেই অভিযানে গিয়ে মৃত্য়ু হয় পুলিশকর্মী অমিতাভ মালিকের। খুন-রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র - দাঙ্গা- রাষ্ট্রদ্রোহিতা --গুরুংয়ের বিরুদ্ধে
কমবেশি ১৩০টি মামলা ঝুলছে।গুরুং গা ঢাকা দেওয়ার পর থেকেই বিজেপি নেতৃত্বের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ রয়ে গিয়েছিল বলে খবর ৷ অজ্ঞাতবাসের এই সময়ে কখনও দিল্লিতে, কখনও বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডার ছেলের বিয়ের অনুষ্ঠান, প্রকাশ্যে হাতেগোনা এই কয়েকবারই দেখা গিয়েছে বিমল গুরুংকে ৷ অন্যদিকে, লোকসভা ভোটের পর থেকে উত্তরবঙ্গে শক্তি বেড়েছে বিজেপির।২০১৯ সালে গুরুংয়ে বাছাই রাজু বিস্তাই হন বিজেপি প্রার্থী। সেই গুরুংয়েরই বিজেপির হাত ছেড়ে ২১-এর ভোটের আগে শিবির বদলের ঘোষণায় পাহাড়ের রাজনীতিতে বড়সড় ট্যুইস্ট ৷ উল্লেখ্য, বিমল গুরুং ফেরার হওয়ার পরেই গোর্খাল্যান্ড আন্দোলন স্তিমিত হয়ে যায় ৷ তৃণমূল সরকারের সঙ্গে বৈরিতা ত্যাগ করায় গোর্খাল্যান্ড টেরিটরিয়াল অ্যাডমনিস্ট্রেশন (জিটিএ)-র প্রধানের দায়িত্ব পান বিনয় তামাং। এমতাবস্থায় তিন বছর পর আচমকা ফেরার গুরুংয়ের আগমনে নতুন করে চমক রাজ্য রাজনীতিতে ৷
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Bimal gurung