ঘটনা যে শুধুই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের (Second World War) সমসময়ের নয়, এ তার জ্বলজ্যান্ত প্রমাণ! ইতিহাস বই, হলিউডের (Hollywood) ছবি এবং আরও নানা মাধ্যমে আমরা সবাই অল্পবিস্তর পরিচিত যে ওই সময়ে জার্মানির (Germany) শাসক, প্রবল জাত্যভিমানী অ্যাডলফ হিটলার (Adolf Hitler) কী নারকীয় অত্যাচারটাই না চালিয়েছিলেন ইহুদিদের (Jew) উপরে! তাঁর সেই অত্যাচারের হাত থেকে রক্ষা পেত না শিশুরাও, আনা ফ্রাঙ্কের (Anne Frank) ডায়েরির পাতা উলটে গেলেই তা স্পষ্ট টের পাওয়া যায়! কিন্তু সেই মনোভাব যে ২০২০ সালে এসেও এতটুকু বদলে যায়নি, কেবল হিটলার নেই বলে অত্যাচারটাও নেই, সেটা প্রমাণ করে দিল সম্প্রতি এক ইহুদি চিকিৎসকের জবানবন্দী। তিনি জানিয়েছেন যে হাসপাতালের এমার্জেন্সি রুমেও তাঁকে কটূক্তির সম্মুখীন হতে হয়!
খবর এ প্রসঙ্গে তুলে ধরেছে ডক্টর টেলর নিকোলাসের কথা। জার্মানির এক হাসপাতালে আপাতত করোনায় আক্রান্ত রোগীদের সুস্থ করে তোলাই যাঁর একমাত্র কাজ। সম্প্রতি এই চিকিৎসক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন যে দিন কয়েক আগেই হাসপাতালের এমার্জেন্সি রুমে (Emergency Room) কেমন অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হতে হয়েছে তাঁকে! পাশাপাশি, সেই ঘটনার স্মৃতিচারণ করে নিজের সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডল থেকে একটি পোস্টও করেছেন ডক্টর নিকোলাস।
He came in by ambulance short of breath. Already on CPAP by EMS. Still, he was clearly working hard to breathe. He looked sick. Uncomfortable. Scared.
As we got him over to the gurney and his shirt off to switch a a hospital gown, we all noticed the number of Nazi tattoos. 1/ — Taylor Nichols, MD (@tnicholsmd) November 30, 2020
ডক্টর নিকোলাস বলছেন যে দিন কয়েক আগেই জার্মানির যে হাসপাতালে কর্তব্যরত তিনি, তার এমার্জেন্সি রুমে এক করোনায় (Coronavirus) আক্রান্ত রোগীকে নিয়ে আসা হয়। খবর পেয়ে তিনি ছুটে গিয়ে দেখেন যে সর্বাঙ্গ স্বস্তিক (Swastika) ট্যাটুতে মোড়া ওই জার্মান ব্যক্তি রীতিমতো শ্বাসকষ্টে ভুগছেন। রোগী আগে থেকেই জানতেন যে ডক্টর নিকোলাস জাতিতে ইহুদি। তাই তিনি ডক্টর নিকোলাসকে সকাতরে অনুরোধ করে- তিনি যেন তাঁর প্রাণরক্ষা করেন!
ডক্টর নিকোলাস জানিয়েছেন যে এই ঘটনা সামান্যের জন্য হলেও তাঁকে দ্বিধায় ফেলে দিয়েছিল। ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা এবং শতাব্দীপ্রাচীন অত্যাচারের স্মৃতি কয়েক মুহূর্ত তাঁকে মূক করে রাখে। তবে তাড়াতাড়ি পেশাগত সিদ্ধান্ত নিতে দেরি হয়নি তাঁর। কৃষ্ণকায় নার্স এবং এশিয়ান রেসপিরেটরি বিশেষজ্ঞের টিম নিয়ে তিনি চিকিৎসা শুরু করে দেন। রোগীর মুখ থেকে বেরিয়ে আসা ড্রপলেট তাঁদের জীবনসঙ্কটের কারণ হতে পারে জেনেও তিনি রোগীকে ইনটিউবেট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।
এত কিছুর পরে ডক্টর নিকোলাসের কেবল একটাই বক্তব্য- যদি সে দিন রোগীর জায়গায় তিনি এবং চিকিৎসকের জায়গায় ওই প্রবল জাত্যভিমানী ব্যক্তি থাকতেন, তা হলে কী হত?
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Corona, Coronavirus, Covid ১৯