#কলকাতা: যথাযথ যাত্রী না হওয়া। ট্রেন পিছু ১.৫ থেকে ৫ জন যাত্রী নিয়ে ছুটেছে মেট্রো। ফলে ট্রেন চালাতে গিয়ে হাঁফিয়ে উঠেছে মেট্রো কর্তৃপক্ষ। তাই ইস্ট ওয়েস্ট মেট্রোর সংখ্যা অবশেষে কমাতে চলেছে মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ। আগামিকাল থেকে কম মেট্রো চলবে ইস্ট-ওয়েস্ট রুটে। যাত্রী বাড়লে বাড়ানো হবে ট্রেনের সংখ্যা। চালানো হবে কম সময়ের ব্যবধানেই।
সোমবার ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোয় যাত্রী হয়েছিল ৮৩ জন। মঙ্গলবার যাত্রী হয়েছিল ৯৯ জন। বুধবার যাত্রী হয়েছিল ২৩৪ জন। বৃহস্পতিবার মহালয়া ও বিশ্বকর্মা পুজোর দিন যাত্রী অনেক কমে যায়৷ শুক্রবার ও শনিবারও আশানুরুপ যাত্রী মেলেনি। এই অবস্থায় সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা অবধি, ১২ ঘন্টা মেট্রো চালিয়ে লাভ হচ্ছে না। তাই এক প্রকার বাধ্য হয়েই কমিয়ে ফেলা হচ্ছে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর সংখ্যা।
মেট্রো সূত্রে খবর, আগামিকাল, সোমবার ২১ তারিখ থেকে সল্টলেক মেট্রো চলবে ৩০ মিনিট অন্তর। এখন চালানো হচ্ছে ২০ মিনিট অন্তর। প্রতি ঘন্টায় এখন মেট্রো চলছে মোট ৬টি। তিনটি মেট্রো চলছে আপে ও তিনটি মেট্রো চলছে ডাউনে। সারাদিনে মেট্রো চলছে ৩৬ জোড়া বা ৭২টি। আগামী ২১ সেপ্টেম্বর থেকে ৩০ মিনিট অন্তর প্রতি ঘন্টায় আপ লাইনে ২টি ও ডাউন লাইনে ২টি মেট্রো চলবে। ফলে ১২ ঘন্টায় মেট্রো চলবে মোট ৪৮টি। আশা করা হচ্ছে, এর ফলে খরচের বহর কমবে কিছুটা। তবে এই ৪৮ মেট্রো চালিয়েও আদৌ লাভ হবে কিনা তা নিয়ে সংশয় আছে।
আনলক অধ্যায়ে গত সোমবার, ১৪ সেপ্টেম্বর থেকে কলকাতায় চালু হয়ে গিয়েছে মেট্রো পরিষেবা। দমদম থেকে কবি সুভাষের পাশাপাশি মেট্রো চলছে সেক্টর ফাইভ থেকে সল্টলেক স্টেডিয়াম অবধিও। যদিও প্রথম তিন দিনে যাত্রী সংখ্যা ৫০০ অতিক্রম করেনি ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোয়। এক সপ্তাহে ১০০০ যাত্রী মেলেনি। ফলে যাত্রী না হওয়ায় মেট্রো চালানো আদৌ লাভজনক কিনা তা নিয়ে উঠছে একাধিক প্রশ্ন। একই সঙ্গে দুর্গা পুজোর আগেই চেষ্টা চলছে ফুলবাগান স্টেশন চালু করার। মেট্রো রেলের জেনারেল ম্যানেজার মনোজ যোশী জানিয়েছেন, কমিশনার অফ রেলওয়ে সেফটির কাছে ফের অনুমতি চাওয়া হয়েছে। যাতে দূর্গা পুজোর আগে ফুলবাগান চালু করা যায়৷ ইস্ট-ওয়েস্টের এই অবস্থা কেন? তা নিয়ে গত কয়েকদিন ধরেই চলছে চর্চা। ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো পথে স্টেশন সংখ্যা মাত্র ছয়। যে যে দুরত্বে আর যে এলাকায় স্টেশন তা ব্যবহারকারীর সংখ্যা অনেক কম। সল্টলেক এলাকার যারা বাসিন্দা তারা মেট্রোর বদলে ব্যবহার করেন নিজেদের গাড়ি। যারা নিজেদের গাড়ি ব্যবহার করেন না, তারা অটো, টোটো, মোটর রিক্সা ব্যবহার করেন। সল্টলেক এলাকায় সেক্টর ফাইভ থেকে মেট্রো রুট ধরে একাধিক রুটের বাস পাওয়া যায়। ফলে বাস মিলছে। যা অনেক ভাড়া কম। ইস্ট ওয়েস্ট মেট্রোর অধিকাংশ যাত্রী তারা আই টি সেক্টরে কর্মরত। এখন আই টি সেক্টর ওর্য়াক ফ্রম হোম চলছে। ফলে যাত্রীদের যাতায়াতের সংখ্যা ভীষণ কম। করুণাময়ী থেকে সেন্ট্রাল পার্ক অবধি দুই স্টেশনের মধ্যে একাধিক সরকারি অফিস আছে। যদিও সেখানে যারা চাকরি করেন তারা শহরতলির। লোকাল ট্রেন চলছে না। ফলে তারা একেবারে বাসেই যাতায়াত করেন।
ফুলবাগান মেট্রো স্টেশন চালু করার অনুমতি দিয়েছিল কমিশনার অফ রেলওয়ে সেফটি। যদিও ১৬ সেপ্টেম্বর মধ্যে চালু না হওয়ায় ফের কমিশনার অফ রেলওয়ে সেফটির অনুমতি নিতে হচ্ছে। ফুলবাগান মেট্রো স্টেশন চালু হলে শিয়ালদহ লোকাল ট্রেনের যাত্রীরা এই মেট্রো ব্যবহার করতে পারবেন।মেট্রো মনে করছে আই টি সেক্টর চালু হোক। ফুলবাগান দূর্গা পুজোর আগে চালু করা হবে। তাতে এই প্রকল্প লাভবান হবে। রেল বোর্ডের প্রাক্তন কর্তা সুভাষ রঞ্জন ঠাকুর জানিয়েছেন, "এখন যতটা পথে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো চলছে তার দু'দিকে কোথাও নেই টার্মিনাল নেই। ফলে যাত্রীরা যাবেন কোথায়। তাই কেউ এই ৪ কিমি পথ ব্যবহার করছেন না।"
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Metro Rail