জলপাইগুড়ি: মৃত্যুর পরে দেহ চিতায় ওঠে অথবা মিশে যায় কবরে। থেকে যায় শুধুমাত্র অতীতের স্মৃতিটুকুই। কিন্তু দেহ দান করলে তা নানাভাবে বিজ্ঞানের অগ্রগতিতে সাহায্য করে। কিন্তু নানান কুসংস্কার ও চিরাচরিত ধ্যান ধারণার জন্য সহজে মানুষ দেহ দান করতে রাজি হয় না। তবে জলপাইগুড়ি একদল প্রবীণ যেভাবে এগিয়ে এসে দেহ দানের অঙ্গীকারবদ্ধ হলেন, তাতে দেহ দান নিয়ে সমাজের এই অচলায়তন হয়ত এবার ভাঙবে!
দেহ দানের অঙ্গীকার নিয়ে যা আন্দোলন বা তৎপরতা তা সাধারণত কলকাতা ও তার আশপাশের এলাকাতেই এতদিন দেখা গিয়েছে। এবার শহর কলকাতা ছাড়িয়ে জেলাতেও আয়োজিত হল স্বতঃস্ফূর্ত মরণোত্তর দেহদান অঙ্গীকার শিবির। সৌজন্যে জলপাইগুড়ির মুক্তাঙ্গন নাট্যগোষ্ঠী ও সায়েন্স অ্যান্ড নেচার ক্লাব। শুক্রবার সন্ধেয় এই শিবির অনুষ্ঠিত হয় জলপাইগুড়ি বান্ধব নাট্য সমাজের মিনি হলে। সেখানে প্রায় ২০ জন বিভিন্ন বয়সী মানুষ মরণোত্তর দেহদান ও অঙ্গদানের ইচ্ছাপত্রে স্বাক্ষর করেন।
সমবেত সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্যে দিয়ে এই অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা হয়। মূল অনুষ্ঠানে অঙ্গদান ও দেহদানের প্রয়োজনীয়তা ও এর ইতিহাস সম্পর্কে আলোচনা করেন চিকিৎসকরা। এই কাজের অবদান ও প্রক্রিয়া প্রসঙ্গে আলোচনা করেন সায়েন্স অ্যান্ড নেচার ক্লাবের কোষাধ্যক্ষ ডা: গৌতম ঘোষ।
আরও পড়ুন: শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালের প্রবেশপথ দখল মুক্ত করার হুঁশিয়ারি গৌতমের
সায়েন্স অ্যান্ড নেচার ক্লাবের সম্পাদক ড. রাজা রাউত সকলকে জানান, অঙ্গীকারবদ্ধ মানুষের মৃত্যু পরবর্তীকালে পরিজনদের করনীয় কী এবং কোন কোন অঙ্গ প্রতিস্থাপন করা যেতে পারে। তিনি বলেন, "মৃত্যুর পরও মানুষদের দেহের অঙ্গ বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা যায়। তাই আমি অনুরোধ করছি সকলকে এই মহৎ কাজের উদ্দেশ্যে এগিয়ে আসুন। আপনার দেহ মৃত্যুর পর অন্য মানুষের মধ্যে জীবিত থাকবে। মুক্তাগণ নাট্যগোষ্ঠীর রিতা ভারতী বলেন, "এই মরণোত্তর দেহদান মৃত্যুর পরও মানুষকে অন্য একটি মানুষের মধ্যে বাঁচিয়ে রাখে। জলপাইগুড়ি শহরে কয়েক মাসের মধ্যে তৈরি হবে মেডিকেল কলেজ। সেখানে বিভিন্ন অঙ্গের দরকার হবে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের অগ্রগতি ও নতুন চিকিৎসক তৈরি হওয়ার জন্য মৃত মানুষের দেহ ব্যবহারের অনুমতি পাওয়া খুব জরুরি।" তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন সময় কাজ করতে গিয়ে দেখা যায় সাধারণ মানুষ এখনও কুসংস্কারে আচ্ছন্ন হয়ে আছে। তাঁদের উদ্দেশ্যে বার্তা, কুসংস্কার সরিয়ে রেখে আসুন, আমরা একসঙ্গে এগিয়ে যাই।
সুরজিৎ দে
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Jalpaiguri News