#কলকাতা: দক্ষিণ কলকাতার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সেতু ঢাকুরিয়া ব্রিজের স্বাস্থ্য পরীক্ষার কাজ শুরু হল। কে এম ডি এ'র নিয়ন্ত্রণে থাকা ব্রিজ হল শ্রী চৈতন্য সেতু বা ঢাকুরিয়া সেতু। সেই সেতুর ডায়নামিক লোড টেস্ট করা শুরু হল। রিপোর্ট তৈরি হওয়ার পরে বোঝা যাবে এই সেতুর শরীরে কি কি রোগ বাসা বেঁধে আছে। টালা বা মাঝেরহাটের মতোই হল ঢাকুরিয়া ব্রিজ। অনেকগুলি খন্ড পাশাপাশি বসিয়ে মালার মতো গেঁথে রাখা হয়েছে। বয়সের ভারে সেই টান কতটা আলগা হয়েছে তা পরীক্ষার করতে হবে। একই সাথে প্রতিদিন যে পরিমাণ গাড়ি এখন চলাচল করে সেই সব গাড়ির ভার বহন করতে এই সেতু প্রস্তুত কিনা সেটাই দেখা হচ্ছে। তাই ডায়ানামিক লোড টেস্টের কাজ শুরু হল।
এই প্রক্রিয়ায় মোট ৮টি ডাম্পার যা ৩০ টন ওজনের সেগুলিকে ব্রিজের ওপরে মোট ৪ লেন জুড়ে পাশাপাশি কখনও ২০ কিমি গতিবেগে, কখনও ৩০ কিমি গতিবেগে গাড়িগুলিকে দৌড় করানো হচ্ছে। সেতুর একেবারে মাঝের অংশ, অর্থাৎ রেল লাইনের ওপরে থাকা অংশ অবধি ডাম্পারগুলিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সেতুর নিচে একটি জায়গায় স্ক্যানার ও মিটার বসানো হয়েছে। যেখানে এই অবস্থার ওজন বা ভার ধরা পড়ছে। সেতুর ওপরে ডাম্পার রাখা অবস্থায় এবং ডাম্পার না রাখা অবস্থায় ওজন বা ভার মাপা হচ্ছে। তার পরিপ্রেক্ষিতেই বোঝা যাবে সেতুর ভার বহনের ক্ষমতা। যদিও সেতু বিশেষজ্ঞ বিশ্বজিৎ সোম জানাচ্ছেন, "রেল লাইনের ওপরে থাকা অংশ সবচেয়ে বেশি বিপদজনক হতে পারে। এই জায়গায় রক্ষণাবেক্ষণ করা ভীষণ জরুরি। যদিও এখানে কোনও মিটার বা স্ক্যানার বসানো নেই। ফলে আসল জায়গার অবস্থা কি সেটা বোঝা যাবে না।"
যদিও কে এম ডি এ সূত্রে খবর, রেল লাইনের ওপরে থাকা অংশ দেখভালের দায়িত্বে রেল রয়েছে। তারা দেখে জানাবে পরিস্থিতি। বাকি অংশের কাজ করবে কে এম ডি এ। তবে রেল লাইনের ওপরে থাকা অংশ নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন স্থানীয়রা। অনেকেই বলছেন মাঝে মধ্যেই চাঙড় খসে পড়ছে। পিলারে ফাটল দেখা গেছে। বেশ কিছু জায়গায় দেখা গেল লোহার রড বেরিয়ে আছে। ফলে কে করবে? কবে করবে? এই ভাবনায় নতুন করে বিপদ ঘনিয়ে আসবে না তো প্রশ্ন তুলছেন বিশেষজ্ঞরা। দু'বছর আগে সংষ্কার করা হয়েছিল ঢাকুরিয়া সেতু। তখন কে এম ডি এ'র তরফে জানানো হয়েছিল, সেতুর একাধিক জায়গায় ইদুঁর গর্ত করে বসে আছে। তার জেরে বহু জায়গায় ফাটল এসেছে। নির্মাণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেই সময় কিছু রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করা হয়। যদিও সেতু বিশেষজ্ঞ কমিটি মনে করছে সেতুর পুরোপুরি যে চেক আপ দরকার তা হয়ে ওঠেনি। ফলে ভার পরীক্ষা করে সেতুর অবস্থা বুঝতে চাইছে কে এম ডি এ।
ABIR GHOSHAL