#ওয়াশিংটন: বর্ণবৈষম্য নিয়ে উত্তপ্ত আবহের মধ্যে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিসেবে সেনেটর কমলা হ্যারিসকে বেছে নিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী জো বাইডেন। এই প্রথম কোনও অ-শ্বেতাঙ্গ মহিলা এই পদের জন্য মনোনীত হয়েছিলেন। যা মার্কিন ইতিহাসে নজিরবিহীন। কমলা প্রথম এশীয়-আমেরিকান মহিলা যাঁকে এই পদের জন্য মনোনীত করা হয়েছিল। হ্যারিসকে এক জন নির্ভীক যোদ্ধা বলেও বর্ণনা করেছেন বাইডেন। হ্যারিসকে মনোনীত করার পর বাইডেন বলেন, “আমরা দু’জনে মিলে এ বার ট্রাম্পকে কড়া টক্কর দেব।” বাইডেনের সহযোদ্ধা হিসেবে মনোনীত হওয়ার পর হ্যারিস টুইট করেন, “এই মনোনয়নের জন্য আমি গর্বিত। বাইডেন যাতে প্রেসিডেন্ট হতে পারেন তার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করব।” সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করলেন। তবে বাইডেন শুধু প্রতিশ্রুতি দেননি। আজ ট্রাম্পের বিরুদ্ধে লড়াই করে জয়ী হয়েছেন তিনি। আমেরিকার মসনদে এবার জো বাইডেন বসবেন , সঙ্গে থাকবেন কমলা হ্যারিস। এ যেন এক গৌরবময় জয়। শ্যামলা গোপালন হ্যারিসের মেয়ে কমলাদেবী হ্যারিস সংক্ষেপে কমলা হ্যারিস কখনওই তাঁর নিজের শিকড়কে ভোলেননি।
দুই, আমেরিকা যখন সিভিল রাইটস আন্দোলনে উত্তাল, তখনই আস্তে আস্তে বড় হচ্ছেন কমলা। বাবা-মা সেই ছোট্ট মেয়েটিকে নিয়ে হাঁটতেন মিছিলে, জড়ো হতেন বিভিন্ন জমায়েতে। কমলা জানাচ্ছেন, তাঁর একেবারে ছোটবেলার ঝাপসা স্মৃতির মধ্যে আছে চারিদিকে অসংখ্য পা হেঁটে চলেছে সারিবদ্ধ ভাবে। আর সেই মিছিল থেকে নানা রকম স্লোগান উঠছে। মা শ্যামলা জানিয়েছিলেন তাঁর বড় মেয়েটি অর্থাৎ কমলার মুখে যখন সবে বুলি ফুটেছে, তখন সে মাঝেমাঝেই কান্নাকাটি করত আর কী চাই জিজ্ঞাসা করলে ঠোঁট ফুলিয়ে আধো আধো গলায় বলত, ‘ফিদম’। আজ সেই মেয়ে আমেরিকার ভাইস প্রেসিডেন্ট।
আজ এই গর্বের দিনে ট্যুইট করলেন কমলার বোন মায়া হ্যারিস। মায়া ট্যুইটারে তাঁর দিদির জন্য লেখেন, "মা আমাদের শিখিয়েছিলেন কিভাবে সব কিছু করতে হয়। আমরা সব করতে পারি। আজ মায়ের জন্য সব থেকে গর্বের দিন।" এর সঙ্গে মায়ের ছবি শেয়ার করে মায়া হ্যারিস। কমলা চেন্নাইয়ে জন্মেছিলেন। নিজেদের সংস্কৃতি এবং পরিচয়ের যোগ রাখতে কমলা এবং তাঁর বোন মায়ার সংস্কৃত নাম রেখেছিলেন তাঁদের মা। যিনি ক্যানসার নিয়ে গবেষণা করতেন। ২০০৯ সালে তাঁর মৃত্যু হয়। কমলার বাবা ডোনাল্ড হ্যারিস জামাইকার। তিনি স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন। খুব কম বয়সেই কমলার বাবা-মা'র বিচ্ছেদ হয়ে গিয়েছিল। কমলার জীবনে তাঁর মায়ের প্রভাব সব থেকে বেশি। তাই আজ গর্বের দিনে বোন মায়া সব টুকু শ্রদ্ধা মাকে জানালেন।