#লন্ডন: বিয়েবাড়ি থেকে জন্মদিনের পার্টি, প্রচণ্ড গরমে তেষ্টা মেটাতে এবং কখনও বা মনখারাপের সঙ্গী হয়ে জনপ্রিয়তার শীর্ষে থাকে নরম পানীয় বা সফ্ট ড্রিঙ্কস। বাজারচলতি কোল্ড ড্রিঙ্কসও এর মধ্যেই পড়ে। এর আকর্ষণ এড়িয়ে চলা অনেকের কাছেই অসম্ভব! কিন্তু এই পানীয় শরীরের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকর। শুধু শরীর নয়, দাঁতও নষ্ট করে দেয় নরম পানীয়। নরম পানীয় যে শরীরে প্রবেশ করে রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়, বাড়িয়ে দেয় ওজন, তৈরি করতে পারে পলিসিসটিক ওভারির সমস্যা- এগুলো আমরা অনেকেই জানি। কিন্তু নানা বর্ণের পানীয় দেখলে এগুলো আর মনে থাকে না! সম্প্রতি একটি পত্রিকায় পাঠকদের কাছ থেকেই জানতে চাওয়া হয়েছিল নরম পানীয় নিয়ে তাঁদের আসক্তির ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে। উত্তরে পাঠকরা যা জানিয়েছেন সেটা শুধু চমকপ্রদ নয়, এ যেন এক অন্য যুদ্ধজয়ের কাহিনি!
বিভিন্ন পাঠকের সঙ্গে কথা বলে এটুকু স্পষ্ট যে অনেকেই বিভিন্ন কারণে অনেকেই এই পানীয়ের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়েছিলেন। কিন্তু অনেকেই এর থেকে বেরিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছেন। ম্যানচেস্টারের এক ছাত্রী যেমন স্বীকার করেছেন যে তিনি এক সময়ে গোলাপি রঙের একটি পানীয় দেখে আকর্ষিত বোধ করেন। এর পর অসংখ্যবার ওই পানীয় তিনি কিনেছেন। পরে দেখা যায় তাঁর এই অভ্যেস এক বদ নেশায় পরিণত হচ্ছে। প্রচুর অর্থ এর পিছনে তিনি ব্যয় করেছেন। বয়ফ্রেন্ডের পরিবারের সঙ্গে খেতে বসে চৈতন্য ফেরে তাঁর। তিনি দেখেন যে সবাই জল পান করছে আর তিনি একাই ওই গোলাপি পানীয় নিয়ে বসে আছেন!
এর পর ওই পানীয়ের আসক্তি থেকে তিনি বেরিয়ে আসেন। অনেকে আবার পুরোপুরি বেরিয়ে আসতে না পারলেও কোকা কোলা জাতীয় পানীয় পান করা অনেকটাই কমিয়ে দিয়েছেন। লন্ডনের উইলিয়াম যেমন একেক সময়ে দিনে প্রায় ছ’টি করে নরম পানীয়ের ক্যান খালি করতেন। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলছেন বুঝতে পেরে কিছুটা হলেও সামলেছেন নিজেকে।
একই ভাবে অনেকেই লকডাউন চলাকালীন শরীর-স্বাস্থ্য ভালো রাখার প্রয়োজনীয়তা বুঝতে পেরে কোলা-জাতীয় পানীয়র চেয়ে প্রতি দিন বেশি করে জল পানের দিকে ঝুঁকেছেন।
আবার এটাও দেখা যাচ্ছে যে অনেকেই ডায়েট কোলা বেছে নিয়েছেন কারণ এতে চিনি কম থাকে। কেউ বেছে নিয়েছেন কম চিনিযুক্ত কোনও পানীয়, কারণ নরম পানীয় পুরোপুরি ছেড়ে দেওয়া সম্ভব নয়।
নিজের দাঁত আর স্বাস্থ্যের কথা ভেবে বেশিরভাগ মানুষই কোলা-জাতীয় নরম পানীয় খাওয়া বন্ধ করেছেন বা কম করে দিয়েছেন। জনৈক পাঠক জানিয়েছেন যে প্রতি দিন মাত্র একটা করে পেপসি খাওয়ার জন্যই তিনি হারিয়েছিলেন ১৪টা দাঁত! পরে নিজেকে ধীরে ধীরে সামলে নিতে বাধ্য হন তিনি।
তাহলে বোধ হয় সময় থাকতে সচেতন হওয়াই ভালো, নয় কি?