#কলকাতা: ভরা কোটালের জল মোহনায়। বকচরা নদীর জলের স্রোতে টালমাটাল লঞ্চ। দক্ষ সারেঙ উত্তম কুমার দাসের সাহায্যে লঞ্চ সামলানো গেলেও। বড় রাক্ষসখালি এবং জি প্লটের কোথাও নামতে পারলেন না কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। মাঝ দরিয়া থেকেই ফিরতে বাধ্য হলেন তারা। এদিন পাথরপ্রতিমা আসেন কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের ৩ সদস্য। প্রশাসনিক বৈঠক সেরে পাথরপ্রতিমা জেটি ঘাট থেকে নদী পথে পাশ্ববর্তী গ্রাম দেখার পরিকল্পনা করেছিলেন। চারটি লঞ্চে করে রওনা হন তারা মৃদংগভাঙা নদী ধরে জি প্লট ও রাক্ষসখালির উদ্দেশ্যে৷ কারণ এই দুই দ্বীপ সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে৷ যা যা ক্ষতি হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে নদী বাঁধের বিস্তীর্ণ অংশ। কৃষি জমি পুরো নষ্ট। এছাড়া বিদ্যুৎ ব্যবস্থা পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গেছে। আর যেটা সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে সেটা হল সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ।
এদিন বেহালা থেকে হেলিকপ্টারে করে পাথরপ্রতিমা কলেজ মাঠে আসেন কেন্দ্রীয় দলের সদস্যরা। আকাশ পথেই তারা সুন্দরবনের অবস্থা দেখেন। বাস্তবে অবস্থা কী তা বোঝার জন্যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন এই সব ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় গিয়ে তারা গ্রামবাসীদের সাথে কথা বলবেন। যদিও জলের ঘূর্ণি এতটাই শেষমেষ বকচরা নদীর মাঝে থেকেই ডান-বামের দুই দ্বীপ দেখে ক্ষান্ত হতে হল তাদের। দীর্ঘদিন ধরেই এই এলাকা সম্পর্কে অবহিত জেলা ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট আধিকারিক বামাপদ কুন্ডু। তিনি জানাচ্ছেন, "এই দুই দ্বীপ থেকে সাগরের দুরত্ব মাত্র কয়েক কিলোমিটার। কিন্তু এই ঘূর্ণির জেরে বা জলের ঢেউ এতটাই যে তার ফলে আর এই দুই দ্বীপে পৌছন সম্ভব হল না।" জি প্লট থেকে মাত্র ৪ কিলোমিটার দুরে ছিল কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের সদস্যদের লঞ্চ। নদীর জল এতটাই টালমাটাল হতে শুরু করে তাতে বেশ ঘাবড়ে যান লঞ্চগুলির সারেঙ। এরকমই একজন উত্তম কুমার দাস জানান, "এখন কোটাল চলছে। তার মধ্যে জলের এই ঢেউ। এরপর লঞ্চ এগিয়ে নিয়ে গেলে বড়সড় বিপদ হতে পারত। তাই সবাই মিলে লঞ্চ ঘোরানো হল।"
যদিও টালমাটাল লঞ্চের ওপর থেকেই বিভিন্ন ছবি তোলেন তারা। নদী বাঁধ ভাঙা অংশ দেখেন তারা। এর আগে পাথরপ্রতিমার উত্তর গোপালনগর গ্রাম পরিদর্শন করেন তারা। গ্রামে গিয়ে দেখা যায় বিভিন্ন চাষের জমি প্রায় এক হাঁটু জল জমে আছে। কালো জল জমে আছে মাঠে। সমস্ত বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে পড়ে আছে। রাস্তা ভেঙে চলে গেছে। সেই ভাঙা অংশের ওপর দিয়ে হেঁটে যান প্রতিনিধিরা। গোবদিয়া নদীর পাড়ে বাঁধ গেছে। গ্রামবাসীরা এদিন নিজেরাই এগিয়ে আসেন কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের সদস্যদের সাথে কথা বলতে। তাদের দাবি বাঁধ পাকাপাকি ভাবে সারাই করতে হবে। একই সাথে কেন্দ্রকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের সদস্যদের অবশ্য সমস্ত রকমের সহায়তা করেন জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা৷ কিন্তু আসল জায়গায় বাস্তব পরিস্থিতি দেখতে গিয়ে নদীর স্রোতেই আটকে গেলেন কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের সদস্যরা।
ABIR GHOSHAL
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Cyclone Amphan