#লন্ডন: এ যেন ঠিক সিনেমায় দেখা ভালোবাসার কোনও ছবির গল্প! না কি বাস্তব জীবনের ঘটনাই ছায়াছবির চিত্রনাট্যের অনুপ্রেরণা- সেটাই বলা ঠিক হবে?
আসলে ২০১৮ সালে রোজির স্বামী যখন স্কুবা ডাইভিং করতে গিয়ে নিখোঁজ হয়ে যান, তখন আর জীবনে কোনও ইতিবাচক আলো দেখতে পাননি তিনি। একই রকম মানসিক অবস্থা হয়েছিল জনাথন গিল মসেরও, স্ত্রীর অকালপ্রয়াণের পরে তিনিও হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন ভীষণ ভাবে। খবর মোতাবেকে, ব্রিটেনের এই দুই ব্যক্তি আপাতত নিজেদের মধ্যে নতুন করে খুঁজে পেয়েছেন ভালোবাসার আশ্রয়, বিয়েও সেরে ফেলেছেন! যদিও প্রায় প্রতি পদক্ষেপেই তাঁদের এগোতে হয়েছে প্রতিকূলতা জয় করে!
জানা গিয়েছে যে স্বামীর মৃত্যুর পরে রোজি এবং স্ত্রীর মৃত্যুর পরে জনাথন ২০১৯ সালে ব্রিটেনের একটি গ্রুপ কাউন্সেলিংয়ে অংশগ্রহণ করেছিলেন। ধীরে ধীরে সেখানেই তাঁদের মধ্যে আলাপ বাড়ে, আবার জীবনে ভালোবাসার খোঁজ পান তাঁরা। পরস্পরের ভালো বন্ধুও হয়ে ওঠেন।
এই পর্যন্ত সব কিছু ঠিক থাকলেও ২০২০ সালে এসে আবার জীবন অপ্রত্যাশিত পথে বাঁক নেয়। রোজি জানতে পারেন যে জনাথন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন, তাঁকে ভর্তি করা হয়েছে হাসপাতালে। খবরটা জেনে থেকেই অস্বস্তিতে ছিলেন রোজি। পরে যখন তিনি জানতে পারেন যে জনাথন কোমায় চলে গিয়েছেন, তখন আর নিজেকে সামলাতে পারেননি। এই সময়টা তাঁর কাছে জীবনের সব চেয়ে দুঃসহ পর্ব বলে মনে হয়েছিল, সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানিয়েছেন সে কথা।
যদিও শেষ পর্যন্ত ভাগ্য তাদেরই সহায় হয়। কোমা থেকে ফিরে আসেন জনাথন। তাঁর বক্তব্য- এর পর তিনি বুঝতে পারেন যে আর দেরি করা ঠিক হবে না। তাই হাসপাতালের বিছানায় শুয়েই ভিডিও কলে বিয়ের প্রস্তাব দেন রোজিকে। রোজিও রাজি হয়ে যান।
এর মাঝেই দেশে শুরু হয় করোনার নতুন ধারার সংক্রমণ। হবু এই দম্পতির মনে হয়, আরেকটা লকডাউন ঘোষণা হতে পারে। তাই দু'জন ঘনিষ্ঠ বন্ধুর উপস্থিতিতে বিয়ে সেরে ফেলেন তাঁরা। আর তার ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই ব্রিটেনে নতুন করে লকডাউন শুরুর ঘোষণা করা হয়!
খবর মোতাবেকে, আপাতত সুখে আছেন রোজি এবং জনাথন। রোজির আগের পক্ষের তিন সন্তান এবং জনাথনের আগের পক্ষের এক সন্তানও ভিডিও কনফারেন্সে অংশ নিয়েছিলেন এই বিয়েতে। তাঁরাও রোজি আর জনাথনকে আনন্দিত দেখে আপ্লুত!