#কলকাতা: বাদল কুমার ঘোষ ছিলেন সেনাবাহিনীতে। ছেলে চাকরি করেন কানাডাতে। অবসরের পর সেখানে গিয়ে তো বাদলবাবু নাজেহাল। সব কিছুই তো অন্য রকম। ভাবলেন, ছেলে অনেক বছর থাকায় তিনি না হয় সামলে নিতে পারছেন, কিন্তু যাঁরা নতুন আসবেন তাঁরা তো খুব মুশকিলে পড়বেন। বাবার বুদ্ধিতে ব্যাংক অফিসার অরূপ ঘোষ খুললেন ‘কলকাতা ডেজ’। ‘আলপিন টু এলিফ্যান্ট, কানাডায় বাঙালির সব মুশকিল আসান মানেই ‘কলকাতা ডেজ’।
নতুনদের থাকার জন্য বাড়ি খোঁজা, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলা, ছেলেমেয়ের স্কুল, ড্রাইভিং লাইসেন্স, ডাক্তারবাবু...সব কাজেই পাশে আছে 'কলকাতা ডেজ'। অরূপবাবুর কথার সূত্র ধরেই কথা শুরু করেন ইন্দ্রজিৎ দত্ত। তিনি আইটি কোম্পানিতে চাকরি করেন। বেশ কিছুদিন থাকার পর কেউ বাড়ি-গাড়ি কিনতে চান, বাবা-মা-কে এ দেশে নিয়ে আসতে চান, তাঁদের ভিসা বা মেডিক্যাল ইনস্যুরেন্সের কাজকর্ম , পাশে আছ ‘কলকাতা ডেজ’, চোখ বন্ধ করে ভরসা করা যায়। পুরুষ-মহিলারা তো বটেই, ছোটরাও এর পার্ট অ্যান্ড পার্সেল।
আরও পড়ুন- ত্রিপুরা উপনির্বাচনে প্রার্থী তালিকা তৈরি তৃণমূলের, ২০২৩-এর আগে ফের পরীক্ষাকলকাতা থেকে এত দূরে, কেউ যাতে বাংলাকে মিস না করে সে জন্য বারো মাসে তেরো পার্বণ লেগেই আছে। এতে সবচেয়ে বেশি লাভ হয় টিন এজারদের, ছোটদের। ওদের বন্ডিংটা বেশ ভাল। সবাই একেবারে মিলে মিশে একাকার। যেন সবাই একই পরিবারের সদস্য। লালি ঘোষের কথায় ঘাড় নেড়ে সায় দেন দীপ্যমান সিনহা। মজার কথা কী জানেন, এঁরা নিজেরা নিজেদের ডাকেন ‘জনগণ’ বলে। এখন 'কলকাতা ডেজ' এর প্রায় হাজার ছুঁই ছুঁই 'জনগণ' আছেন। হাজার দশেক বাঙালি থাকেন কানাডায়। বেশির ভাগেরই ঠিকানা অন্টারিও। কেউ যান পড়তে। কেউ চাকরি করতে। অনেকেই তারপর নাগরিকত্ব নিয়ে থেকে যান। আমেরিকার ভিসা নীতির কড়াকড়িতেও অনেকে এখন কানাডার নাগরিকত্ব নিয়ে আমেরিকায় চাকরি করছেন। বিদেশে এসে দেশের স্বাদ। চেনা আড্ডা, আত্মীয়-পরিজন-বন্ধুবান্ধব নিয়ে জমজমাট কাণ্ড।
আরও পড়ুন - হজরত মহম্মদকে নিয়ে 'বিতর্কিত' মন্তব্য, নেত্রী নুপুর শর্মাকে বহিষ্কার বিজেপির‘কলকাতা ডেজ’ মানে টেনশনলেস জনগণ। কাউকে একা ভাবার চান্সই দেয় না এই সংগঠন। ‘কলকাতা ডেজ’ চালু ৩৬৫ দিন, ২৪ ঘণ্টা। বলতে বলতে চোখ চকচক করে ওঠে অরূপ ঘোষের। ২০১৭-য় শুরুর সময় ভাবতেই পারেননি এত তাড়াতাড়ি এত হইচই ফেলে দিতে পারবে ‘কলকাতা ডেজ’। কানাডায় থাকা বাঙালিদের মাধ্যমে তো বটেই ফেসবুকের মাধ্যমেও অনেকেই যোগাযোগ করেন। একবার কানাডায় পা দিন, তারপর দেখবেন ‘ক্যলকাটা ডেজ’-এর ম্যাজিক। তবে এই ম্যাজিক দেখতে কোনও খরচ নেই। এখানে আমরা ‘জনগণ’ এর দূত। Made for Each Other- বলছেন, দেবশ্রী সিনহা কিম্বা সুপ্রিয় চট্টোপাধ্যায়ের মতো প্রবাসী বাঙালিরা। কানাডার বুকে একটি বৃহৎ বাঙালি পরিবার। বিদেশের মাটিতে বাঙালিয়ানাকে বাঁচিয়ে রাখার লক্ষ্যেই ওঁরা আজ সবাই ঐক্যবদ্ধ। ভালবাসার, ভাললাগার বন্ধনে আবদ্ধ। 'কলকাতা ডেজ' এর সদস্যদের কথায়,' অচেনা-অজানা মানুষগুলো রাতারাতি আমরা আজ সবাই যেন আলাদা নয়, একই পরিবারের সদস্য হয়ে গেছি'। বিদেশের মাটিতে বাঙালিদের আপদে-বিপদে মুশকিল আসান আজ 'জনগণ'।
VENKATESWAR LAHIRI
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Canada