আমেরিকা: টানেলের শেষে এক বিন্দু আলোক রশ্মি৷ হুড়মুড়ি সিনেমার মতো দেখে ফেলা গোটা জীবন৷ কিংবা, প্রিয় মৃত মানুষদের সঙ্গে হঠাৎ দেখা৷ মৃত্যুর খুব কাছ থেকে ঘুরে আসা মানুষেরা প্রায় একই ধরনের কথা বলে থাকেন৷ এগুলো কি সত্যিই তাঁরা দেখেন, দেখলেও কেন দেখেন? সেই প্রশ্ন চিরকাল ভাবিয়েছে মানুষকে৷ কোনও অলৌকিক ঘটনা, নাকি, এর পিছনে স্নায়ুজালের কোনও গুঢ় রহস্য লুকিয়ে রয়েছে,তাই খুঁজে দেখার নিরন্তর চেষ্টা চলে৷ এমন অবস্থায় নতুন একটি গবেষণাপত্রে সামনে এল আরও এক চাঞ্চল্যকর তথ্য৷
গত সোমবার প্রসিডিংস অফ দ্য ন্যাশনাল একাডেমি অফ সায়েন্সে (পিএনএএস) প্রকাশিত হয়েছে একটি নতুন গবেষণাপত্র৷ মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা সেখানে দুজন মৃতপ্রায় রোগীর ক্ষেত্রে চেতনার সঙ্গে যুক্ত মস্তিষ্কের অংশেক অতি সক্রিয়তা লক্ষ্য করেছেন। অর্থাৎ, মৃত্যুর ঠিক আগের মুহূর্তে এঁদের দুজনের মস্তিষ্কই অবিশ্বাস্য ভাবে সক্রিয় হয়ে উঠেছিল৷
আরও পড়ুন: যৌন ক্ষমতা বাড়ানোর অব্যর্থ 'টোটকা'! এই প্রাণীর তেল দেদার বিকোচ্ছে পাকিস্তানে
যদিও এটি এই ধরনের প্রথম গবেষণা নয়৷ তবে এমন গহাতেকলমে কোনও জিনিসের প্রমাণ পাওয়া হয়ত এই প্রথম৷ গবেষণাপত্রের সিনিয়র লেখক জিমো বোর্জিগিন জানান, তাঁরা কার্ডিয়াক অ্যারেস্টে মারা যাওয়া চারজন রোগীর মস্তিষ্কের ক্রিয়াকলাপ ইলেক্ট্রোএনসেফালোগ্রাম (ইইজি) মেশিন দ্বারা পর্যবেক্ষণ করেন। এই চারজনই কোমায় ছিলেন৷ যখন চিকিৎসকেরা বুঝতে পারেন, এঁদেরল কোনও ভাবেই চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ জীবনে ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়, তখন তাঁদের লাইফ সাপোর্ট সিস্টেম থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়৷
দেখা যায়, যখন তাদের ভেন্টিলেটর খুলে ফেলা হয়েছে, তখন চার রোগীর মধ্যে দুজন - একজন ২৪-বছর-বয়সি তরুণী এবং একজন ৭৭-বছর-বয়সি মহিলা - উভয়েরই হৃদস্পন্দনের হার উল্লেখযোগ্য ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে৷ পাশাপাশি, গামা ফ্রিকোয়েন্সিতে মস্তিষ্কের স্নায়ু তরঙ্গেও বৃদ্ধি দেখা গিয়েছে৷ এই ভাবে মস্তিষ্কের কার্যকলাপ দ্রুত বৃদ্ধি পেলে, চেতনার জগৎ উন্মুক্ত হয়।
এর আগেও ২০২২ সালে ৮৭ বছর বয়সি এক মৃতপ্রায় ব্যক্তির মস্তিষ্কে এমন অতিসক্রিয় গামা তরঙ্গ পাওয়া গিয়েছিল।
ইউনিভার্সিটি অফ মিশিগানের গবেষণায় দেখা হয়েছে, মস্তিষ্কের ঠিক কোন অংশগুলি এক্ষেত্রে অতি সক্রিয় হয়ে উঠেছে? সেই অংশ হল "পোস্টেরিয়র কর্টিকাল হট জোন"৷ যা টেম্পোরাল, প্যারাইটাল এবং অক্সিপিটাল লোবগুলির সমন্বয়ে গঠিত৷ যা চেতনার পরিবর্তনের সঙ্গে জড়িত।
আরও পড়ুন: সন্তানের জন্ম দিলেই লক্ষ লক্ষ টাকা দেয় এই সব দেশ, এমনকি, দেয় দুধ-ডায়াপারের দামও
"যদি মস্তিষ্কের এই অংশটি হঠাৎ সক্রিয় হয়, এর অর্থ হল রোগী কিছু দেখছেন, কিছু শুনতে পাচ্ছেন এবং তারা শরীরজুড়ে কিছু অনুভব করতে পারছেন৷,’’ বোর্জিগিন বলেন৷
তাঁর সংযোজন, এটি স্পষ্ট নয়, কেন ৪ রোগীর মধ্যে দু'জন "চেতনা" জাগ্রত হল, আর দু'জনের হল না৷ বোর্জিগিন ভবিষ্যতে আরও শত শত লোকের তথ্য সংগ্রহ করার আশা করছেন ৷ আসল রহস্য জানতে এমন একটি পরীক্ষা প্রয়োজন যেখানে মৃত্যুর খুব কাছে পৌঁছনোর অভিজ্ঞতাকে অনুকরণ করা যায়।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Death