#নয়াদিল্লি: সারা বিশ্ব সাক্ষী থাকল এক ঐতিহাসিক মুহূর্তের। মঙ্গলের লাল মাটিতে একটি আগ্নেয়গিরির জ্বালামুখের উপরে সাবধানে অবতরণ করল NASA-র প্রিসারভ্যারেন্স রোভার। এটা বিশ্বের সর্বাধিক উন্নত জ্যোতির্বিজ্ঞান পরীক্ষাগার। আপাতত এই রোভার মঙ্গলের মাটিতে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র প্রাণীর অস্তিত্ব খুঁজবে।
এই দুর্দান্ত মিশনের সাফল্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যতটা গর্বিত, ঠিক ততটাই গর্ববোধ করছেন ভারতীয়রা। কারণ এই মিশনে যে বিজ্ঞানীরা নেতৃত্ব দিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে অন্যতম হলেন আমেরিকান-ভারতীয় বিজ্ঞানী ডক্টর স্বাতী মোহন (Swati Mohan))।
রোভারের অ্যাটিটিউড নিয়ন্ত্রণ এবং সেটা যাতে সঠিকভাবে মঙ্গলের মাটিতে নামতে পারে সেই বিষয়ের দায়িত্বে ছিলেন তিনি। NASA-র এই ইঞ্জিনিয়ার জানিয়েছেন যে প্রিসারভ্যারেন্স যে মঙ্গলে নেমেছে সেটা নিশ্চিত ভাবে খবর পাওয়া গিয়েছে। এবার অতীতে এই গ্রহে প্রাণের চিহ্ন ছিল কি না, তা খুঁজবে এই রোভার।
গত বছর অর্থাৎ ২০২০ সালের জুলাই মাসের ৩০ তারিখ ফ্লোরিডার কেপ কার্নিভাল এয়ার ফোর্স স্টেশন থেকে এই রোভার উৎক্ষেপণ করা হয়। একটা পুরনো নদীখাতে জেজেরো আগ্নেয়গিরির জ্বালামুখের উপরে সাবধানে ও সফল ভাবে নেমেছে এই প্রিসারভ্যারেন্স রোভার।
NASA বলেছে যে এই রোভারে সাত রকমের উন্নত মানের যন্ত্রপাতি আছে যার দ্বারা এই গ্রহ বিষয়ে খুব জটিল ও উচ্চমানের গবেষণা করতে সক্ষম এই যান। এটি মঙ্গলে এক বছর থাকবে। মঙ্গল গ্রহে এক বছরের অর্থ হল পৃথিবীতে দুই বছর। মঙ্গল গ্রহে আদৌ প্রাণের সঞ্চার ঘটেছিল কি না বা এই গ্রহ বসবাসের যোগ্য কি না সেই নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে গবেষণা চালিয়ে আসছে NASA। প্রিসারভ্যারেন্স রোভার ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র জীবাণুর খোঁজ করবে। এই অনুসন্ধান মঙ্গল গ্রহ-সংক্রান্ত NASA-র গবেষণাকে আরও একটু এগিয়ে নিয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এই রোভারে যুক্ত করা হয়েছে একটি ড্রিলিং মেশিন। এটি মঙ্গলের মাটি ও পাথর খুঁড়ে কিছু নমুনা সংগ্রহ করবে। তার পর সেই নমুনা মুখবন্ধ করা টিউবে রাখবে এবং পৃথিবীতে নিয়ে আসবে। এই নমুনাগুলি আগামী দিনের গবেষণাতেও কাজে লাগবে বলে আশা করা হচ্ছে।
মেকানিকাল ও এরোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে স্নাতক স্বাতী আমেরিকায় আসেন মাত্র এক বছর বয়সে। এই মিশন ছাড়াও এর আগে স্বাতী কাজ করেছেন চন্দ্রযান ও শনি গ্রহের মিশন ক্যাসিনিতেও। বর্তমানে স্বাতী NASA-র জেট প্রোপালসন পরীক্ষাগারে কর্মরত।