#টোকিও: কাঠ দিয়ে তৈরি স্যাটেলাইট? ভেঙে যাবে না? বা, পুড়ে যাবে না? ভেঙে যে যাবে না, সে ব্যাপারে এক রকম বলতে গেলে জাপানের বৈজ্ঞানিকরা গ্যারান্টি দিচ্ছেন! আর পুড়ে যাওয়ার ব্যাপারটার দিকে লক্ষ্য রেখেই তাঁরা তৈরি করতে চাইছেন কাঠের তৈরি স্যাটেলাইট!
আসলে যে সব স্যাটেলাইটগুলো প্রতি বছর মহাশূন্যে যায় এবং নিজের কাজকর্ম সুষ্ঠু ভাবে সম্পাদন করে আবার পৃথিবীতে ফিরেও আসে, তারা কিন্তু একটা ভয়াবহতারও জন্ম দেয়। যে সব স্যাটেলাইটগুলো মহাশূন্যেই বিধ্বস্ত হয়ে যাচ্ছে, তারা সেখানেই থেকে যাচ্ছে, ঘুরপাক খাচ্ছে জঞ্জাল হিসেবে! অন্য দিকে, যে সব স্যাটেলাইটগুলো ফিরে আসছে, তারাও পৃথিবীর কক্ষপথে ঢুকে ঘষা খেয়ে পুড়ে যাচ্ছে। পরিণামে প্রচুর পরিমাণে অ্যালুমিনিয়ামের কণা ছড়িয়ে পড়ছে মহাশূন্যে এহবং পৃথিবীর উপরিভাগে। সব মিলিয়ে এক দিকে তা যেমন মহাশূন্যের জঞ্জাল বাড়িয়ে তুলছে, তেমনই পৃথিবীর পক্ষেও দূষণের কারণ হয়ে উঠছে।
তাই জাপানের সুমিতোমো ফরেস্টরি কিয়োতো ইউনিভার্সিটির সঙ্গে যুগ্ম ভাবে কাঠের স্যাটেলাইট তৈরি করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে বলে খবর পাওয়া গিয়েছে। জানা গিয়েছে যে এই সুমিতোমো ফরেস্টরি বিগত ৪০০ বছর ধরে জাপানে হাই রেজিস্ট্যান্ট কাঠের জিনিস তৈরি করে চলেছে। তাই এই সংস্থার জোগান দেওয়া নানা কাঠ পরখ করে দেখা হবে। শেষমেশ যেটা ব্যবহারের উপযুক্ত বলে মনে হবে বৈজ্ঞানিকদের, তার ভিত্তিতে তৈরি হবে স্যাটেলাইটের নকশা। খবর বলছে যে খুব বেশি হলেও ২০২৩ সালের মধ্যে এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়ে যাবে।
ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের একটি খবর এর আগে জানিয়েছিল যে আপাতত মহাশূন্যে ১০ সেন্টিমিটারের চেয়েও বড় প্রায় ২০ হাজার জঞ্জালকণা ঘুরে বেড়াচ্ছে। অন্য স্যাটেলাইটগুলো যদি এদের সঙ্গে ঘষা খায়, তা হলে বিপদের কারণ তৈরি হতে পারে। আবার, ক্লিয়ারস্পেস টুডে-র খবর অনুযায়ী বিগত ১০ বছরে মহাশূন্যে স্যাটেলাইট ছাড়ার প্রবণতা ১০ গুণ বেড়েছে, প্রতি বছরে খুব কম করে হলেও অন্তত ৬০০টা স্যাটেলাইট তো মহাশূন্যে যাচ্ছেই! সেই সব হিসেব মাথায় রাখলে জাপানের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ দিতেই হয়!