#কলকাতা: ঢাক কাঁসর ছাড়া বাঙালির দুর্গাপুজো (Durga Puja 2021) হয় না। মহালয়া থেকে কলকাতার দূরের জেলাগুলির ঢাকিরা ঢাক বাজাতে শহরে পা রাখেন। তার মধ্যে এমনও ঢাকি রয়েছেন, যাঁরা বাবার সঙ্গে ছোট্ট বেলায় কাঁসর হাতে আসতেন। এখন তিনিও সম্পূর্ণরূপে পেশায় ঢাকি। আবার তাঁর সঙ্গেও সঙ্গী হিসেবে আসছে কাঁসর হাতে ছোট্ট একটি ছেলে। এটা যেন চক্রাকারে চলছে যুগের পর যুগ। ৬০ বছরের ঢাকি মুরারী হালদার। ৪৫ বছর ধরে কলকাতা শহরে রিজেন্ট পার্কের শান্তি পল্লীর পুজো মণ্ডপে আসছেন তিনি।
ছোটবেলায় বাবা শ্রীরাম হালদারের ঢাকের তালে তিনি কাঁসর বাজাতেন। বাবা মারা গিয়েছেন বেশ কয়েক বছর হয়ে গিয়েছে। এখন প্রতি বছর নিয়ম করে এখানে ঢাক বাজাতে আসেন তিনি। এবার তার সঙ্গে এসেছে বছর দশেকের রঘুনাথ হালদার। এই রঘুনাথ দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগর থানা এলাকার বকুলতলায় মুরারীর গ্রামেই থাকে। পিতৃহারা রঘুর বাড়িতে বৃদ্ধা ঠাকুমা ও মা রয়েছেন। পুজোর ক'দিন ঢাক বাজিয়ে মুরারী পান পাঁচ হাজার টাকা। তার মধ্যে কাঁসর বাদক রঘুনাথের জন্য থাকে এক হাজার টাকা। এই অর্থই তাঁর কাছে যথেষ্ট।
মণ্ডপের সামনে দেখা গেল রঘুনাথের বয়সী একটি ছেলে বেশ সুন্দর পাঞ্জাবি পরে হাতে পিস্তল নিয়ে পটকা ফাটাচ্ছে। আর রঘুনাথ কাঁসর বাজিয়ে পুজোর আবহ তৈরি করে চলেছে সেখানেই। যদি বলেন তাহলে দুজনের ভাগ্যের মধ্যে কোন ধাতুর তফাৎ রয়েছে? রঘুনাথকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, সে কি পড়াশোনা করে? উত্তরে সে বলে, "ক্লাস সিক্সে পড়ি। স্কুল তো অনেক দিন বন্ধ। পড়ার বই নেই। বাড়িতে খুব অভাব। মার শরীর খারাপ। ঠাকুমার বয়স হয়েছে।"
আরও পড়ুন- নবমীর রাত বাড়তেই ঠাসা ভিড় টালা প্রত্যয়ে! দেখুন সেই মণ্ডপের ভিডিও
রঘুনাথ ভ্যাকসিন পাবে হয়তো। "তবে তাতে আর পাঁচটা শিশুর মত ওর ভাগ্যটাও কি বদলে যাবে?" এই আলোচনার মধ্যে বেরসিক এক মণ্ডপের দর্শক বললেন। 'তাহলে কাঁসর বাজাবে কে?' এবারের পুজো শেষ। রঘু ফিরে যাবে গ্রামে। আবার কবে পুজোয় বাজানোর ডাক আসবে, সে জানে না! তবে পুজোতে রঘুদের আর মুরারীদের চক্রাকারে দেখা যাবে প্রতিবারই। বিসর্জনের ঘাটের সেই ধ্বনি জোরে জোরে আবার ধ্বনিত হবে,'আসছে বছর আবার হবে,বছর বছর এগিয়ে যাবে।'
Shanku Santra
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Durga Puja