#নিউইয়র্ক: বিজ্ঞানে ভর করে কালে দিনে প্রযুক্তিও এগিয়েছে অনেক। মানুষ পৌঁছে গিয়েছে চাঁদে, মহাকাশে। সেখানে বানিয়েছে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন। এ সব শুনে এখন আর আশ্চর্য হই না আমরা। তবে মহাকাশে মহাকাশচারীদের জীবন একটু সহজ করতেও শুরু হয়েছে পরীক্ষা-নিরীক্ষা। সেই লক্ষ্যেই তৈরি হয়ে গিয়েছে অত্যাধুনিক শৌচাগার।
আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে ২৯ সেপ্টেম্বর পৌঁছে গিয়েছে আধুনিক প্রযুক্তির শৌচাগার। মার্কিন গবেষণা সংস্থা নাসা তৈরি করেছে এই শৌচাগার। আশা করা হচ্ছে আধুনিক সুযোগসুবিধাসম্পন্ন এই শৌচাগার ব্যবহার করলে মহাকাশচারীদের মহাকাশযাপন কম কষ্টসাধ্য হতে পারে। একই সঙ্গে বর্জ্য রিসাইকেলের ক্ষেত্রেও খুব উপকারী এই টয়লেট। এই প্রকল্পে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মোট খরচের পরিমাণ ২৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের কাছাকাছি।
ইউনিভার্সাল ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (ইউডব্লিউএমএস) প্রযুক্তি ব্যবহার করে অনেক বেশি গুছিয়ে নেওয়া গিয়েছে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের শৌচাগার। বর্তমানে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের শৌচাগারের চেয়ে এটি আয়তনে ৬৫ শতাংশ ছোট এবং ৪০ শতাংশ ওজন কম। তা ছাড়া মহাকাশে মাধ্যাকর্ষণ না থাকায় সব সময় ভাসমান দশায় থাকেন মহাকাশচারীরা। সেই সমস্যা দূর করতে এতে থাকছে ফুটরেস্টার এবং হ্যান্ডল। মহিলা মহাকশচারীদের জন্য থাকছে বিশেষ আসন।
নাসা আশ্বস্ত করেছে আধুনিক প্রযুক্তির এই শৌচাগার পরিষ্কার করাও অনেক বেশি সহজ। আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে মল ত্যাগের জন্য ব্যবহার করা হবে বিশেষ আসন। মূত্র বর্জনের জন্য ব্যবহার করা হবে ফানেল। এ বার স্বয়ংক্রিয় একটি টাইটেনিয়াম সেপারেটরের মাধ্যমে সেটি আলাদা করে দেওয়া হবে। ফলে মহাকাশ স্টেশনের পরিবেশ স্বাস্থ্যকর এবং সুগন্ধযুক্ত থাকবে।
সংগ্রহ করা মল এবং মূত্র এ বার স্টেশনেরই এক অংশে রিসাইকেল করে নেওয়া হবে। কিছু অংশ নমুনা সংগ্রহের জন্য পাঠিয়ে দেওয়া হবে পৃথিবীতে। তবে পৃথিবীর পরিবেশে ঢোকা মাত্র পুড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে তার। টয়লেট পেপার, ওয়াইপ, গ্লাভস- এই সব বর্জ্য তাই ফেলে দেওয়া হবে ওয়াটার প্রুফ ব্যাগে।
আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে আগামী তিন বছর ধরে এই আধুনিক প্রযুক্তি সম্পন্ন শৌচাগার ব্যবহার করা হবে পরীক্ষামূলক ভাবে। ফলাফল ইতিবাচক হলে নাসার মঙ্গল অভিযানের মহাকাশযানেও এই প্রযুক্তিতেই বসানো হবে আধুনিক শৌচাগার।