ইচ্ছা থাকলে কী না হয়, সঙ্গে অদম্য জেদ! শারীরিক প্রতিবন্ধকতার ক্ষেত্রে এই বাক্যটিকে শুধুমাত্র পেশিশক্তি দিয়ে নির্ণয় করলেই চলবে না। তার সঙ্গে অবশ্যই যোগ করতে হবে মনের মারাত্মক জোর। অসাধ্য সাধন করে মানুষের জিজীবিষা আমরা তো অনেক দেখেছি অথবা পড়েছি। ইংলিশ চ্যানেলে পা না থাকা সত্ত্বেও বাঙালি ছেলে মাসদুরের দুরন্ত সাঁতার অথবা সম্পূর্ণ ভাবে শারীরিক প্রতিবন্ধী হয়েও স্টিফেন হকিং-এর যুগান্তকারী আবিষ্কার। এই দুই জলজ্যান্ত বাস্তব বাদ দিলেও থেকে যায় আরও অজস্র উদাহরণ। মানুষের নিজের অক্ষমতাকে জয় করে এগিয়ে যাওয়ার গল্পগুলোই যেন আমাদের সঠিক ভাবে শিক্ষা দেয়, অদম্য জেদে পাহাড় টলানোও সম্ভব, যে পাহাড় নিজেদেরই ভেতর-মনে গড়ে ওঠা বাধাস্বরূপ।
আমেরিকারই তেমন এক নাগরিক, নাম রবার্ট প্যায়লর, দীর্ঘদিন কোয়াড্রিপ্লেজিক নামক রোগে ভুগছিলেন। বিকল হয়ে পড়েছিল দু'ই পা। কিন্তু মনের অসম্ভব জোর আর গায়ের সবটুকু শক্তি খাটিয়ে রোগাক্রান্ত হওয়ার ১,২২০ দিন পর হুইলচেয়ার থেকে নিজেই উঠে দাঁড়ালেন!
I stood up out of my wheelchair on my own for the first time today! It took me 1,220 days to achieve this goal, and it was worth every second. No better way to celebrate Labor Day! pic.twitter.com/XuJIVMuwL8
তাঁর এই কঠিন রোগকে জয় করে পায়ে ভর দিয়ে উঠে দাঁড়ানোর ভিডিও শেয়ার করলেন ট্যুইটারে। রবার্টের পোস্ট করা ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, নিজের হুইলচেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়ে ওয়াকারের সাহায্যে ধীরে ধীরে তিনি এগোচ্ছেন। ট্যুইটারে এই ভিডিও পোস্ট করে তিনি লেখেন, ''আজ প্রথমবার নিজের থেকে হুইলচেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ালাম। ১,২২০ দিন পর আমি আমার জয় পেলাম, এর জন্য আমায় প্রত্যেকটা সেকেন্ডকে দাম দিতে হয়েছে। শ্রম দিবস এর থেকে আর ভাল ভাবে উদযাপন করা যায় না!''
ট্যুইটারে এই ভিডিওটি ইতিমধ্যেই ২.৮ মিলিওন ভিউ, সঙ্গে ১ লক্ষের উপরে লাইক পেয়েছে! ১৮ হাজারের বেশিবার রি-ট্যুইট হয়েছে ভিডিওটি। ট্যুইটারের জনগণ রবার্টের এই উঠে দাঁড়ানোকে তাঁর শরীর ও মনের জয় বলে মনে করছেন।
Awesome!!! I recently went through something similar!! Took my 743 days! Keep fighting!! You rock!!
Never give up, I was a t12 severed spinal cord, told I would never walk again but I am because I never give up show the ppl true grit never give up pic.twitter.com/vhnwN1LPy6
রবার্টের পোস্ট করা এই ভিডিও দেখে, অনেকে নিজেদের অভিজ্ঞতার কোথাও শেয়ার করেছেন। রবার্টের এই চেষ্টা দেখে যাঁরা উদ্বুদ্ধ, তাঁরা রবার্টকে কুর্নিশ জানিয়েছেন। একজন নেটিজেন রবার্টের ভিডিও দেখে নিজের কথা শেয়ার করে জানান, ১২ বছর বয়সে স্পাইনাল কর্ডে আঘাত পাওয়ার পর ডাক্তাররা তাঁকে জানিয়েছিলেন তিনি আর কখনও চলতে পারবেন না। মনের জোরকে কাজে লাগিয়ে সেই মানুষটি হাঁটতে পেরেছেন, সে কথা জানিয়ে রবার্টকে তিনি অভিনন্দন জানান। অনেকে রবার্ট প্যায়লরকে সত্যিকারের যোদ্ধার সাথে তুলনাও করেছেন।
রবার্ট ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছেন তা আর নতুন করে বলার কিছু নেই। কিন্তু নিজে সেরে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে অনেক মানুষকে মনের দিক থেকে সারিয়ে তুলে প্রকৃত জয়ীর উদাহরণ দিলেন তিনি।