কলকাতা: জোর কদমে চলছে গরু পাচার মামলার তদন্ত। এমনটাই জানিয়েছে কেন্দ্রীয় সংস্থা ইডি। ইডি-র আইনজীবী নীতেশ রানা রাউস অ্যাভিনিউ আদালতে জানিয়েছেন, ‘দিস ইজ নট দি এন্ড। গরু পাচার মামলার তদন্ত অনেকটা এগিয়েছে। জোর কদমে তদন্ত চলছে। গ্রেফতারি এখনও শেষ হয়নি। ভবিষ্যতে আরও গ্রেফতার করা হবে।’ যার ফলে মনে করা হচ্ছে, এনামুল হক, সতীশ কুমার, সায়গল হোসেন, অনুব্রত মণ্ডল, সুকন্যা মণ্ডল, মণীশ কোঠারিদের পর গরু পাচার কাণ্ডে আরও গ্রেফতারি হতে চলেছে। তবে ইডি-র নজরে কে বা কারা রয়েছেন কিংবা ফের কোনও প্রভাবশালী রয়েছেন কিনা তা জানা যায়নি। এই পরিস্থিতিতে এবার এনামুল হক ঘনিষ্ঠ জেনারুল হককে তলব করল সিবিআই। সেই মতো এদিন সিবিআই দফতরে পৌঁছেও যান জেনারুল।
এই জেনারুল শেখ এনামুল হকের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বলে জানা গেছে। মূলত জঙ্গিপুর ঔরঙ্গাবাদ সড়ক যে বিভিন্ন গরু ঘাটগুলি রয়েছে যেই গরুঘাটের মাধ্যমে গরু পাচার করা হত। সেই সমস্ত ঘাটের যে বিএসএফের বর্ডার আউটপোস্ট রয়েছে সেই সমস্ত বর্ডার আউটপোস্টের মেইনটেইন করার দায়িত্ব ছিল এই জেনারুল শেখের। ২০১৫ সালে যখন গরু পাচার করা হত, এনামুল হকের নেতৃত্বে সেই সময় এই জেনারুল শেখ জঙ্গিপুর শহরের ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বেও ছিলেন। এই জেনারুল শেখের উপর জঙ্গিপুরের কেদুয়াঘাটের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল।
উল্লেখ্য, গরু পাচার মামলায় কেষ্টর গ্রেফতারির প্রায় আট মাস পর গ্রেফতার করা হয় তাঁর মেয়ে সুকন্যাকেও। দু’জনেই এখন তিহাড় জেলে বন্দি। তবে আলাদা সেলে রয়েছেন বাবা-মেয়ে। এদিকে, ইডি যখন গরু পাচার মামলায় আরও গ্রেফতারির ইঙ্গিত দিচ্ছে, ঠিক সেই দিনই আদালত থেকে বেরোনোর সময় মেয়ের জামিনের জন্য প্রার্থনা করেছিলেন অনুব্রত মণ্ডল। তিনি বলেন, ‘ঈশ্বর যেন মেয়ের জামিনটা করিয়ে দেন।’ সুকন্যার সঙ্গে কথা হয়েছে বলেও জানান অনুব্রত।
আরও পড়ুন: প্রাথমিকের চাকরি বাতিল মামলায় জোর সওয়াল বিকাশরঞ্জনের, সামনে আনলেন ‘প্রমাণ’! তুমুল চাঞ্চল্য
কয়েকদিন আগেই অনুব্রতর বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছে ইডি, যেখানে বিস্ফোরক অভিযোগ তোলা হয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। চার্জশিটে অনুব্রতর নামে-বেনামে প্রচুর সম্পত্তিরও উল্লেখ করেছে ইডি। সুকন্যাও গরু পাচারের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বলে দাবি করে ইডি। আর এসবের মধ্যেই তদন্তের গতি-প্রকৃতি নিয়ে মন্তব্য করেছেন ইডির আইনজীবী। আরও গ্রেফতারি হতে পারে বলে মন্তব্য করায় ফের জল্পনা শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুন: বাবার মতো পরিস্থিতি মেয়েরও, সুকন্যার জন্য এল আরও খারাপ সময়! দুশ্চিন্তায় অনুব্রতও
এরই মধ্যে সুপ্রিম কোর্টের ‘রক্ষা কবচ’ পেয়েছেন গরু পাচার এবং রাজু ঝা হত্যা মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত শেখ আব্দুল লতিফ। শীর্ষ আদালতের বিচারপতি দীনেশ মাহেস্বরীর বেঞ্চে মামলার শুনানি হয়। সেখানে আব্দুল লতিফের আইনজীবী বলেন, তদন্তে সিবিআই-কে সহযোগিতা করা সত্ত্বেও তাঁর মক্কেলকে বারবার ডাকা হচ্ছে। ২৭ এপ্রিল আসানসোলের সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে গরু পাচার মামলার শুনানি রয়েছে। সেই মামলার শুনানিতে আবদুল লতিফকে হাজিরার নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত। তবে সর্বোচ্চ আদালত জানিয়ে দিয়েছে, তার মধ্যে সিবিআই ডাকলে হাজিরা দিতে হবে আবদুল লতিফকে। যদিও গ্রেফতার করা যাবে না তাঁকে। আগামী সপ্তাহে মামলার পরবর্তী শুনানি সুপ্রিম কোর্টে। চলতি মাসেই শক্তিগড়ে শুট আউটে খুন হন কয়লা মাফিয়া রাজু ঝা। অভিযোগ, সেই রাজু ঝায়ের গাড়িতেই নাকি দেখা গিয়েছিল গরু পাচার কাণ্ডের এই অভিযুক্ত আব্দুল লতিফকে।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।