#রাশিয়া: প্রেমিকাকে খুনের অভিযোগে সাড়ে ১২ বছরের কারাদণ্ড হল ইতিহাসবিদ ওলেগ সোকোলভের। ফ্রান্সের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মান লিজিয়ঁ দ্য’অনর (Legion d'Honneur) প্রাপ্ত ৬৪ বছরের ঐতিহাসিককে দোষী ঘোষণা করল রাশিয়ার আদালত। ইতিহাসবিদ সোকোলভের বিরুদ্ধে তাঁর ছাত্রী ওরফে প্রেমিকা ২৪ বছরের আনাস্তেশিয়া ইয়েসচেঙ্কোকে খুন করার অভিযোগ রয়েছে। গত বছর নভেম্বরে সোকোলভকে সেন্ট পিটার্সবার্গের বরফে ঢাকা মাইকা নদীর উপর মদ্যপ অবস্থায় পাওয়া যায়। তাঁর সঙ্গে একটি ব্যাগ ছিল, যার মধ্যে একটি কাটা হাত মেলে। তারপরেই পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করে।
যদিও প্রথমে সোকোলভ খুনের কথা স্বীকার করেননি। তিনি জানিয়েছিলেন, মদ্যপ অবস্থায় নিজেকে সামলাতে না পেরে তিনি পড়ে গিয়েছিলেন। আর ওই ব্যাগ কীভাবে তাঁর কাছে এল, তা তিনি জানেন না। পুলিশ বিষয়টিকে খতিয়ে দেখার পর জানা যায়, সেন্ট পিটার্সবার্গের এক ছাত্রী আনাস্তেশিয়া ইয়েসচেঙ্কো, কিছু দিন ধরে নিখোঁজ। পুলিশ তদন্ত করে জানতে পারে ওই কাটা হাতটি ইয়েসচেঙ্কোর। অবশেষে সোকোলভ নিজের অপরাধের কথা স্বীকার করে নেন। আদালতকে তিনি জানিয়েছেন, প্রেমিকার সঙ্গে ঝগড়ার সময় তাঁকে চারবার গুলি করেন। প্রমান উধাও করার উদ্দ্যেশে তিনি ইয়েসচেঙ্কোর হাত, পা, মাথা ইলেক্ট্রিক করাত দিয়ে টুকরো টুকরো করে কেটে ব্যাগের ভিতর ঢুকিয়ে নদীর জলে ভাসিয়ে দিতে গিয়েছিলেন। কিন্তু বরফ জমে থাকায় তিনি কাজটা সম্পূর্ণ করতে পারেননি। আর তখনই তাঁকে পুলিশ দেখে ফেলে।
সোকোলভের আইনজীবী সের্গেই লুকিয়ানভ জানিয়েছেন, তাঁর মক্কেল সব দোষ স্বীকার করেছেন এবং পুলিশকে সাহায্য করেছেন। তাই আদালতের এই রায়ের পর তাঁরা অন্য কোথাও আপিল করবেন কিনা সেই বিষয় সিদ্ধান্ত নেবেন। শুক্রবার ইয়েসচেঙ্কোর বাবা-মাও আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তাঁদের আইনজীবী আলেকজান্দ্রা বাকশিয়েভা সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘’আমরা পনেরো বছরের জন্য শাস্তি চেয়েছিলাম। আদালত সোকোলভকে সাড়ে ১২ বছরের সাজা দিয়েছে। যতই এই সাজা দেওয়া হোক না কেন, আমরা কখনই আমাদের মেয়েকে ফিরিয়ে আনতে পারব না। সোকোলভ প্রায় তিন বছর ধরে ইয়েসচেঙ্কোর সঙ্গে সম্পর্কে ছিলেন। উভয় কিছু ঐতিহাসিক গবেষণামূলক কাজও করেছিলেন একসঙ্গে। ইয়েসচেঙ্কো দক্ষিণ রাশিয়ার ক্রসনোডর থেকে সেন্ট পিটার্সবার্গে চলে এসেছিলেন এবং ইতিহাস নিয়ে স্নাতকোত্তর পাশ করেছিলেন। উল্লেখ্য, ২০০৩ সালে নেপোলিয়ান যুগের ফরাসি ইতিহাস নিয়ে গবেষণার জন্য সোকোলভকে ফ্রান্সের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মান লিজিয়ঁ দ্য’অনর (Legion d'Honneur) দেওয়া হয়েছিল।