কলকাতা: স্কুল ছুট শিশুর সংখ্যা বাড়ছে এমনিতেই। তবে সেই সংখ্যার হয়তো কোনও পরিসংখ্যান নেই। কোভিডের সময় লকডাউনে বেড়েছে পড়ুয়াদের স্কুল ছুটের সংখ্যা। ওই সময় আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া বেশিরভাগ পড়ুয়ারা স্কুল থেকে বাদ পড়েছে।
তবে এরই মাঝে ট্যাংরা এলাকার হাড় কল বস্তির সুনিতা দাস নতুন সমস্যায় পড়েছেন। স্বামী ঠিক মতো দেখভাল করে না। গাড়ির চালকের কাজ করেন তাঁর স্বামী। আর সারাদিন নেশা করেন। সুনিতা কাগজ , প্লাস্টিক কুড়িয়ে রোজগার করেন।
আরও পড়ুন- রুবি থেকে কবি সুভাষ, এ মাসেই ছুটবে যাত্রীবাহী মেট্রো? বড় খবর মিলল রেল সূত্রে
সারাদিনে ২০০-৩০০ টাকা রোজগার। তা দিয়েই সংসার চালান। লক ডাউনের সময় দুটি মেয়ে ও একটি ছোট্ট ছেলেকে নিয়ে খুব কষ্টে সংসার চালিয়েছিলেন। ছেলে মেয়েদের পড়াশুনা করান তিনি। ছোট্ট মেয়ে সন্ধ্যাকে পাগলা ডাঙার একটি মিশনারী স্কুলে ভর্তি করেছিলেন। সেই সন্ধ্যা(৮) এখন মায়ের সঙ্গে কাগজ কুড়োয়।
মেয়ে কেন কাগজ কুড়াচ্ছে? প্রশ্ন শুনে মুখের দিকে খানিকটা তাকিয়ে থাকেন তিনি। তার পর যা বললেন তা শুনলে যে কোনও মানুষ মুখের ভাষা হারাবেন।
তিনি বলেন, 'লক ডাউনের সময় স্কুল থেকে বলেছিল মেয়েকে বড় মোবাইল (অ্যান্ড্রয়েড) কিনে দিতে হবে। দিনে ২০০,৩০০ টাকা রোজগার করি, কোথায় পাবো দশ হাজার টাকা দামের মোবাইল? কিনে দিতে পারিনি বলে মেয়েকে স্কুল থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে।'
কথা বলতে বলতে সুনিতা কেঁদে ফেলল - 'জানেন, মেয়ের হাতে খাবারের ডিম দিয়েও হাত থেকে কেড়ে নিল ওরা। আমি গরীব বলে আমাদের কোনো দাম নেই।'
এই অভিযোগ শোনার পর যদিও স্কুলের কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।ছোট্ট সন্ধ্যা আপার ওয়ানে পড়াকালীন স্কুল থেকে বহিষ্কৃত হয়। সন্ধ্যা বলেন, 'পড়াশুনা করে আমি ভাল কাজ করতে চাই।'
আরও পড়ুন- বুধবার জিটিএ প্রধানের সঙ্গে সাক্ষাতের সম্ভাবনা, চলতি মাসের শেষে উত্তরবঙ্গে মমতা?
সকাল থেকে বেলেঘাটা খাল পাড়ে বসে কাগজ, প্লাস্টিক বাছার কাজ করতে করতে সুনিতা বললেন, 'আমি টাকা জোগাড় করছি। খাল পাড়ে একটি সরকারি স্কুল আছে। তাতেই ভর্তি করব।' এই পরিস্থিতিতে রীতিমতো হতবাক এলাকার মানুষ।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Kolkata News, School