#কলকাতা: কলকাতা মেট্রো কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, ভাঙা পড়তে চলেছে দুর্গা পিতুরি লেন বা স্যাকরা গলির ২০টা বাড়ি। বিপজ্জনক ঘোষণা করা হয়েছে মোট ৭৮টা বাড়ি। প্রশ্ন হল, ডিটেইল প্রজেক্ট রিপোর্ট তৈরির আগে কি খোঁজ নেওয়া হয়েছিল কলকাতার ইতিহাসের।
আজ যেখানে ক্রিক-রো ৩০০ বছর আগে সেখান দিয়েই বয়ে যেত গোবিন্দপুর খাল। আজকের ক্রিক রো-র মত সরু নয়। পূর্বের লবনহ্রদ থেকে সেই ধারা মিলেছিল গঙ্গার চাঁদপাল ঘাটে। শিবাদ্বীপ বা আজকের শিয়ালদহকে বাঁ হাতে রেখে গোবিন্দপুর খাল পুর্বে দিকে মিলেছিল ইএমবাইপাসের চিংড়িঘাটায়। ১৭৩৭ সালের ১১ অক্টোবর থেকে ৩০ অক্টোবর ভয়ংকর সাইক্লোন ধাক্কা মারে কলকাতায়। সঙ্গে একটানা ভূমিকম্প। ওলটপালট হয়ে গেছিল কলকাতার ভূগোল।
সেই সময়ের ম্যাপ দেখলেই বোঝা যাবে শুধু গোবিন্দপুর খাল নয়। আজকের উত্তর কলকাতার বিস্তীর্ণ অঞ্জল জুড়েই ছিল ছোট বড় খাল ক্রিট ক্রেটার। আর আজকের সময়ে কলকাতা মেট্রোর পথেই ছিল সেই গোবিন্দপুর খাল। তাহলে কি ডিপিআর তৈরির সময় কলকাতার ইতিহাস ভূগোলের কথা মাথায় রাখেননি মেট্রোর ইঞ্জিনিয়াররা?
মাটির ওপর আর মাটির নীচের কাজের ধরণে বিস্তর তফাত আছে। তাহলে যে টিম গঙ্গার তলা থেকে বোরিং করে সাফল্যের সঙ্গে রেললাইন পেতে ফেলল তাঁরা ঘন জনবসতি অঞ্চলে এসে কি ভুল করলেন? ভুল নাকি গুরুত্বহীনতা?
তাহলে ঠিক কোন কোন বিষয়ে নজরে রাখলে ভুমি ধস ঠেকানো যেত? সয়েল টেস্ট বা ডিপিআর তৈরিতে কোন বিষয়ে গুরুত্ব দেন স্ট্র্যাকচারাল ইঞ্জিনিয়াররা।
কারণ ইতিহাসই বলছে, ১৮১৭ সালে ব্রিটিশ ভারতে কলকাতার কর কাঠামো পূনর্বিন্যাসের সময় রাস্তাঘাট তৈরির কারণে বোজানো হয়েছিল গোবিন্দপুর খাল। ১৮২১ সালে ওয়েলিংটন স্কোয়ারে জলাধার বানাতে গিয়ে বিপদে পড়েন ব্রিটিশ প্রযুক্তিবিদরা। কারণ সেই মাটির নীচের জলের স্রোত।
১৮২১ থেকে ২০১৯। কেউ বলতেই পারেন, মাঝে প্রায় দু’শো বছর কেটে গেছে। আজকের কলকাতার নীচে কী ভাবে বুজে যাওয়া গোবিন্দপুর খালের জল মিলবে বা ওয়াটার রিজার্ভ মিলবে? দেখাব দ্বিতীয় পর্বে।